Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদ্যুত খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে সরকার-আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২০, ৫:২২ পিএম

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, দেশের বিদ্যুৎখাতে একদিকে রাষ্ট্রীয় অর্থের বিপুল অপচয় ও অনিয়ম চলছে। অন্যদিকে উচ্চমূল্য ও ভৌতিক বিলের কারণে গ্রাহক ভোগান্তিও চরমে গিয়ে ঠেকেছে। জনগণের কাছে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা উপেক্ষিত থাকায় এই খাতে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দিন দিন বাড়ছেই। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎখাতে অনিয়ম বিশৃঙ্খলা যেনো পাহাড়ের মতো জেঁকে বসেছে।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে জমিয়ত মহাসচিব বলেন, দেশে অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র অহেতুক বসিয়ে রাখার কারণে প্রতি বছর কেন্দ্রভাড়া বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকার লোকসান দিতে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় খাত থেকে। মূলত: বেসরকারি খাতে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রতিযোগিতাহীন দরপত্রে বহুবিধ অন্যায় সুবিধাদান, দায়মুক্তি ও চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করায় এই অনাকাঙ্খিত জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রাপ্ত তথ্যমতে দেশে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাইরে বেসরকারিভাবে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, তার ৫৭ ভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোন কার্যক্রমই নেই। বিগত অর্থ বছরে এসব অলস বেসরকারি কেন্দ্রগুলোকে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। অন্যদিকে চুক্তি অনুযায়ী সচল কেন্দ্রসমূহে ব্যবহৃত তেল, গ্যাস, কয়লাসহ জ্বালানির মূল্য দিতে হয় পিডিবিকে। আর এই কয়লা, তেল ও এলএনজি আমদানি হয় বেসরকারি খাতের মাধ্যমে। এতেও ব্যবসায়ীরা উচ্চমূল্য আদায় করে পিডিবি থেকে। সারা বছর কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ থাকে। এরপর উৎপাদিত বিদ্যুতের উপর মূল্য ধার্য হয়। ফলে বিদ্যুৎখাতের অযৌক্তিক সকল ব্যয়ভার জনগণের কাঁধেই ওঠছে। এভাবে বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকির নামে জাতীয় অর্থনীতি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকায় ব্যবসায়ীদের পকেট ভারি হচ্ছে।
তিনি বলেন, একদিকে ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র অলস থাকা সত্ত্বেও নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ থেমে নেই। অন্যদিকে রাজধানী ও কয়েকটা মহানগরী বাদে মফস্বলের জেলা ও গ্রামীণ পর্যায়ে সমানে লোড শেডিং চলছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল আশংকাজনকহারে বাড়ছে। অনেক পরিবারের অভিযোগ, ঘরে অল্প কয়েকটা লাইট ফ্যান। কিন্তু মাস শেষে বিল আসছে দেড়, দুই হাজার বা তারও বেশি টাকা। অভিযোগ করলেও প্রত্যাশিত কোন সমাধান মিলছে না।
আল্লামা কাসেমী বলেন, জ্বালানী ও বিদ্যুৎখাত শতভাগ সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকা অপরিহার্য ছিল। অনিয়ম বন্ধ ও সরকারি সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ না নিয়ে তড়িঘড়ি বিদ্যুৎখাতে বিপুল বেসরকারি অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়াটাই ছিল জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থি। জমিয়ত মহাসচিব বলেন, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বিদ্যুৎখাতকে ব্যবসায়িক বৃত্ত থেকে বের করে আনতে হবে। অন্যথায় বিদ্যুৎখাতের এই বিপুল ব্যয়ভার জাতীয় অর্থনীতিতেই কেবল বিরূপ প্রভাব ফেলবে না, বরং জনদুর্ভোগ ও শোষণের বিশাল কারণ হয়ে দেখা দেবে।



 

Show all comments
  • Abdur Rafi ৫ জুন, ২০২০, ৬:১৭ পিএম says : 0
    জনগণ সৌর বিদ্যুৎ যাতে না ব্যবহার করে সৌর প্যানেলের দাম ভারত পাকিস্তান থেকে তিনগুন দাম বেশি। চোরের দেশ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ