Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মন্ত্রিপরিষদের কমিটি

বস্তি অপসারণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

পরিকল্পিত উপায়ে বস্তি অপসারণ এবং বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে প্রধান করে গত ৩১ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১৫ সদস্যের এই কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করা হয়েছে। যা গতকাল বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে। কমিটিতে সমাজকল্যাণমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব, জননিরাপত্তা সচিব, রেলপথ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব, ভূমিসচিব, সেতু সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিবও কমিটিতে রাখা হয়েছে।

কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, বস্তি অপসারণের আগে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য পরিকল্পনা প্রস্তুত করবে এই কমিটি। বস্তি গড়ে ওঠা স্থানে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ বিবেচনা করে পরিকল্পিত উপায়ে বস্তি অপসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধে বস্তি অপসারণের প্রয়োজনীয়তা, প্রতিক্রিয়া ও মানবিক বিষয়াবলী পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এই কমিটি।

এছাড়া কমিটি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে দেয়া অর্থের যথাযথ হিসাব সংরক্ষণ ও নিরীক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবে। কমিটি প্রয়োজন অনুসারে সভা অনুষ্ঠান ছাড়াও সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
জানা গেছে, রাজধানীসহ সারাদেশে বস্তি সংখ্যার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে রাজধানীর কড়াইল বস্তি ঘিরে বছরের পর বছর ধরেই চলছে হরেক রকম দখলবাজি। কেউ বস্তির আধিপত্য দখল নিয়ে লড়াই করছে কেউবা বস্তি ভেঙে গড়ে তুলছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ক্ষমতার বাহাদুরিতে কেউ কেউ এগিয়ে গেছে আরও কয়েক ধাপ। তারা বস্তি সংলগ্ন লেকের পানিতে ময়লা-আবর্জনা আর মাটি ভরাট করে বস্তি সা¤্রাজ্যের আরও বিস্তার ঘটিয়ে চলছে। এছাড়া উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা কওে লেক ভরাটের মাধ্যমে বাড়ানো হচ্ছে বস্তির আয়তন। ঝুপড়ি বস্তির কাঁচা ঘরগুলো এখন রাতারাতি পাকা বিল্ডিংয়ে পরিণত হচ্ছে। এখানে চলছে সরকারি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির অবৈধ সংযোগ। চুরি-ছিনতাই তো নিয়মিত ঘটনা।
সরকারি জায়গা, গ
্যাস, বিদ্যুৎ, পানিকে পুঁজি করেই কড়াইল বস্তিতে সরকারি দলের অন্তত ৩৬ জন কোটিপতি বনে গেছেন। রাজধানীর গুলশান-বনানী লেক ভরাট করে অবৈধ বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি নিয়ে বস্তি ঘর ভাড়া দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ রয়েছে সরকারে কাছে। গুলশান-বনানীর গা-ঘেঁষে ১৯৫৬ সালে তৎকালীন টিঅ্যান্ডটির নামে সরকার ১৭০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ১০ একর জায়গা বিটিসিএলের দখলে থাকলেও বাদ-বাকি ১৬০ একরের পুরোটাই বেদখল। এই বিশাল বস্তিতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের বসবাস। ২০১৫ সালের বস্তিশুমারি অনুযায়ী দেশে বস্তিবাসীর সংখ্যা সাড়ে ২২ লাখ। এদের বেশিরভাগের বসবাস ঢাকা ও চট্টগ্রামে। এ দুটি বড় শহরের প্রায় ৫ হাজারের মতো বস্তিতে অর্ধেকের বেশি মানুষের বাস।

এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ২৮টি বস্তিতে আগুন লাগে। সর্বশেষ রাজধানীর মিরপুর-৭ নম্বর সেকশনের ঝিলপাড়ের চলন্তিকা বস্তিতে ভয়াবহ আগুন লাগে। এতে প্রায় ১৫ হাজার ঘর পুরে ছায় হয়ে যায়। নিঃস্ব হয় ৫০ হাজারের বেশি বস্তিবাসী।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ১৬৫টি বস্তিতে আগুন লাগে। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৩, চট্টগ্রামে ৪৩, রংপুরে ৮৮ এবং সিলেট বিভাগে ১টি বস্তি আগুনে পুড়ে যায়। এসব অগ্নিকান্ডে আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯৩ কোটি ৬১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫০ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ