পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্প থেকে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসা বাদ দেয়ায় সারাদেশে দুই লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায়ে ২০১৮ সনে প্রতিষ্ঠিত সারাদেশে প্রত্যেক উপজেলায় দু’টি করে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার আলেম শিক্ষক-শিক্ষিকারা দীর্ঘ ৫ মাস যাবত বেতন-ভাতা পাচ্ছে না। লকডাউনের মাঝে ১ হাজার ১০টি দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষিকারা পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহার অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে তারা কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে তাদের ভাগ্যে বকেয়া বেতন-বোনাসও জুটছে না।
ইফার একটি সূত্র জানায়, গত ১১ মে পরিকল্পনা কমিশন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবিত পাঁচ বছর মেয়াদী ৭তম পর্বে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পে ৩ হাজার ১২৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। উল্লেখিত প্রকল্প থেকে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসাকে বাদ রাখা হয়েছে। এতে ইফার দারুল আরকাম মাদরাসায় নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তবে শোনা যাচ্ছে, উক্ত মাদরাসার জন্য পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নর আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী আজ রোববার ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে সারাদেশে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত না নিয়েই মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্প থেকে দারুল আরকার মাদরাসা সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব মাদরাসাগুলো চলার জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। সারাদেশে এসব মাদরাসায় আরো তিন হাজার ত্রিশজন শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, এসব মাদরাসা বন্ধ হবে তা’ মেনে নেয়া যায় না। এক প্রশ্নের জবাবে আলহাজ মিছবাহুর রহমান বলেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো.আব্দুল্লাহ আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার কেউ বঞ্চিত হবেন না। তবে এসব অসহায় ক্ষুধার্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও দেখছি না। তিনি বলেন, কি কারণে দারুল আরকাম মাদরাসাকে প্রকল্প থেকে বাদ দেয়া হয়েছে তাও জানি না। বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনে দায়িত্বরত বর্তমান ডিজির প্রত্যাশিত কার্যক্রম দেখছেন না বলেও আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী উল্লেখ করেন। তিনি ইফার দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের বকেয়া বেতন বোনাস ঈদের আগেই পরিশোধ এবং মাদরাসাগুলো চালুর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে, আজ রোববার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ ইনকিলাবকে বলেন, পরিকল্পনা কমিশনের পরামর্শেই মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্প থেকে ১ হাজার ১০টি দারুল আরকার ইবতেদায়ী মাদরাসা পৃথক করা হয়েছে। এসব মাদরাসার শিক্ষকদের পদগুলো স্থায়ী হবে। সরকারের বিধি অনুসরণ করে এসব মাদরাসাগুলো এমপিও ভুক্তকরণের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে বলেও ইফা মহাপরিচালক উল্লেখ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে ইফা ডিজি আনিস মাহমুদ বলেন, সরকার মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পে ৩ হাজার ১২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এখন এ প্রকল্পের ৭৫ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা কর্মচারির বেতন ভাতা পরিশোধের জন্য ব্যস্ত আছি। ঈদুল ফিতরের পরে ইফার দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার জন্য পৃথক ভাবে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হবে বলেও ইফা ডিজি উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।