পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৭ মে, ১৯৮১। সেদিনের আবহাওয়া ছিল একেবারেই বৈরী। তার দু-তিন দিন আগে থেকেই ঢাকার আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। সেদিন ছিল রীতিমতো দুর্যোগপূর্ণ। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির বড় মেয়ে শেখ হাসিনা দীর্ঘ ছয় বছরের স্বেচ্ছানির্বাসন থেকে স্বদেশে ফিরবেন। আওয়ামী লীগের নেতারা নানা রকম নির্যাতন-নিপীড়নে বিধ্বস্ত।
আর যারা জেল-জুলুম থেকে মুক্ত ছিলেন, তারা ছিলেন উপদলীয় কোন্দলে ব্যস্ত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অনুরাগী ও সাধারণ মানুষ শোকে পাথর মুজিব-কন্যাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য যে যার মতো প্রস্তুতি নিয়েছিল। দলের অনেক নেতা ট্রাকে চড়িয়ে লোকদের বিমানবন্দরে নিয়ে যান। অনেকেই যান নিজের মনের টানে।
দিনটি ছিলো রোববার। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে তাকে একনজর দেখার জন্য কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর পর্যন্ত এলাকাজুড়ে লাখো জনতার ঢল নামে। সেদিনের গগনবিদারী মেঘ গর্জন, ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল, আর অবিরাম মুষল ধারে ভারী বর্ষণে যেন ধুয়ে-মুছে যাচ্ছিল বাংলার মাটিতে পিতৃ হত্যার জমাট বাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন।
শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান ছুঁয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের সব সদস্যের রক্তে ভেজা বাংলার মাটি স্পর্শ করে তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই সময় উন্মত্ত জনতা সামরিক শাসক জিয়ার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন স্লোগানে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে তোলে। ঝড়-বৃষ্টির আকাশ কাঁপিয়ে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাকের চার পাশে স্লোগান ওঠে-
পিতৃ হত্যার বদলা নিতে/
লক্ষ ভাই বেঁচে আছে
শেখ হাসিনার ভয় নাই/রাজপথ ছাড়ি নাই....
সেদিন তিল ধারণের জায়গা ছিল না কুর্মিটোলা থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত। লাখ লাখ মানুষের সংবর্ধনায় তিনি জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।”
গ্রীক পুরানের পাখির মতো নির্বাসনের অশ্রু পেরিয়ে পিতার শ্যামল মাটিতে ফিরে এলেন শোষিত বঞ্চিত মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। শুরু হলো উদয়ের পথে আমাদের যাত্রা। শুরু হলো গণতন্ত্রের সংগ্রাম- গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন- সামরিক নেতৃত্বে কুঠারাঘাত।
এর পরবর্তী চার দশকের বাংলাদেশের ইতিহাস মূলত শেখ হাসিনা কেন্দ্রিক ইতিহাস। প্রায় চার দশকের রাজনৈতিক জীবনে তিনি চার বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন। বিরোধী নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন অগণিত দিন, কারাবরণ করেছেন অসংখ্যবার।
জনহিতৈষী পদক্ষেপ, জনদাবির প্রতিষ্ঠা, ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা, উন্নত রাষ্ট্রচিন্তা ও বাস্তবায়ন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, স্বাধীনতার চেতনা উজ্জীবিত করা, মুক্তচিন্তার মানুষদের স্বাধীনতার স্বাদে অবগাহন করার সুযোগ দান, বাঙালি সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে গত চার দশকে পদচারণা ছিল না শেখ হাসিনা´র।
তিনি শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী। তিনি একটি প্রতিষ্ঠান, তিনি জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। বাঙালির ঐক্যবদ্ধ চেতনার রূপকার, বটবৃক্ষ, ধৈর্য ও সহনশীলতার শ্রেষ্ঠ স্বাক্ষর। পিতার চরিত্রের উদারতা ও বিশালতা তার স্বভাব। তিনি আমাদের সকলের আপা। আজ আপা´র ফিরে আসার দিন।
লেখক: কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।