Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় কমেছে অপরাধ

রাজধানীর চিত্র

সাখাওয়াত হোসেন | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২০, ১২:০৫ এএম

করোনাভাইরাস সংক্রমণে সচেতনতা ও অসহায় মানুষের কাছে খাবার পৌছে দেয়াসহ নানা কাজ করছে পুলিশ। এ সময় রাজধানীতে করেছে খুন-ধর্ষণসহ প্রায় সব ধরনের অপরাধ। আগের মাসগুলোর তুলনায় কমে এসেছে চুরির ঘটনাও। মাদকবিরোধী অভিযান না থাকায় কমে এসেছে মাদক মামলাও।

এমনকি প্রতারণা বা নারী নির্যাতনের মামলাও কমেছে অনেকাংশে। তবে এ সময়ে পুলিশের গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল বা সাধারণ অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযানও অনেক কম। রাজধানীর ৫০টি থানায় গত তিন মাসে মামলা হয়েছে ২ হাজার ২০০টি করে। সেখানে এপ্রিল মাসে মামলা রেকর্ড হয়েছে মাত্র ৩৪৯টি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে অপরাধ প্রবণতা কমে এসেছে। আর বড় ধরনের অপরাধী ছাড়া সাধারণ অপরাধীদের ধরতে অভিযানও চালানো হচ্ছে না। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা সবাই করোনা সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাধারন মানুষকে সর্তক করা ও আক্রান্তদের পাশে থাকাসহ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সব ধরনের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। করোনার কারণে অপরাধ প্রবণতা কিছুটা কমেছে ঠিক। কিন্তু পুলিশের তো বসে থাকার সুযোগ নেই। অপরাধ নিয়ন্ত্রণসহ সব বিষয়ে নজর করা হ্েচ্ছ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অপরাধ প্রবণতার পাশাপাশি মামলার সংখ্যাও কমেছে। একইসঙ্গে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের দাগি আসামি ছাড়া ছোটখাটো আসামিদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এছাড়া কারাগারগুলোতেও করোনার কারণে নতুন আসামি ব্যবস্থাপনায় সমস্যা হতে পারে বলে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে কম।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, গত বছর (২০১৯) রাজধানীতে ২০৮টি খুনের ঘটনা ঘটে। সেই হিসেবে মাসে গড়ে ১৭টির বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারিতে ২১ টি করে খুনের ঘটনা ঘটলেও মার্চে ১৭টি ও এপ্রিলে ৮টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। একইভাবে ২০১৯ সালে ডাকাতি ও দস্যূতার ঘটনা ঘটেছিল ১৭৬টি। মাসে গড়ে ১৪টির বেশি ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটে। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম তিন মাস জানুয়ারি, ফেব্রæয়ারি ও মার্চে যথাক্রমে ২১, ১৬ ও ১৬টি করে ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটে। এপ্রিলে এই সংখ্যা কমে এসেছে ছয়টিতে। ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাও কমে এসেছে। ২০১৯ সালে ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ২ হাজার ৪০৮টি। সেই হিসেবে মাসে গড়ে দুই শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যথাক্রমে ১৭২, ১৯৪ ও ১৮৭টি ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু এপ্রিল মাসে এই সংখ্যা কমে এসেছে ৪৯ এ। চলতি বছরে রাজধানীতে এখনও কোনও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেনি। ২০১৯ সালে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৯৮টি। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এই সংখ্যা ১২টি। এপ্রিল মাসে অপহরণের কোনও ঘটনা ঘটেনি।

ওই সূত্র আরো জানায়, ২০১৯ সালে চুরিসহ মোট ২ হাজার ২১১টি মামলা রেকর্ড হয়েছিল। ওই হিসেবে মাসে গড়ে ১৮৪টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২০৩টি, ফেব্রæয়ারিতে ১৮৭টি, মার্চে ১৫৯টি চতুরির মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাস চুরির ঘটনা বাড়লেও এপ্রিলে এসে তা কমেছে। এপ্রিলে ১৯টি গৃহে চুরির ঘটনা ও ২৭টি অন্যান্য চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত বছর অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান উদ্ধারের ঘটনায় মোট ১৭ হাজার ১৬৬টি মামলা হয়েছিল। সেই হিসেবে মাসে গড়ে মাসে প্রায় দেড় হাজার মামলা হয়। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের জানুয়ারিতে ১ হাজার ৩৪৭টি, ফেব্রæয়ারিতে ১ হাজার ২৩০টি, মার্চে ১ হাজার ১৫২টি মামলা হয়েছে। তবে এপ্রিল মাসে এই সংখ্যা কমে এসেছে প্রায় দশ ভাগের এক ভাগে। এপ্রিলে মোট ১২৩টি উদ্ধারজনিত মামলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ