Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জামায়াতের দলছুটদের নতুন দল ‘এবি পার্টি’র আত্মপ্রকাশ, আহ্বায়ক সোলায়মান-সদস্য সচিব মঞ্জু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ মে, ২০২০, ৫:৩২ পিএম

করোনার প্রকোপের মধ্যে সবাই যখন দিশেহারা তখন নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে সামনে আসলো জামায়াত ছেড়ে যাওয়া নেতারা। জামায়াত থেকে বরিয়ে আসা ও বহিষ্কৃতদের সমন্বয়ে রাজনৈতিক উদ্যোগ ‘জন আকাঙক্ষার বাংলাদেশ’ নামে সংগঠনটি শনিবার নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ বা এবি পার্টির নাম ঘোষণা করা হয়।
‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’- স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের এই তিন মূলনীতির ভিত্তিতে দলটির নাম ঘোষণা দেয়া হয়। জামায়াতের এক সময়ের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী আহ্বায়ক এবং জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জুকে সদস্যসচিব উল্লেখ করে ২২২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কোর্ধ্ব জাতীয় অর্জন আখ্যা দিয়ে মঞ্জু বলেন, ধর্ম ও স্বাধীনতাকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রেখে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাবে এবি পার্টি। তিনি বলেন, মতবাদ, মতাদর্শ যার যার, রাষ্ট্র আমাদের সবার। মতবাদ ও মতাদর্শের উর্ধ্বে উঠে অধিকার আদায়ের রাজনীতি করবে এবি পার্টি।
সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার-এই তিন মূলনীতির ভিত্তিতে জনআকাংখার বাংলাদেশ পুনর্গঠনে নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’র (এবি পার্টি) আত্মপ্রকাশ।
তিনি বলেন, অকার্যকর রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের জন্যই দরকার নতুন রাজনীতি। রাষ্ট্রের সর্বস্তরে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, শৃঙ্খলা ও ভারসাম্য ভেঙে পড়েছে দাবি করে এবি পার্টির সদস্যসচিব বলেন, জাতীয় স্বার্থসুরক্ষা ও নিরাপত্তা, নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা এবং সাংবিধানিক দায়-দায়িত্ব পালনের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ। একই সঙ্গে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, নাগরিক উদ্যোগ, সংবাদমাধ্যম কেউই আর নির্বিঘেœ নির্ভয়ে ক্ষমতাসীনদের অনিয়মের সমালোচনা, সত্য প্রকাশ ও জবাবদিহিতার দাবিতে সোচ্চার হতে পারছে না। যেকোনো অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিকার চাওয়া এবং পাওয়ার শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগ। স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার উগ্র বাসনায় সংবিধান পরিবর্তন করে বিচার বিভাগকে নির্বাহী কর্তৃত্বের অধীনস্থ করার মরিয়া চেষ্টা আমরা দেখছি। শুধুমাত্র তাতে দ্বিমত পোষণ করায় অনেক অবিচার ও অনিয়মের সহযোগী হয়েও সাবেক প্রƒধান বিচারপতি অপমান-অপদস্থ হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বিচারিক স্বাধীনতার ভিত্তিকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। ক্ষমতার পৃথকীকরণসহ যা কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা তৈরি করা হয়েছিল, তার প্রায় সবগুলোই আজ অকার্যকর।
মঞ্জু বলেন, এই অচলায়তন ভাঙতে প্রয়োজন নতুন রাজনীতি। যে রাজনীতি জাতিকে স্বপ্ন দেখাবে, আশা দেখাবে, উদ্বুদ্ধ করবে নতুন চেতনায়। অন্যথায় অকার্যকর রাষ্ট্রটি থেকে যাবে করোনা-উত্তর সময়ে। জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ সেই লক্ষ্যেই ঘোষণা করছে সম্পূর্ণ নতুন ধারার এই রাজনৈতিক দল। আমাদের লক্ষ্য কেবল গাল-সর্বস্ব স্লোগান নয়। রাষ্ট্রের পুনর্গঠন আমাদের অন্যতম এজেন্ডা।
অনুষ্ঠানে দলের সাত দফা কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন মেজর (অব.) আবদুল ওহাব মিনার।
গত বছরের ২৭ এপ্রিল জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ-স্লোগানে নতুন রাজনৈতিক মঞ্চের ঘোষণা দিয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারপন্থীরা। ওইদিন স্বাধীন সত্তার বিকাশে অধিকার ও কল্যাণরাষ্ট্র পপ্রতিষ্ঠার রাজনীতি শিরোনামে ছয় পৃষ্ঠার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন মঞ্চের সমন্বয়ক জামায়াতে ইসলামীর নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জু।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২ মে, ২০২০, ৯:৩৬ পিএম says : 0
    আর যাইহোক দলের নামটা খুবই সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এখনে এনারা সবাই সীলমারা পাকি দরদী জামাত ও শিবির থেকে এসে একটি সুন্দর নাম দিয়ে জনগণকে আকৃষ্ট করে দলে টানার এক ফন্দি করেছেন এটাই পরিষ্কার হয়ে ফুটে উঠেছে। আমি দেখেছি ১৯৭৫ সালে জাতীর জনক ও তাঁর সঙ্গী সাথিদের হত্যা করে পাকি দরদীরা ক্ষমতায় এসে রাজনীতি বন্ধ করে দেয়। তবে ছাত্রদের মধ্যে একটি নতুন দলের সৃষ্টি করে তাঁর নামকরণ করা হয় শিবির। শিবিরের জন্ম হয় পুরপুরিভাবে জামাতের নিয়ন্ত্রণে পাকিদের নীতিতে। শিবিরের জন্মলগ্নের কথা এখনও আমার স্মৃতিতে ভাসে, আমরা তখন জাতীয় সমস্যায় সময় কাটাচ্ছিলাম। চতুর্দিকে সেনাদের আনাগোনা কথা বললেই লাঠির বারি আর কারাবাস এটাই চলছিল নির্বিবাদে। যেকারনে সেসময়ে এই শিবির নিয়ে ভাববার সময়ই কোন রাজনৈতিক নেতাদের ছিলনা। তারপরও শিবির যখন তাদের কাজ ছাত্র সমাজে শুরু করে দেয় আর ছাত্র লীগের সদস্যকে পেলেই হাতের ও পায়ের রগ কেটে দিচ্ছিল তখন এই শিবিরের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সামরিক শাসক জিয়া মিয়া বলেছিলেন শিবির ছাত্র সমাজে একটি সামাজিক সংগঠন এটা কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয় তাই এর কর্যকলাপ চলবে। জিয়া মিয়ার কথার পর আর কোন কথা নেই সেই থেকেই শিবির ছাত্রলীগের বারটা বাজিয়ে সরা বাংলাদেশে তাদের (ছাত্রলীগের) কর্মকাণ্ড একেবারে বিলুপ্ত করতে সক্ষম হয়েছিল সামরিক জান্তার সহযোগিতায়। তাছাড়া সেই সময়টাও ছিল জাতীর জন্যে এক ক্রান্তি লগ্ন কেহই এর কোন প্রতিবাদ করতে পারছিলনা। যেমন আজ করোনা পরিস্থিতিতে পুর বিশ্বই কাটাচ্ছে এক ক্রান্তি লগ্ন আর ঠিক সেইসময়ে জন্ম নিচ্ছে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’। কাজেই এই দলের জন্মের সাথে শিবিরের মিল খুঁজলে কোন অপরাধ হবে কি?? এখন এই ক্রান্তি লগ্নকে পাশে রেখে আমরা যদি আমাদের দেশকে নিয়ে একটু ভাবি তাহলে কি দেখি... আমাদের নজরে আসে দেশে একটা শক্তিশালী বিরোধী দলের অভাব রয়েছে। সেদিকথেকে এখন দেশের জন্যে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন। তাহলে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ একে কি আমরা সেই দল হিসাবে ভাবতে পারি??? নিশ্চয়ই না... তবে এর নাটকীয় ভাবে জন্ম নেয়াটা একটা ব্যাতীক্রম ধর্মীয় এটা মানতে হবে। বাংলাদেশে এখন যে বিরোধী দল হবে তাঁকে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে হবে এটাই সত্য। কিন্তু এই দল প্রথমেই মুক্তিযুদ্ধকে স্পর্শের বাহিরে নিয়ে রেখেদিয়েছে যাতে করে এদের কর্মকাণ্ডে মুক্তিযুদ্ধের বিষয় না আসতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ধর্মকে যেভাবে সকল বিতর্কের উর্ধে রেখে মানে সরিয়ে রাখা হয়েছিল সেই একই পন্থায় এরা মুক্তিযুদ্ধকে ধর্মের সাথে রেখে সকল কার্যক্রম থেকে আলাদা করে রেখেছে। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ করে তাই এই দেশ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক এক দেশ আর সেই দেশের মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক ভাবে পাশকাটিয়ে যাওয়াটা কতবড় অপরাধ সেটা কি ভাববার নয়?? ’৭২ সংবিধানে আমাদের কামাল মিয়া মুক্তিযুদ্ধকে এই কায়দায় আলাদা করে রাখার জন্যে তাঁর খেসারত দিতে হয়েছে জাতীর জনকের রক্তের বিনিময়ে। আবার এই মুক্তিযুদ্ধকে মুখে এবং অন্তরে নিয়ে মাঠে নেমে নেত্রী হাসিনা আজ উচ্চ শিখরে একছত্র ভাবে বিরাজ করছেন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে নয় একজন সাধারন দেশের নাগরিক হিসাবে জোড় গলায় বলতে পারি মুক্তিযুদ্ধকে পাশকাটিয়ে যারা রাজনীতিতে আসবেন তারা জিয়া মিয়ার বা খালেদা জিয়ার মতই পরিণতিতে পড়বেন এটাই সত্য। এরশাদ চাচা ধরি মাছ না ছুই পানি এভাবেই চলেছেন কাজেই তাঁর সম্পর্কে সরাসরি দোষারুপ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে এটা বলাযায় এরশাদ চাচা যদি মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে দেশ চালনোর আয়োজন করতেন (নেত্রী হাসিনার মতকরে) তাহলে হয়তো তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারতেন কারন জিয়া মিয়া তাঁর আমলে আওয়ামী লীগের দফা রফা করে দিয়েছিলেন কাজেই আওয়ামী লীগ তাঁর কোন ক্ষতির কারন হতো না। যাক এসব কথা এখন কথা হচ্ছে এই ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ এর ভবিষৎ কি?? এটাই এখন দেখার বিষয়...... আরও একটি কথা আমরা যদি রাজনীতিবিদদের চালবাজি না বুঝি তাহলে তাদের সাথে থেকে দেশের বারটাই বাজাতে পারবো। তাই মহানআল্লাহ্‌ দরবারে প্রার্থনা তিনি যেন আমাকে সহ সবাইকে রাজনীতিবিদদের চালবাজি জানার, বুঝার ও সেইভাবে চলার ক্ষমতা দান করেন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ