Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

রমজানে সব পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখি

বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোরতা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০৩ এএম

প্রবাদে রয়েছে ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী’। দেশের এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ীও শোনেননি করোনাভাইরাসের লকডাউনে ঘরবন্দি মানুষের দুর্বিষহ জীবনের কাহিনী। সরকারি ছুটির এক মাসের শেষ দিন গতকাল ছিল পহেলা রমজান। এই রমজানকে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। প্রচুর মজুদ ও সরবরাহ, তারপরও ইফতার ও সাহরি কেন্দ্রিক ৯টি পণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
আবার বেগুন, শশা, লেবুসহ কাঁচা তরি-তরকারির দামও মোকাম থেকে খুচরা বাজারে হয়ে গেছে প্রায় দ্বিগুণ। রমজান উপলক্ষে সরকার টিসিবির পণ্য বিক্রি, ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি এবং বাজারে সব ধরনের পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণের কঠোর উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বাজারগুলোতে সে উদ্যোগের প্রভাব খুব কমই পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনিটরিং শুরু হবে।
গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারী মার্কেট শ্যামবাজারে ভোক্তা অধিকার পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর জরিমানা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন, আদার কেজি দেড়শ’ টাকার বেশি বিক্রি করা হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অন্যান্যা পণ্যমূল্যেও বেশি লাভ করা যাবে না।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এক প্রতিবেদনে বলেছে, করোনাভাইরাসের দুর্যোগের মধ্যেই রমজান আসায় চিনি, রসুন, পেঁয়াজ, আদা, মশুর ডাল, মুরগি, শুকনা মরিচ, পাম অয়েল এবং ছোলার দাম অনেক বেড়ে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল এ প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৬টি মন্ত্রণালয়, অধিদফতর এবং বিশেষ কমিটি বরাবর প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, রোজার আগে গত এক সপ্তাহে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে কাঁচাবাজারের দাম বেড়েছে রোজার দু’দিন আগে।
এদিকে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন বাণিজ্য সচিব ও টিসিবি বরাবরে ই-মেইল বার্তায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ তা কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় রমজানে সেনাবাহিনীকে বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিলে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
রমজানে চিনি, পেঁয়াজ, ডাল, তেল, ছোলার পাশাপাশি ইফতারে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ সবজি হলো বেগুন। সে বেগুনের দাম এক লাফে তিনগুন বেড়ে গেছে। ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজির বেগুন এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ২০ টাকার শসার দামও তিনগুণ বেড়ে ৬০ টাকা স্পর্শ করেছে। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরে।
এর আগে গত ১৪ মার্চ রমজানে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। সে সময় বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন বলেছেন, নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে ও অস্বাভাবিক মজুদ ঠেকাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ২৮টি মনিটরিং টিম কাজ করছে। পবিত্র রমজান মাসে আমাদের লক্ষ্য একটাই- রমজান মাসে মানুষ যেন ভালো থাকে। পবিত্র রমজান মাসে মানুষ কষ্ট পাবে এটা হতে পারে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ