পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যেই প্রতিদিন রাজধানী ঢাকার অলি-গলির সড়কে রিকশার জট। এখানে সেখানে মানুষের জটলা। প্রথম কয়েকদিন গলিপথে দেখা গেলেও এখন প্রধান প্রধান সড়কে দাপিয়ে চলছে প্রাইভেট গাড়ি। চেক পয়েন্টে আটকালে নানা অজুহাতে চলে যাচ্ছে। কেউ হাসপাতাল, কেউ বাজারের কথা বলে পার পাচ্ছে।
কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ীর আড়ৎ এবং রাজধানীর কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড়ে পা রাখা যায় না। ঠিক আগের চিত্রই। যাত্রাবাড়িতে মাঝেমধ্যে যানজট লেগে যায়। তাহলে লকডাউন কার জন্য? শুধু অফিস-আদালত আর স্কুল-কলেজ বন্ধই কি লকডাউন? করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবকিছু বন্ধ থাকা এবং রমজান আসায় মানুষের খাবারের চাহিদা যেন বেড়ে গেছে। তা নাহলে ছোঁয়াচে করোনার মধ্যে মানুষ প্রতিদিন বাজারে কেনাকাটার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে? অনেকের মুখে একখানা মাস্ক দেখা দেলেও শারীরিক ৩ ফিট দূরত্ব বজায় রাখেন না। ক্রেতা ও বিক্রেতা সবাই যেন বেচাকেনার জন্য বেহুশ।
গতকাল শনির আখড়ায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেল কাঁচাবাজারে একজনের গায়ের ওপর উঠে আরেক জন পণ্য কিনছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেষ্টা করেও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে পারছেন না। রাজধানীর কিছু জায়গায় স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাজারের জন্য খোলা জায়গা ঠিক করে দিয়েছে। ক্রেতা এবং বিক্রেতার কেউ সেখানে যেতে চাচ্ছেন না। পাইকারী কাঁচাবাজার কাওরান বাজারে ছয়জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সতর্কতার অংশ হিসেবে বাজারে খুচরা বেচাকেনা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রাবাড়ী পাইকারী আড়ৎ সব সময় খেলাই রয়েছে।
রাজধানীর সাধারণ অলি-গলির দোকানগুলো দুপুর ২টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। কাঁচাবাজার সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু কেউ মানছেন না। গতকাল কয়েকটি টেলিভিশনে সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা গেল ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকায় দিনের বেলা বাজারে দোকানপাট খোলা। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা শহরে এই চিত্র আরো ভয়াবহ। ক্রেতারা যাচ্ছেন। সবখানেই অনেকটা ভিড়ের পরিবেশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার সরিয়ে পাশের মাঠে নেয়া হয়েছে। তবে সেখানে যেতে চান না বিক্রেতারা। কেউ দোকান নিয়ে বসেছিলেন। কেউ অপেক্ষায় আগের জায়গায় ফেরার। আরামবাগ ফকিরাপুলের কাঁচাবাজারের বড় অংশ সড়কে। সকাল হলেই সড়কটি কানায় কানায় ভরে যাচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতায়। দূরত্বের বালাই নেই এখানে। একই চিত্র কমলাপুর বাজারের। সড়কে রিকশা, ভ্যানে গিজ গিজ করে। আশপাশে ভাসমান মানুষদের জটলা। কলোনীগুলোর মানুষ নিত্যদিন সকালে বাজারে যাচ্ছেন। সুপারশপগুলোতে পা রাখার জায়গা নেই। পণ্য বাছাই, বিল দেয়ার সময় একজন আরেক জনের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে। এতো গেল রাজধানীর চিত্র।
জেলা-উপজেলার চিত্র আরও ভয়াবহ। ব্যাটারি চালিত যানে গাদাগাদি করে ৮/১০ জন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা দুইজনের সিটে তিন-চারজন বসে যাতায়াত করছেন। বাজারে মানুষের স্রোত। ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস ভীতিতেও মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়নি। আমাদের জেলা, উপজেলা প্রতিনিধিদের তথ্যে দেখা যায়, গ্রামের কোনো কোনো বাজারে মানুষের কেনাবেচার চিত্র দেখলে মনে হয় যেন উৎসব চলছে। ছুটির আমেজে মানুষ বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। চায়ের দোকানে সমানে চলছে আড্ডা। তরুণদের জটলা এখানে সেখানে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দীর্ঘ এক মাস ধরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কর্মসূচি চলছে। মাঠে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপরও এমন চিত্র? তাহলে লকডাউন কার জন্য?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।