Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৩০টি ভিন্নরূপে রূপান্তরিত করোনা

‘রক্তে আক্রমণ করে অকেজো করে দেয় একাধিক অঙ্গ’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

চীনের একদল বিজ্ঞানী বলেছেন, নতুন করোনাভাইরাস কমপক্ষে ৩০টি ভিন্নরূপে রূপান্তরিত হয়েছে। করোনা মহামারিতে এটা হতে পারে খুব ভয়াবহ এক খবর। চীনের ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এ কথা বলেছেন। তারা স্বল্প পরিসরে গবেষণা করে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের বিপুল সংখ্যক রূপ আছে। তবে চীনে যে রকমের ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছিল তা ছিল সবচেয়ে বিপজ্জনক। ঠিক একই রকম ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে ইউরোপে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে এ খবর প্রকাশ হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ডেইলি মেইল।

এতে বলা হয়েছে, গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন অসুস্থ মানুষকে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত করতে পারে এই ভাইরাস। ইউরোপ এবং চীন এই দু’স্থানের ভাইরাসই যুক্তরাষ্ট্রে বিস্তার করেছে এমন এক রিপোর্টের মধ্যে চীনা গবেষকদের ওই রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। রোববার একটি সাইটে এই গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। তাতে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এমন ১১ জন রোগীর দেহ থেকে ভাইরাসের রূপ পরিবর্তন বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে তারা আরো পরীক্ষা করেছেন, কীভাবে কার্যকরভাবে এই ভাইরাস সংক্রমণ ঘটাতে পারে এবং মানবকোষকে হত্যা করতে পারে। এই গবেষণায় ঝেজিয়াংয়ে এই ভাইরাসের গুরুত্বর রূপ পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, পরিবর্তিত এই ভাইরাস ইতালি ও স্পেনের মতো ইউরোপিয়ান দেশগুলোকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে। তারপর সেটা ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে। সূত্র : ডেইলি মেইল।

করোনাভাইরাস মানুষের রক্তে আক্রমণ করে অকেজো করে দেয় একাধিক অঙ্গ : গবেষণা
এদিকে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট আরো জানিয়েছে, করোনাভাইরাস শুধু শ্বাসযন্ত্র বা ফুসফুসেই নয়, এটি মানবদেহের পুরো রক্ত সংবহন তন্ত্রে আক্রমণ করে, যার কারণে একাধিক অঙ্গ অকার্যকর হয়ে পড়ে। গত শুক্রবার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। গবেষণার নেতৃত্বে থাকা জুরিখ ইউনিভার্সিটি হসপিটালের প্রফেসর ফ্রাঙ্ক রুশিৎজকা বলেন, কেবল ফুসফুসেই নয়, ভাইরাসটি ধমনী, শিরা, উপশিরা সবখানেই আক্রমণ করে। তিনি জানান, গবেষকরা দেখেছেন যে, করোনার আক্রমণের ফলাফল নিউমোনিয়ার চেয়ে অনেক বেশি মারাত্মক ও ভয়াবহ।

রক্ত সংবহন তন্ত্রের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রক্তনালীর মধ্য দিয়ে রক্ত সঞ্চালনের কথা উল্লেখ করে ফ্রাঙ্ক রুশিৎজকা বলেন, করোনাভাইরাস এন্ডোথেলিয়ামে (কোষের স্তর) প্রবেশ করে, যা রক্তনালীর প্রতিরক্ষা রেখা। এভাবেই এটি আমাদের শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয় এবং মাইক্রোসার্কুলেশনে সমস্যার সৃষ্টি করে।

ভাইরাসটি এরপর দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত সরবরাহ কমিয়ে দিতে থাকে এবং এক পর্যায়ে রক্ত সঞ্চালন পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় বলে জানান জুরিখ ইউনিভার্সিটি হসপিটালের হার্ট সেন্টার এবং কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক রুশিৎজকা। তিনি বলেন, এ কারণেই আমরা দেখি যে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের হৃদপিÐ, যকৃত ও অন্ত্রসহ প্রায় সব অঙ্গেই সমস্যা দেখা দেয়। এটি এভাবেও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যারা ধূমপায়ী ও যাদের এন্ডোথেলিয়াল ফাংশনের পূর্ব দুর্বলতা রয়েছে অথবা রক্তনালী অপুষ্ট, তারা করোনাভাইরাসের কাছে সবচেয়ে সহজ শিকার উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়াও, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও কার্ডিওভাসকুলার রোগে ভুগতে থাকা ব্যক্তিরাও দুর্ভাগ্যক্রমে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছেন বলেও জানান তিনি। গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত তিন জন রোগীর ময়নাতদন্তে দেখা গেছে, তাদের পুরো রক্ত সংবহনতন্ত্র ‘ভাইরাসে পরিপূর্ণ’ ছিল এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শরীরের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ তাদের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছিল।

 



 

Show all comments
  • মিলন ২২ এপ্রিল, ২০২০, ৩:৫৪ এএম says : 0
    আল্লাহ তুমি আমাদেরকে হেফাজত করো।
    Total Reply(0) Reply
  • Maood ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:১৮ এএম says : 0
    Allahu akbar
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ