পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘ঘরে বসেই তো আছি। গরিব-দুস্থদের জন্য কিছু করি। করোনা-মহাদুর্যোগে কাজ-কর্ম রুজি-রোজগার হারিয়ে এলাকার অনেক মানুষ এখন নীরবে কেঁদে উপোস দিনরাত কাটাচ্ছে। রমজান মাস এসে যাচ্ছে। চুপচাপ ওদের কষ্ট দেখবো? না। সেই চিন্তা থেকেই হঠাৎ ঠিক করলাম, এলাকার স্বচ্ছল ব্যক্তিদের কাছে যাবো।
তবে নাম প্রচারকারী কোন ডোনার ও নেতার কাছে নয়। স্বেচ্ছায় যিনি যা দেন সব একত্রিত করে একটা সাহায্য ফান্ড হচ্ছে। লক্ষাধিক টাকা বাজেটের। সাড়াও পাচ্ছি। তা দিয়ে চাল, ডাল, ছোলা, তেল, লবণ, চিনি, আলু মিলিয়ে পরিবারপিছু একটি ‘উপহার প্যাক’ রেডি করছি। যার যার ঘরে গিয়ে হাতে তুলে দেবো। তা দিয়ে অন্তত রোজার প্রথম সপ্তাহ-দশদিন ওদের খাবার চলবে। আমরা অসহায় মানুষদের তালিকা তৈরি করেছি। আজ-কালই বিলিবন্টন শুরু হচ্ছে। আল্লাহ চাহেন তো রোজায় এ এলাকায় কোন মানুষ অভুক্ত থাকবেন না’।
উত্তর চট্টগ্রামের উত্তর ফটিকছড়ির প্রত্যন্ত এলাকা। বড় বেতুয়া। স্থানীয় কয়েকজন তরুণ-যুবক গতকাল জানালেন তাদের ওই উদ্যোগের কথা। চলছে কাজও। তবে ওরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। করোনা-মহাদুর্যোগে মাহে রমজানের পূর্বে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে সুবাতাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে বেশ। দান-সাহায্যে উদার সাড়া পড়েছে। দিন দিন তা বাড়তির দিকে। সমাজের গরীব-দুঃখী অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর এই শ্রেষ্ঠ সময়কে কাজে লাগাতে মনোযোগী এখন অনেকেই।
একেতো করোনার ধাক্কায় সমাজে চারপাশে জীবিকা হারিয়ে দুবেলা দুমুঠো খেতে পারছে না অসহায় মানুষেরা। পেটে পাথর বেঁধে থাকলেও কষ্ট-যাতনার কথা মুখ ফুটে কারো কাছে বলেনও না লোকলজ্জায়। এমন মানুষগুলো আজ দুঃসহ দিন গুজরান করছে। তাছাড়া তিন দিন পরই আসছে মাহে রমজান। সেহেরি ও ইফতারে তারা কী মুখে তুলে নেবে? কে দেবে তাদের খাবার? ত্রাণ যা মিলছে তা তো প্রকৃত অভাব অনটনের তুলনায় সাগরে বালু কণা মাত্র।
চট্টগ্রামবাসীর সুপ্রাচীন কাল থেকেই দান-সাদকা ও মেহমানদারির ঐতিহ্য রয়েছে। তা ধারণ ও লালন করেই চাটগাঁ মহানগরীতে অনেকগুলো ঐতিহ্যবাহী ধনাঢ্য শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, বনেদি পরিবারের তরফ থেকে প্রকাশ্যে এবং আড়ালে দুই ভাবেই অসহায়-দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে উদার দান-সাহায্যের ব্যাপক প্রয়াস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা এবার করোনা সঙ্কট মাথায় রেখে বেশ আগেভাগেই নেমে পড়েছেন।
বঞ্চিতদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী বিশেষত রোজার খাদ্যসামগ্রী ও নিত্যপণ্য নিয়ে ছুটছেন বাড়ি বাড়ি। দাতাদের সঙ্গে কথা বললে জানান, দানের হাত সবসময়ই উপরে থাকে। বিপদগ্রস্ত মানুষ অন্যের সাহায্য চায়। যিনি দেন তা তো আল্লাহর দান। সাহায্যের হাত বাড়ালে মানুষ বড় হয়। চট্টগ্রামের বেশ কটি শিল্পগ্রæপ ইতোমধ্যে দরিদ্রদের মাঝে রোজার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ, সংবাদকর্মী, চিকিৎসক-নার্স, সংবাদপত্র হকার্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে করোনায় ইপিইি এবং বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী উপহার দিয়েছেন।
সমাজে অসহায়-দুঃস্থদের পাশে বেশ শুরু থেকেই ব্যাপক ত্রাণ-দান, সদকা-সেবায় তৎপর চট্টগ্রামের স্বনামখ্যাত প্রতিষ্ঠান আলহাজ্ব মোস্তফা হাকিম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক সিটি মেয়র এম মনজুর আলম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা শুরু থেকেই মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করে সাধ্যমতো এগিয়ে যাচ্ছি। চট্টগ্রামের বাইরে দেশের উত্তরাঞ্চলের অভাবপীড়িত প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতেও আমরা ত্রাণ খাদ্যসামগ্রী পৌঁছাতে পেরেছি। ইনশাআল্লাহ আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমানের উদ্যোগে এবং আলহাজ্ব মোস্তফা হাকিম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে পুরো রমজান মাসব্যাপী নগরীর ষোলটি থানার প্রতিদিন এক হাজার অসহায়-দুস্থ রোজাদারদের জনপ্রতি ১০০০ টাকা মূল্যের সেহরি-ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।