Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা প্রাদুর্ভাবে রেমিট্যান্সের অভাব

অভিবাসী পরিবারগুলো খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ৩:১৩ পিএম

বর্হিবিশ্বে প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণে প্রায় এক কোটি প্রবাসী কর্মীদের পরিবার পরিজন রেমিট্যান্সের অভাবে খাদ্য নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে। গত বছর এসব প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধারাই ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে এসব প্রবাসী ও তাদের সকল পরিবার পরিজনই আজ গৃহবন্দি। গোটা বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং চ্যানেল বন্ধ থাকায় দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। 

মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফ্রি ভিসায়’ কর্মরত অভিবাসী, অনিয়মিত অভিবাসী, ক্ষুদে ব্যবসায়ী, সেবা খাতে নিয়োজিত কর্মী এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসীরা এখন কর্মহীন এবং বেতনহীন। পুরুষ কর্মীদের পরিবারের মত নারী কর্মীদের দেশে ফেলে যাওয়া সন্তানেরাও আজ খাদ্য সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছে।
বিপদে আছে এমন অভিবাসী এবং তাদের পরিবারগুলোকে মহাসঙ্কটের সময় পার করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ বড় তহবিল গঠন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সোমবার ১৬টি সংগঠনের পক্ষ থেকে রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক খোলা চিঠিতে এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
অভিবাসীদের রেমিট্যান্সের এ বৃহৎ খাতকে ভবিষ্যতে স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজন পড়বে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ। করোনা পরবর্তী পরিবেশে যে অর্থনৈতিক মন্দার কথা বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সেই সময় প্রচলিত খাতে শ্রমিক গ্রহণ কমে আসবে। ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসী চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে আসতে পারে। এদের জন্য চাই দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান প্রকল্প। করোনা-উত্তর স্বাস্থ্যখাতে বিশ্বজুড়ে যেসব নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে তার সুযোগ নেবার জন্য চাই শিক্ষা নীতিতে পরিবর্তন। স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন কোর্সগুলোকে পাবলিক-প্রাইভেট সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রেনিং প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলককরণ। এসব দাবিও উত্থাপন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল থেকে মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসীদের ত্রাণ সহায়তা দেয়ার জন্য অর্থ সরবরাহ করেছে এবং আরও ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। খোলা চিঠিতে রেমিট্যান্সের অভাবে খাদ্য সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, এক কোটি অভিবাসীর বিপদে পড়া অংশ ও তাদের পরিবারের জন্য আরও অনেক বড় তহবিল গঠন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
শুধু অভিবাসীদের নিজস্ব টাকায় গঠিত ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল থেকে নয়, সরকারের কোষাগার থেকে প্রবাসী ও তাদের পরিবারের জন্য তহবিল নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে, বেশ কিছু শ্রমগ্রহণকারী রাষ্ট্র অনিয়মিত অভিবাসীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছে। বিসিএসএম-এর পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, জরুরি অবস্থায় নিয়মিত-অনিয়মিত সকল অভিবাসীদের সুরক্ষা শ্রমগ্রহণকারী দেশের কর্তব্য। জাতিসংঘ কলম্বো প্রসেস ও আবুধাবী ডায়ালগসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে এ বিষয়টি তুলে ধরার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।



 

Show all comments
  • শাহজাহান ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫০ এএম says : 0
    এই জবাবে সরকার কিপদখেপ নিবে? আসলেই অনেক রেমিট্যান্স যোদ্ধার পরিবারের অবস্থা আসলে খুবই খারাপ অবস্থা তাদের জন্য সরকারের এই মুহুর্তে সহযোগিতা করা জরুর। ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ