Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দোয়া করেন স্বাভাবিক জীবনে যেন ফিরতে পারি : প্রধানমন্ত্রী

কারোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকসহ মৃত্যুবরণকারীদের জন্য সংসদে শোক প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

সোয়া ঘন্টার অধিবেশনে করোনা সতর্কতাই ছিলো প্রধান

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশবাসীকে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আহŸান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবাই যেন শিগগির স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন সে প্রত্যাশা করেনে সংসদ নেতার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চোখে দেখা যায় না এমন কারোনাভাইরাসের কারণে আজ মানুষ ঘরবন্দি। এটা এমন একটা বিষয় কতদিন চলবে কেউ বলতে পারছে না। সারা বিশ্বেও কেউ বলতে পারছে না। কেউ বলছে শীতকালে ভাইরাসটি থাকে, গরমে থাকবে না। এখন আবার বলছে গরমেও থাকবে। কেউ কিছু বুঝতে পারছে না। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনে সপামনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ অধিবেশনে দীর্ঘ করোনা মহামারী থেকে রক্ষায় আল্লাহ তা‘আলার কাছে কায়মনোবাক্যে মোনাজাত করেন ডেপুটি স্পিকার এটিএম ফজলে রাব্বী মিয়া।

মাত্র সোয়া ঘণ্টা স্থায়ী ছিল এ অধিবেশন। সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই অধিবেশন শুরু হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় শেষ হওয়া এই অধিবেশন প্রধান ইস্যু ছিলো করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সতর্কতা। করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা ও সাধারণ ছুটির মধ্যে আহুত এই অধিবেশনে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ স্বল্প সংখ্যক সংসদ সদস্য অংশ নেন। তবে সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী এবং বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও উপনেতা গেলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সিনিয়র সংসদ সদস্যরা অনুপস্থিত ছিলেন।
অধিকাংশের মুখে মাস্ক, হাতে গøাভস ও মাথায় ক্যাপ ছিলো। সংসদ পরিচালনায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সংসদ ভবনের প্রবেশমূখে সকলকেই জীবাণু নাশক ¯েপ্র করা হয়। সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের তাপমাত্রা মাপা হয়। এছাড়া নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রাকৃতিক অনেক বড় দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে এত বড় ঝড় আমরা মোকাবিলা করিনি। এখনো বাংলাদেশ অন্য দেশ থেকে ভালো আছি। তবে আমি একটু আমার দেশের মানুষকে বলবো, আসলে আমাদের দেশের মানুষ যে এত সাহসী হয়ে গেছে। বউ নিয়ে বেড়াতে গেল শ্বশুরবাড়ি শিবচর, সেখান থেকে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে হাজির। আমরা সবাইকে বলি, যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন।
সংসদ নেতা বলেন, এই ভাইরাসটি মুখ থেকে আসে। কথা থেকে ছড়ায়। এই যে এখানে সংসদ সদস্যরা সবাই মাস্ক পরে আছেন, সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। নিজে সুরক্ষিত থাকেন। অপরকেও সুরক্ষিত রাখেন। সবাইকে দোয়া করার আহŸান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সকলেই আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। কাবা শরিফ মদিনা শরিফেও কারফিউ দেওয়া হয়েছে। কাজেই মসজিদে না গিয়ে ঘরে বসে আল্লাহকে ডাকেন। যেন আমরা বিশ্ববাসী এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি, স্বাভাবিক কাজে ফিরতে পারি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরুতেই বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকসহ মৃত্যুবরণকারী অন্যান্যদের জন্য শোক প্রকাশ করেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও অধিবেশন ডাকার কারণও ব্যাখ্যা করেন। সম্ভাব্য সকল স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অধিবেশন আহŸান করা হয়েছে বলেও উল্লে¬খ করেন স্পিকার।
ডেপুটি স্পিকার এটিএম ফজলে রাব্বী মিয়া শোক প্রস্তাবে মৃত্যুবরণকারী সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। দীর্ঘ হৃদয়গ্রাহী মোনাজাতের বেশিরভাগ ছিল করোনার মহামারি থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফরিয়াদ। করোনাকে ‘গজব’ আখ্যা দিয়ে তিনি এর হাত থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীকে রক্ষা করতে আল্লাহর কাছে মিনতি করেন।
অন্য সময়ের চেয়ে এদিনের মোনাজাতটি ছিল বেশি ভাবগাম্বীর্যপূর্ণ। উপস্থিত সংসদ সদস্যদের সবাইকে কাতর হয়ে মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা গেছে। প্রায় ৭ মিনিট স্থায়ী মোনাজাতকালে সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বেশ কাতরভাবে ‘আমিন’ ‘আমিন’ বলতে শোনা যায়।
করোনার মহামারি থেকে জাতিকে রক্ষার আকুতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ! গোনাহের কারণে যদি এই গজব দিয়ে থাকেন তাহলে আমাদের মাফ করে দেন। এই গজব থেকে রক্ষা করুন। আল্লাহ আপনি তো বলেছেন ‘কুন ফাইয়াকুন’ আপনি বলার সঙ্গে সঙ্গে সব হয়ে যায়। আপনি আমাদের এই বিপদ থেকে রক্ষা করুন।’ ব্যক্তিগত জীবনে ধার্মিক ডেপুটি স্পিকারকে মোনাজাতে বারবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে দেখা যায়।
পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সরকারি কর্ম কমিশনের বার্ষিক রিপোর্ট উত্থাপন করেন।



 

Show all comments
  • Mamun Rana ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার আগে দেশের সমস্ত প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো বন্ধ করে দেন,এসব প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতে বর্তমানে রোগীরা চিকিৎসা থেকে একপ্রকার বঞ্চিত
    Total Reply(0) Reply
  • Rahim Uddin Rokon ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    মসজিদ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। তাহলে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে। কাচাঁ বাজার বন্ধ করে দিন তরি তরকারি কেনার জন্য কিছুক্ষণ খোলা রাখলে হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Bappi ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    যে দেশে পাপে ভরা সে দেশে তো গজ ব পড়বে
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Hosen Kamal Hosen ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    Inshaallah may allah save you.
    Total Reply(0) Reply
  • Bijoy Roy ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
    কাদের জন্য এত কিছু করছেন!!! বাঙালি আগেও কি বলদ ছিলো এখন আর বেশি বলদ। ভালো কিছু করতে বললে তার উল্টোটাই করে বসে। করোনার ভয়াল থাবা থেকে এই বলদগুলোকে না বাঁচিয়ে , বরং বিনা চিকিৎসায় মরতে দিন , তাতে যদি এই বলদ গুলো একটু ভালো হয়। নিজে করোনায় আক্রান্ত না হলে, এই বলদগুলো বুঝবে না, যে করোনা কি জিনিস।
    Total Reply(0) Reply
  • Ray Nipa Chowdhury ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
    আপনি বেশি বেশি টেস্ট না করালে কিভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবো!! পিএম এ জাতিকে ঘরে রাখা যাবে না সামনে রোজার মাস ঘরে রাখা কষ্টসাধ্য আপনার টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Hossaine Zakir ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
    Inshallah. Allah bless us.
    Total Reply(0) Reply
  • Sonia Mitu ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    ইনশাল্লাহ আল্লাহ যেনো আমাদের রহমাত করে ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ayub Ali Chy ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    ইনশাল্লাহ আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরব
    Total Reply(0) Reply
  • Tareq Sabur ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ৩:১৮ এএম says : 0
    Dear PM, please fire Obaidul Kader, Zahid Malik and Dr. Hassan Mahmud. These 3 are useless unqualified guys as minister. And of course, please keep Awamileague out of reach of the relief. If Awamileague get the responsibility to distribute the relief, then they will loot all the relief. Bcuz, they are the poorest in the country.
    Total Reply(0) Reply
  • md anwar ali ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ৬:৫৭ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ মোতাবেক আসুন আমরা মসজিদে মসজিদে মহান আল্লাহর নিকট প্রাথর্না করি যেন আল্লাহ আমাদেরে ক্ষমা করে।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০৭ পিএম says : 0
    Until and unless our government rule our Beloved Country by the Law of Allah. Allah will not accept our Dua.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ