দেশে করোনা পরিস্থিতিতে যে ত্রাণ কার্যক্রম চলছে তাতে সহায়তা দিতে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ‘ত্রাণ কমিটি’ গঠনের ঘোষণায় সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি এ পদক্ষেপ যেন ‘স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা দেয়ার’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। শুক্রবার সংস্থাটির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতির ক্রান্তিলগ্নে সব ধরনের রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে সবার সর্বাত্মক অংশগ্রহণ জরুরি হলেও; দেশের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণসামগ্রী চুরি ও আত্মসাৎসহ বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি এবং দলীয় নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে তাতে এ দলীয় ‘ত্রাণ কমিটি’ কার্যত কতটুকু ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে তা নিয়ে সংশয় থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, “দেশ এবং দেশের মানুষ এখন এক মহাসংকট কাল অতিবাহিত করছেন। সবচেয়ে বেশি বিপন্ন অবস্থায় আছেন হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন করোনা সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থায় বেকার হয়ে যাওয়া মানুষ। এদের সবার কাছেই সরকারি সহায়তা পৌঁছাতে হবে এবং এক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনা বা ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কোনো সুযোগ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানসহ এ বিষয়ে তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা ঘোষণা করেছেন, এবং আমরা আশ্বস্ত হতে চাই যে সরকারপ্রধানের এ অবস্থান ত্রাণ তৎপরতার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে প্রতিফলিত হবে।”

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, “নতুন যে দলীয় কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তাদের দায়িত্বশীল অংশগ্রহণ হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরিতে ইতিবাচক ভূমিকা তখনই পালন করতে পারে যখন তারা দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে থাকতে পারবেন। অন্ন সংকটে পড়া কেউ যেন বাদ না পড়েন তা নিশ্চিত করার একটা সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে, দেশের নানা প্রান্ত থেকে রোজই আমরা ত্রাণ আত্মসাৎ ও চুরির খবর পাচ্ছি এবং দুঃখজনকভাবে এ অপকর্মে যারা জড়িত বলে অভিযোগ আসছে, তাদের প্রায় সবারই দলীয় পরিচয় রয়েছে। এমন বাস্তবতায় নতুন করে যে ত্রাণ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে তা এ অনিয়মের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেবে কি-না সেই আশঙ্কা অমূলক নয়।”