পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719635177](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশে^র অন্যদেশের চেয়ে আমাদের পরিস্থিতি ভাল : ভোটার নয় দরিদ্র দেখে তালিকা করুন আরও ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড দেব
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সুরক্ষিত থাকতে গিয়ে কারও প্রতি যেন অমানবিক আচরণ করা না হয়, দেশবাসীর প্রতি সেই আহŸান রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টাঙ্গাইলের সখিপুরে গত সোমবার রাতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে ৫০ বছরের এক নারীকে তার স্বামী-সন্তানদের জঙ্গলে ফেলে যাওয়ার ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে এই আহŸান জানিয়েছেন তিনি। কে কোন রাজনৈতিক দল করে, এই সঙ্কটকালে তা না দেখে ত্রাণ বিতরণের কাজটি করার জন্য সবার প্রতি আহŸান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম দেখলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। মাঠ প্রশাসনকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ নিয়ে ঢাকা বিভাগের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এই আহŸান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। সাবধানে থাকতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, অমানবিক আচরণ করতে হবে। সেটা আপনারা করবেন না। মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক সময় ‘অমানুষে’ পরিণত হয় মন্তব্য করে তার দৃষ্টান্ত হিসেবে সখিপুরের ওই ঘটনা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যখন আমরা দেখি মায়ের একটু সর্দি-কাশি-জ্বর হল দেখে ছেলে, ছেলে বউ বা ছেলে-মেয়ে মিলে এমনকি তার স্বামী পর্যন্ত তাকে নিয়ে জঙ্গলে ফেলে আসে। এর থেকে অমানবিক কাজ আর হতে পারে না।
বাংলাদেশে কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটবে সেই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অমানবিক হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারও যদি সন্দেহ হয় তাহলে তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তার পরীক্ষা করান। নিজেরাও সুরক্ষিত হোন। অতি সংক্রামক নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেয়া নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি। কীভাবে একটা মানুষকে বের করে দেবেন বা একজন ডাক্তারকে। সে যদিও এই রকম অসুস্থ হল তাকেও এলাকা থেকে বের করে দিতে হবে। এই ধরনের ঘটনা কেন ঘটবে বাংলাদেশে? বাংলাদেশের মানুষ তো এ রকম অমানবিক হওয়ার কথা না। কজেই এই বিষয়গুলোও সবার দৃষ্টিতে আনতে চাই, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, হায়াত-মওত আল্লাহর হাতে। যে কোনো মানুষ যে কোনো দিন মরতে পারে। আজকে আমি কথা বলছি এখানে বসেও মরতে পারি। বা যে কেউ মরতে পারে। এটা কেউ বলতে পারে না যে আমি এক্ষণি বেঁচেই থাকব। কেউ বলতে পারবে না। একমাত্র আল্লাহ বলতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে যে একটা ভাইরাস এসে সারা বিশ্বকে এরকম ঘরবন্দি করে ফেলবে, এটা কি কেউ ভেবেছে? সারা বিশ্বে অনেক শক্তিশালী দেশ, তাদের শক্তির দাপটে পৃথিবী অস্থির। আবার শক্তিশালী এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের লড়াই যুদ্ধ বা তাদের সংঘাত দেখেছি। অস্ত্রের মহড়া আমরা দেখেছি। সেই অস্ত্র, অর্থ, সেই সম্পদ কোনো কাজে লাগেনি, কোনো কাজে লাগবে না, লাগে না। সেটাই প্রমাণ করে দিলো এই করোনাভাইরাস।
আরও ৫০ লাখ মানুষের রেশন কার্ড দেব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিÑ আমাদের ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন কার্ড করা আছে। ১০ টাকায় চাল পান। আমরা আরও ৫০ লাখ মানুষের রেশন কার্ড করে দেবো। তিনি বলেন, এর আগে ১০ টাকা কেজিতে আমরা ৫০ লাখ মানুষকে চাল দিতাম। আমরা তাদের রেশন কার্ড দেই। কিন্তু আমরা এবার সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিচ্ছিলাম। এখন বাকি যাদের দেব তাদের জন্য কার্ড তৈরির জন্য এটা আপাতত স্থগিত রেখেছি প্রত্যেককে আলাদাভাবে কার্ড করে কার্ডের মাধ্যমে দেয়া হবে। অর্থাৎ প্রতিটি মানুষ যেন পায় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। সে জন্য এই কার্ড করে আমরা এটা দেব।
ত্রাণ দেয়ার সময় দল দেখা যাবে না
দলের ভোটার দেখে ত্রাণের তালিকা করা যাবে না। দরিদ্র দেখে তালিকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারা দলের ভোটার এই দেখে তালিকা করা যাবে না। আমরা চাই, যারা প্রকৃত জনগণ তারা তালিকায় আসুক। আওয়ামী লীগ শুধু দলীয় রাজনীতি করে না, আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য রাজনীতি করে। এই সুস্পষ্ট বার্তাটি আমরা দিতে চাই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটি তালিকা করবে। এটি স্থানীয় প্রশাসনকে দেবে। স্থানীয় প্রশাসন তালিকাটি যাচাই-বাছাই করবে।
তিনি বলেন, যেহেতু সবকিছু এখন বন্ধ। অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। যারা দিনমজুর কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি নিম্নবিত্তদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। সবাইকে সহযোগিতা করব। এমনকি এটা আমরা শুরু করেছি। মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না যারা, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি।
বিশে^র অন্যদেশের চেয়ে পরিস্থিতি ভাল
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগে থেকেই ব্যবস্থা নেয়ায় করোনা পরিস্থিতি অন্য বিশে^ও অনেক দেশের চেয়ে ভাল আছে। সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। এই মুহূর্তে চিকিৎসা ও নিরাপত্তা সামগ্রির কোনো সঙ্কট নেই। বৈশ্বিক এ সঙ্কটে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি মানুষের পাশে সরকার আছে।
চিকিৎসকের কথা শুনে অবাক
করোনা পরীক্ষার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ পিসিআর ল্যাব ও এন-৯৫ মাস্ক চাইলেন নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. শামসুদ্দোহা। ওই জেলায় কোনো গবেষণাগার নেই শুনে অবাক হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ জানতে চান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির কাছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।