পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা পরিস্থিতির এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এতো কথা না বলে কয়েকটা মানুষকে সাহায্য করেন। এই দুঃখের সময়ে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। ত্রাণ বিতরণে যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে দলমত বিবেচনা না করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ত্রাণের অপব্যবহার এটা আমরা বরদাস্ত করব না। সেটা আমার দলেরই হোক বা অন্য দলেরই হোক, আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি জানান তিনি।
গতকাল বুধবার দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণ কালে একথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রতিটি মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে সরকারের নেয়া ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই রিলিফ দেয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হলে সাথে সাথে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেই এর সঙ্গে জড়িত সে যে দলেরই হোক তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি, ব্যবস্থা নেব। কারণ গরীব মানুষের জন্য আমরা যে সহায়তা দেবো কেউ এর অপব্যবহার করবে, এটা আমরা বরদাস্ত করব না। সেটা আমার দলেরই হোক বা অন্য দলেরই হোক, আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ৫/৭ টি জায়গা ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকটা জায়গায় এ সমস্যা পেয়েছি, তা খুব বেশি না। আমরা যদি তুলনা করি আমাদের প্রায় ৬৮ হাজারের মতো নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ৪ হাজারের ওপরে ইউনিয়ন, এরপর উপজেলা রয়েছে। সব হিসাব করে দেখা গেল যে হয়তো ৫/৭ জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী আমাদের যে নেতা-কর্মী তাদেরও আমরা নির্দেশ দিয়েছি। তারাও মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সরকারিভাবে যা দেয়া হচ্ছে পাশাপাশি বেসরকারিভাবে যে যতটুকু পারছেন সাহায্য করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে যেমন বিনাম‚ল্যে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি তেমনি ১০ টাকা কিলো মূল্যে ওএমএস’র মাধ্যমে চাল সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। যারা তালিকার বাইরে রয়েছে তাদের জন্য আমরা কার্ড তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি মানুষ যেন সহায়তাটা পায় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। যাতে প্রত্যেকের ঘরে এই ত্রাণ সহযোগিতাটা পৌঁছে যায়। রাত্রে রাত্রে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। যাতে কেউ ভিড় না করে। একসঙ্গে জমা না হয়। নতুন করে কেউ যাতে সংক্রমিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা ভিড় করে ত্রাণ বিতরণ করবেন না। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। যারা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন তারা সরকার, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ত্রাণটা বিতরণ করেন, যাতে লোক সমাগম না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। প্রত্যেকটি এলাকায় কমিটি করে দিয়েছি, স্বেচ্ছাসেবকরা রয়েছে। তাদের মাধ্যমে ত্রাণটা বিতরণ করলে সবাই পাবে। কেউ বাদ যাবে না। তিনি বলেন, আজকের যে দুঃসময় সেটা একদিন কেটে যাবে এবং বাংলাদেশ আবারো এগিয়ে যাবে এবং এই বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবেই ইন শা আল্লাহ আমরা গড়ে তুলব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বব্যাপীই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। করোনাভাইরাসে সমগ্র বিশ্ব বলতে গেলে স্থবির হয়ে আছে।
সবাইকে সচেতন থাকা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে, মানুষকে সুরক্ষিত করতে হবে, পরিবারকে সুরক্ষিত করতে হবে। সে কারণে আহ্বান জানিয়েছি পরিবার নিয়ে একসঙ্গে থাকুন সেটা ঠিক আছে কিন্তু বাইরের লোকের সঙ্গে না মেশা। যেখানে লোক সমাগম সেখানে না যাওয়া, নিজেকে সুরক্ষিত করা এবং নিজেকে সুরক্ষিত করার সঙ্গে সঙ্গে অপরকেও সুরক্ষিত করা। সেই দায়িত্ব সবাইকে পালন করতে হবে। আমি জানি এটা অনেকের কষ্ট হচ্ছে।
৩৩টি ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে নগদ অর্থ ও পিপিই দেয়। সেগুলো হচ্ছে, আর্থিক অনুদান প্রদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিইউপি (ইটচ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কাশেম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এম.এ কাশেম, সংসদ সদস্য জিল্লল হাকিম, বাংলাদেশ ফররেইন সার্ভিস এসোসিয়েশন, বিসিএস কর এসোসিয়েশন, ইনস্টিটিউশন্স অব ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইবি), ঢাকা ক্লাব, বিএসআরএম গ্রুপ; সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড, উত্তরা গ্রুপ, টেক্সকোটেক; হামদর্দ ফাউন্ডেশন, গান বাংলা, শাওমি টেকনোলজিস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, ইস্পাহানি টি লিমিটেড, সিদ্ধেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স, আইডিইবি, ইইডি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এসব অনুদান গ্রহণ করেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।