পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি সামলে উঠতে গ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের জন্য সরকার যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করেছে, সেখান থেকে ঋণে সুদের হার সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার (১৩ এপ্রিল) ওই ঋণের জন্য নীতিমালা ঘোষণা করে বলেছে, এ তহবিলের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১ শতাংশ সুদ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। আর গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। করোনাভাইরাসের অভিঘাতে অর্থনীতির ক্ষতির মধ্যেও কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার এই পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিলের ঘোষণা দেন। কেবল গ্রাম অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝরি চাষিরাই এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন ও পরিচালনা’ শীর্ষক নীতিমালায় বলা হয়েছে, সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনসহ অর্থনৈতিক কর্মকা- সীমিত হয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দীর্ঘায়িত হলে ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদন হ্রাসসহ বিভিন্ন বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর মোট লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ৬০ শতাংশ শস্য ও ফসল খাতে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। সে হিসেবে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর জন্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকার ৬০ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা শস্য ও ফসল খাতে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব। শস্য ও ফসল খাতে চলমান ঋণপ্রবাহ পর্যাপ্ত থাকায় এ খাতের চেয়ে কৃষির চলতি মূলধন ভিত্তিক খাতগুলোতে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে এ খাতগুলোতে ঋণের প্রবাহ নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ পেক্ষাপটে চলতি মূলধন ভিত্তিক কৃষির অন্যান্য খাতে (হর্টিকালচার অর্থাৎ মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাত) পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে দেশের সার্বিক কৃষিখাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সম্ভব হবে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই এ খাতগুলোর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নীতিমালায় জানানো হয়।
পুনঃঅর্থায়ন স্ক্রিম : এ তহবিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্ক্রিম’। তহবিলের পরিমাণ হবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে এ অর্থায়ন করা হবে।
এ তহবিলের আওতায় পুনঃঅর্থায়নে ইচ্ছুক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি হবে। চুক্তিপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে কোনো তফসিলি ব্যাংক এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা নিতে পারবে। ব্যাংকগুলোকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণ বিতরণ করে মাসিক ভিত্তিতে পুনঃঅর্থায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। ব্যাংকগুলোর কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা এবং সক্ষমতার ভিত্তিতে কৃষি ঋণ বিভাগ তাদের তহবিল বরাদ্দ দেবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণের পর বরাদ্দ তহবিল থেকে পর্যায়ক্রমে সমপরিমাণ অর্থায়ন করা হবে। ব্যাংকগুলোর বর্তমান গ্রাহকদের মধ্যে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা বিদ্যমান ঋণ সুবিধার অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ এ তহবিল থেকে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কেও ভিত্তিতে জামানত/সহায়ক জামানতের বিষয়ে ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
ঋণের মেয়াদ : অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো পুনঃঅর্থায়ন নেওয়ার তারিখ থেকে সর্বোচ্চ ১৮ মাসের (১২ মাস + গ্রেস পিরিয়ড ৬ মাস) মধ্যে আসল এবং সুদ (বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ১% সুদ হারে) পরিশোধ করবে। ব্যাংকগুলোর মত গ্রাহক পর্যায়েও ঋণের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে ঋণ নেওয়ার তারিখ থেকে ১৮ মাস (৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ)।
সুদের হার : এ তহবিলের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্ধারিত ১ শতাংশ সুদ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। এই সুদহার চলমান গ্রাহক এবং নতুন গ্রাহক সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
ঋণ বিতরণের খাত : শস্য ও ফসল খাত ছাড়া কৃষির অন্যান্য চলতি মূলধন নির্ভরশীল খাত; মেন- হর্টিকালচার অর্থাৎ মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাতে এই তহবিল থেকে ঋণ দেওয়া যাবে। তবে কোনো একক খাতে ব্যাংকের অনুকূলে বরাদ্দ ঋণের ৩০ শতাংশের বেশি ঋণ বিতরণ করা যাবে না। যেসব উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য কিনে সরাসরি বিক্রি করে, তাদেরকেও এ তহবিলের আওতায় ঋণ দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা যাবে। তবে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোনো উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে পাঁচ কোটি টাকার বেশি ঋণ দিতে পারবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।