Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিলম্ব ফি মাফ হলেও গুণতে হবে চড়া সুদ

ক্রেডিট কার্ড

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের বিলম্ব ফিসহ অন্য কোনও ফি বা চার্জ (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) আদায় না করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে গুটিকয়েক ব্যাংক এ নির্দেশনা মেনে গ্রাহকদের মোবাইলে মেসেজ (এসএমএস) পাঠালেও বেশিরভাগ ব্যাংক এক্ষেত্রে চাতুরির আশ্রয় নিয়েছে। এসএমএসে বিলম্ব ফি মওকুফ করা হবে এমন ঘোষণা সব ব্যাংক দিলেও বিলম্ব সংক্রান্ত অন্যান্য ফি বা চার্জগুলোর ব্যাপারে কোনও কিছুই বলেনি ব্যাংকগুলো। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্ন ধরনের চার্জ আরোপ হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন গ্রাহকরা। শুধু তাই নয়, গ্রাহকদের আশঙ্কা, যারা নির্ধারিত সময়ে বিল পেমেন্ট করবেন না তাদের ওপর সুদ আরোপ করা হবে।

গত ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত যে সার্কুলার জারি করে তাতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তারের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের পক্ষে প্রদেয় বিল নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এমতাবস্থায়, ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের আর্থিক সামর্থ্য ও চলমান অন্যান্য সীমাবদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যেসব ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের বকেয়া বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ১৫ মার্চ বা তার পরে, সেসব ক্ষেত্রে গ্রাহক প্রদেয় বিল নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করার ক্ষেত্রে কোনও বিলম্ব ফি, চার্জ, দন্ড সুদ, অতিরিক্ত মুনাফা, বা অন্য কোনও ফি বা চার্জ (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) আদায় না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো। এছাড়া ১৫ মার্চ হতে ইতোমধ্যে কোনও ক্রেডিট কার্ড বিল বিলম্বে পরিশোধজনিত কারণে বিলম্ব ফি, চার্জ, দন্ড সুদ, অতিরিক্ত মুনাফা, বা অন্য কোনও ফি বা চার্জ (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) আদায় করা হয়ে থাকলে তা সংশ্লিষ্ট ক্রেডিট কার্ড গ্রাহককে ফেরত প্রদান অথবা পরবর্তী সময়ে প্রদেয় বিলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এই নির্দেশনা ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ইতোমধ্যেই দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে ভাষায় মেসেজ পাঠিয়েছে তাতে ৩১ মে পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের বিলম্ব ফি মওকুফের কথা স্পষ্ট হয়েছে। শুধুমাত্র ‘ফি’ লেখায় এর সঙ্গে ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত চার্জ, দন্ড সুদ, অতিরিক্ত মুনাফা, বা অন্য কোনও ফি বা চার্জ (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) মওকুফ হবে কিনা তা পরিষ্কার করেনি বেশিরভাগ ব্যাংক। সিটি ব্যাংক লিমিটেড ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) স্পষ্ট করে লিখেছে, তারা শুধু বিলম্ব ফি মওকুফ করবে।

নিরাপদে থাকার আহবানের মোড়কে একই রকম বার্তা গ্রাহকদের কাছে পাঠিয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডও। এই ব্যাংকটিও তার ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের শুধুমাত্র বিলম্ব ফি মওকুফের কথাই লিখেছে। ব্যাংকটির মেসেজে স্পষ্টভাবে শুধুমাত্র ‘লেট ফি’-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে অন্য ফি বা সুদগুলোও মওকুফ করতে বলেছে তার কিছুই উল্লেখ নেই এই মেসেজে।

এমন ২১টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের শুধু লেট ফি বা বিলম্ব ফি মওকুফের কথাই বলা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাংকটি এ সংক্রান্ত যে মেসেজটি তার ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের পাঠিয়েছে সেখানে স্পষ্টভাবেই বিলম্ব সংক্রান্ত ‘সব ফি’ মওকুফ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী। এজন্য তারা ‘ফিস’ শব্দটি ব্যবহার করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক তার গ্রাহককে কী এসএমএস দিয়েছে, সেটা বড় বিষয় নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ব্যাংকগুলো মানছে কিনা সেটাই বড় বিষয়। আগামী জুন মাসে আমরা বিষয়টি দেখবো। তিনি বলেন, কোনও ব্যাংক যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে, তাহলে অবশ্যই আমরা ওই ব্যাংককে শাস্তি দেবো। নির্ধারিত সময়ে গ্রাহক টাকা জমা না দিলে ব্যাংক সুদ নেবে। কিন্তু, অন্য কোনও চার্জ নিলেই আমরা ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবো।

এদিকে, আগামী ৩১ মে পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের কোনও লেট ফি নেবে না বলা হলেও ব্যাংকগুলো যে এর সুদের অঙ্কে কোনও ছাড় দেবে না সে ইঙ্গিত দিয়েছেন বেশ কিছু ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এছাড়া ওই গ্রাহকের ওপর ব্যাংক পরবর্তীতে অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করবে কিনা তাও পরিষ্কার নয়। ফলে ৫০০ টাকা বাঁচাতে গিয়ে কারও কারও দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বা তারও বেশি পরিমাণ অর্থদন্ড হতে পারে।

তবে ব্যাংকগুলোর পাঠানো এসএমএসে ‘ফি, অথবা ফিস’ যাই লেখা হোক না কেন, কোনও ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করবে না বলে অভয় দিয়েছেন ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ইবিএলের এমডি আলী রেজা ইফতেখার।



 

Show all comments
  • Zahid Haque ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৪৯ এএম says : 0
    যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী এটাই দাঁড়ায় যে, কোন লেট পেমেন্ট চার্জ নেয়া হবে না কিন্তু ইন্টারেস্ট চলতেই থাকবে, তাহলে ব্যাংকগুলোর জন্য এই সিদ্ধান্ত পোয়াবারো। কারণ আপনি পেমেন্ট দিবেন না অার ব্যাংক ইন্টারেস্ট গুনতে থাকবে, কারন ব্যাংকের ইনকাম বাড়বে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Maruf ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫০ এএম says : 0
    আমিও ক্লিয়ার হতে চাই। ব্যাংকগুলো কিসের রেফারেন্স নিয়ে বলেই যাচ্ছে শুধু বিলম্ব ফি মওকুফ করা হয়েছে। কিন্তু সার্কুলারে স্পষ্ট করে বলা আছে যেকোন কথাটা।
    Total Reply(0) Reply
  • Anwarul Azim ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫০ এএম says : 0
    ক্রেডিট কার্ডের মূল ব্যবসাই এই সুদের। এটিকে মওকুফ করলে ক্রেডিট কার্ডের সার্ভিস একটি দাতব্য কার্যক্রমে রুপান্ত‌রিত হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Rubel Miah ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫১ এএম says : 0
    B bank is ok but few bank are miss leading their customer...please read BB circular carefully. They said any charge whatever name should not imposed.... So chop kore bose thaken... Jokon charge korbe... Just protest and complaine to B Bank..... Inshallah solved...reff. by a senior Banker...
    Total Reply(0) Reply
  • Mahbub Islam ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫১ এএম says : 0
    মানুষ কি জন্যে ক্রেডিট কার্ড ইউজ করে বুঝিনা -_- Credit Card is shit and always will be...
    Total Reply(0) Reply
  • Ashok ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫১ এএম says : 0
    যাদের ফুটানি বেশি তারা ব্যবহার করে ৷ ১২ হাত লাউয়ের ১৩ হাত বীচি ৷
    Total Reply(0) Reply
  • MA Hossain Bank ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫২ এএম says : 0
    তো মজা নেওয়ার জায়গাই, যেখানে ফাও 209/ টাকায় সুদ 1মাসে 814/ টাকা চার্জ করে । যেখানে কোন প্রকার লেনদেন হয় নই 3 - 4 মাস। যেখানে কোন প্রকার বকেয়া বিল ছিল না সেখানে কিভাবে যেন বিল আসছে 209/ টাকা শুধু তাই নয় পরের মাসে তার আবার সুদ আসছে 814/ টাকা ।
    Total Reply(0) Reply
  • Taher ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১০:২৮ এএম says : 0
    You fool by own sense and wish! Related bank is not blinding to use c/d cards
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ