Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জুমার নামাজের খুতবা নির্দিষ্ট করে দেয়ার অধিকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নেই-খতিব ও ইসলামী নেতৃবৃন্দ

তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ

প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : উগ্রবাদ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে মসজিদে খুতবা নজরদারির নামে ইফা. কর্তৃক খুতবা নির্দিষ্ট করে দেয়ার প্রতিবাদ করেছেন বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও ইসলামী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, খুতবা নির্দিষ্ট করে দেয়ার কোন অধিকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নেই। এতে করে মসজিদের খুতবার উপর দলীয় চাপ সৃষ্টি হবে। আর তখন লক্ষ্য উদ্দেশ্য ব্যহত হবে। এতে করে কল্যাণের পরিবর্তে ক্ষতির কারণ হবে। তা ছাড়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে খতিবগণ পূর্ব থেকেই তাদের বয়ানে বক্তব্য দিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে নতুন কিছু বলার নেই। পূর্বের বয়ান পুনঃব্যক্ত হবে মাত্র। সরকার যদি মনে করে জাতীয় স্বার্থে কোন বিষয়ের উপর বয়ানের জরুরত রয়েছে তা হলে খুতবা নির্দিষ্ট করে নয়। বরং কোন বিষয়ের ওপর বয়ান দেয়ার জন্য খতিবগণকে অনুরোধ করতে পারেন মাত্র।
ইসলামী আন্দোলন মহানগর উত্তর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের এক যৌথ সভা আজ বিকাল চারটায় আইএবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। নগর উত্তরের সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাও. ইউনুছ আহমাদ বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের নামে সরকারের কার্যক্রমে মনে হচ্ছে সরকার ইসলাম ও মুসলমান দমনের মিশনে নেমেছে। এদেশের লক্ষ লক্ষ আলিম ওলামা ও মসজিদের ইমাম খতীব সব সময়ই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সদা সোচ্চার ও জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছেন। কিন্তু মসজিদ, ইমাম-খতীব ও আলিম ওলামাদের উপর নজরদারি ও জুমার খুৎবা নিয়ন্ত্রণ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে সরকার মূলত ইসলাম দমনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মসজিদ, মাদরাসা, আলিম-ওলামাদেরকে নজরদারিতে না এনে যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত ও মদদদাতা, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করলে সরকার আলেম ওলামার সহযোগিতা পাবে।
ইসলামবাগ জামে মসজিদ
ইসলামবাগ ঈদগাঁ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি বলেন, খতিবরা সব সময় তাদের খুতবা ও বয়ানে জঙ্গি সন্ত্রাস, নৈরাজ্যসহ যাবতীয় অনৈতিকতার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে তাদের উপর খুতবা নির্দিষ্ট করে তা চাপিয়ে দেবার অধিকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নেই। বরং খতিব সাহবেগণ যুগ যুগ ধরে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে যে ভূমিকা রেখে আসছেন তা দলীয় চাপে বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
খতিব সোয়ারীঘাট মসজিদ
সোয়ারীঘাট মসজিদের খতিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক খুতবা নির্দিষ্ট করে দেয়া ইসলাম মসজিদ ও খতিবগণের বিরুদ্ধে এক নতুন চক্রান্ত বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, খতিবগণ এবং উলামায়ে কেরাম অতীতেও সন্ত্রাসের এবং বোমাবাজির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। এটা নতুন নয়। তাই এ বিষয়ে খুতবা নির্দিষ্ট করে দেয়ার কিছু নেই। আর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কোন অধিকার নেই। বরং এটা ক্ষতির কারণ হবে।
মালিবাগ শহিদী জামে মসজিদ
মালিবাগ শহিদী জামে মসজিদের খতিব মাও. সাদেক আহমদ সিদ্দিকী বলেছেন কোন খুতবা নির্দিষ্ট করে দেয়ার অধিকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নেই। সরকার কোন বিষয়ের উপর জাতীয় স্বার্থে খুতবা বা বয়ান দেয়ার জন্য খতিবগণকে অনুরোধ করতে পারে মাত্র।
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিস মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, উগ্রবাদ দমনে মসজিদ, মাদ্রাসা, জুমার খুৎবা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অমূলক ও অনভিপ্রেত। বরং ইসলামের শান্তি ও সাম্যের বাণী প্রচারের মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ শফিক উদ্দিন বলেন, এদেশের মসজিদ, মাদ্রাসা, মিম্বর থেকে শান্তি ও সম্প্রতির বাণী প্রচার করা হয়। কিন্তু আজকে জুমার খুৎবা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ইসলামকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বর্তমান কর্মকর্তাদের জুমার খুৎবা নির্দিষ্ট করে দেয়ার কোন অধিকার নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ