Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশ্ন : সরকার প্রথমে ১০/১২ দিনের জন্য সবকিছু বন্ধ করে দিল। পরে আবার বাড়িয়েছে। শোনা যাচ্ছে, আরও বাড়তে পারে। যে কারণে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হলো, আমরা কি তা মানছি? কেউ কেউ বলছেন, যদি করোনা বাংলাদেশে মহামারী রূপ ধারণ করতো, তাহলে এতদিনে তা স্পষ্ট হয়ে যেত। এসব বলে বলে তারা কেউ কেউ বলতে চাচ্ছে, হুজুররা শুধু শুধু মসজিদে যাওয়া থেকে মুসল্লীদের বারণ করছে, সরকার অকারণেই সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে। আসলে কি হচ্ছে? কি হতে পারে? আর আমাদের কি করণীয় বলবেন?

জাহিদ হাসান
ইমেইল থেকে

প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২০, ৭:২৭ পিএম

উত্তর : বাংলাদেশ এখনো শঙ্কামুক্ত নয়, আল্লাহ না করুন আগামী ২০/২৫ দিন পরেও কোভিড১৯ মহামারী রূপ নিতে পারে। ইতালিতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হবার ৪৫ দিনের মাথায় মহামারী ছড়িয়ে পড়ে । স্পেনে শনাক্তের ৫০ দিনের মাথায় । যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫ দিনের মাথায় । বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ার পর আজ ২৭ দিন কিংবা অন্য বিবেচনায় আরো বেশী হতে চললো। যারা ভাবছেন ভাইরাস থাকলে তো এতদিনে মারাত্মক রূপে প্রকাশ পেত। খুব কম রোগী। মৃত্যুও ৭ কিংবা ৭০ জন। আগামী ২০/২৫ দিনের মধ্যে অবস্থা কী দাঁড়ায় সেটি সবাইকে ভাবতে হবে। শত কষ্ট করে হলেও সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। আল্লাহর দরবারে কাঁদতে হবে। ক্ষমা করুণা ও অনুগ্রহ ভিক্ষা করতে হবে। অপর ভাইকে সাহায্য করে বালা মুসিবত ও বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার পূর্ণ চেষ্টা করতে হবে। ৭০% মানুষ গরিব। তারা তিন মাস ঘরে বসে থেকে চলতে পারবে না। আল্লাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও ভালো করে দিন।

মনে রাখবেন, আমেরিকাতে ২৫ তম দিনে রোগী ছিল মাত্র ১৫ জনের মত। আমাদের ৫১। বাকি যা দেখতে পাচ্ছেন এর সবই পরের ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। রোগী যতই হোক, মৃত্যুর হার আমাদের দেশে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। ইতালি স্পেন ও আমেরিকার মতো প্রতিদিন শত সহস্র লাশের ভার বাংলাদেশের মানুষ বইতে পারবে না। আল্লাহ আপনি আপনার হাবীবের উম্মতের মধ্যকার এ দুর্বল জনগোষ্ঠীকে বিশেষ রহমতের ছায়া দিয়ে নিরাপদে রাখুন।
অতএব, সাবধানে থাকুন। সতর্ক থাকুন। আলাদা থাকুন। ভিড় ও জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। তাবলীগী সফর স্থগিত করে দিন। বাড়ি ঘরে থাকুন। কষ্ট হলেও বাইরে যাবেন না। দরকারে গেলেও নিয়ম মেনে যাবেন। প্রাণঘাতী মহামারী ও মানুষের জীবনাশঙ্কার সময় জুমা ও জামাতে না গেলেও চলে। বরং এমন ভীতিকর অবস্থায় না যাওয়াই উত্তম। ঘরে নামাজ পড়ে অন্যান্য ইবাদত বন্দেগীতে মগ্ন থাকুন। অতি জরুরী কাজে কোথাও গেলে সুরক্ষানীতি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে যাবেন। আপনার দ্বারা অন্য হাজারো মানুষ বা অন্য কারো দ্বারা আপনি আক্রান্ত না হন। দুনিয়াজুড়ে গভীর জ্ঞানী ও সচেতন আলেমসমাজ যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা মেনে চলুন। রাষ্ট্র সরকার ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের পরামর্শ মানাও এমন ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরী। বাঁচার উপায় খোঁজার পাশাপাশি ঈমান ও তওবার সাথে মহামারীর সময় শহীদি মৃত্যুর জন্যও তৈরি থাকুন। হায়াত শেষ হয়ে গিয়ে থাকলে আল্লাহ যেন সম্মানের সাথে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নিয়ে যান। ভালো মনে করলে নেক হায়াত দান করেন এবং নিয়তের কারণে শাহাদতবরণের সওয়াব দিয়ে দেন।
হে আল্লাহ, আপনার প্রিয়নবী ও সকল নবী-রাসূলের ওপর অগণিত সলাত ও সালাম। আপনি আপনার কুদরতি হাতে বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করুন। আমাদেরকে কল্পনাতীত ভাবে রেহাই দিয়ে দিন। আমাদের সবাইকে সঠিক পথের দিশা দান করুন এবং সব আশঙ্কা ভুল বানিয়ে দিন। আমাদের সব ধারণা ও হিসাব বেঠিক সাব্যস্ত করুন। আপনি আমাদের নাফরমানী আর গুনাহের দিকে না তাকিয়ে আপনার রহমতের দিকে তাকান, ইয়া আরহামার রাহিমীন!
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।
প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন।
[email protected]

ইসলামিক প্রশ্নোত্তর বিভাগে প্রশ্ন পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রশ্ন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ