Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

করোনার প্রভাবে পোল্ট্রি শিল্পে ধস

সম্ভাব্য ক্ষতি ১১৫০ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২০, ৬:১৯ পিএম

কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রভাবে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পে গত ২০ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১৬ দিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রিয় সংগঠন ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সংগঠনটির পক্ষ বলা হয়, বাজারে পোল্ট্রি পণ্যের দরপতন এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারার কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারন খামারি থেকে শুরু করে শিল্প উদ্যোক্তারা। প্রতিদিনই এ পরিমান বাড়ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত দেশের একমাত্র পিআরটিসি ল্যাবটি বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে ছাড় করানো যাচ্ছেনা পোল্ট্রি শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল। এ অবস্থা চলতে থাকলে থমকে যেতে পারে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প।

বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, করোনা সতর্কতায় জনসমাগম ঠেকাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে পাইকারি বাজার থেকে শুরু করে খুচরা বাজার-হাটে ক্রেতা সাধারনের উপস্থিতি ব্যাপকমাত্রায় কমেছে। চাল-ডালের মত পণ্যের দর ক্ষেত্র বিশেষে বাড়লেও ব্যাপকহারে কমেছে ব্রয়লার মুরগি, একদিন বয়সী বাচ্চা ও ডিমের দাম। পোল্ট্রি ও ফিস ফিডের উৎপাদন প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার দাম মাত্র ১ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে উৎপাদন খরচ প্রায় ৩৫ টাকা। এছাড়া পোল্ট্রি প্রসেসড প্রোডাক্টস এর বিক্রি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। কাজেই দেখা যাচ্ছে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পে ইতোমধ্যেই ভয়াবহ ধস নেমেছে। মসিউর বলেন, আমাদের প্রাথমিক হিসাব মতে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ছাড়াবে। যদি আরও এক সপ্তাহ এ অবস্থা চলতে থাকে তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা ছাড়াবে। এরপরও যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান দাঁড়াবে দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তাছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও মার্কেট স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে আরও অন্তত: এক মাস।

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) সভাপতি রকিবুর রহমান টুটুল বলেন- ব্রিডার্স ও হ্যাচারি ইন্ডাষ্ট্রিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অন্তত: ৪৫৮ কোটি টাকা। ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব) সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান জানান এ শিল্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৭৫ কোটি টাকারও অধিক। এছাড়াও বিপিআইসিসি’র হিসাব মতে বাণিজ্যিক পোল্ট্রিতে (ডিম, মুরগি গোশত ) ৫০৩ কোটি টাকা, প্রসেসড ইন্ডাষ্ট্রিতে ৩১ কোটি টাকা এবং প্রাণি ওষুধ খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান দাঁড়াবে অন্তত : ৮৩ কোটি টাকা।

পোল্ট্রি শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে বিপিআইসিসি’র পক্ষ থেকে সরকারের কাছে পোল্ট্রি শিল্পের প্রতিটি শাখার প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংকের সুদ আগামী ৬ মাসের জন্য মওকুফ, বন্দরে আটকে পড়া কাঁচামালের ক্ষতি পুরোপুরি মওকুফ, সাধারন মানুষের জন্য সরকার ঘোষিত খাদ্য সহায়তার অংশ হিসেবে ডিম ও মুরগির গোশত বিতরণ, পোল্ট্রি’র সবগুলো খাতের জন্য ৩০ শতাংশ আর্থিক প্রণোদনা এবং করোনা বিষয়ক সচেতনতার অংশ হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমে ডিম, দুধ, মাছ, গোশতের ইতিবাচক প্রচারণা চালানো। কারণ এ ধরনের পুষ্টিকর ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধেও কার্যকর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ