Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনার প্রভাব কমেছে ঢাকার বায়ুদূষণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাস আতঙ্কে দিন কাটছে রাজধানীসহ সারা দেশবাসীর। তবে করোনার প্রভাবে এবার ঢাকার বাতাসের দূষণ অনেক কমে গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজ্যুয়াল’-এর বায়ুমান সূচকে (একিউআই) ঢাকার বায়ুমান মাত্র ১৫৭। এতে বিশ্বের বায়ুমান ইনডেক্সে ৩ নম্বরে নেমে এসেছে ঢাকা। বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ইসরায়েলের তেল আভিভ-ইয়াফো এবং থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই যথাক্রমে ৩৪১ ও ১৯৯ স্কোর নিয়ে প্রথম ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
গত ছয় মাস ধরেই দিনের বেশিরভাগ সময় প্রথম স্থান দখল করে ছিল ঢাকা। সূচক ৩৯১ পর্যন্ত উঠেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩০০-এর উপরে গেলে তাকে দুর্যোগ অবস্থা বলে। গত জানুয়ারি এবং ফেব্রæয়ারি মাসে ঢাকার বায়ুমান গড়ে ২৫০-২৭০এর মধ্যে ছিল। এ অবস্থায় গতকাল ঢাকার বাতাসের মান ছিল ১৫৭। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে ঢাকার বাতাসের মান উন্নত হতে শুরু করে। শনিবার বায়ুমান ছিল ১৭৮ রবিবার সেই সূচক নেমে হয়েছে মাত্র ১৭৫, সোমবার ও মঙ্গলবার এ মান ১৬০-এর মধ্যে ছিল।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার সব প্রতিষ্ঠান, শপিংমল বন্ধ ঘোষণা করেছে। বন্ধ হয়েছে কল-কারখানা, যান চলাচল। একই সাথে কনস্ট্রাকশন কাজ কম হওয়ার কারণেই বাতাসের দূষণ অনেক কমে গেছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে মানুষের চলাচল কমাতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এতে করে মানুষ এখন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সুপার মাকেট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতের কাজও অনেকাংশে সীমিত করা হয়েছে। আদালতের কার্যক্রমও সীমিত করায় মানুষের যাতায়াত কমছে। সব কিছু ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক মানুষ ইতোমধ্যে ঢাকা ছেড়ে গেছেন। ফলে ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। পরিবহনের ধোঁয়া নেই বললেই চলে। আর এতে বাতাসে দূষণের মাত্রা অনেক কমেছে।

বায়ুদূষণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম। তিনি জানান, এখনও আমরা স্বাস্থ্যকর অবস্থায় আসিনি। মানুষ এত কমে যাওয়ার কারণে অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। কিন্তু আমাদের দেশের বাতাস স্বাস্থ্যকর হতে হলে সূচক হতে হবে ৫০-এর নিচে। তিনি বলেন, ছয় মাসে বহুবার আমাদের সূচক ৪০০ পর্যন্ত উঠেছে। যা ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। সে হিসাবে এখন আমরা অত্যন্ত ভালো অবস্থানে আছি।

বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, কন্সট্রাকশন কাজ, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, ইটের ভাটা এবং আবর্জনা পোড়ানোর ফলে মূলত বায়ুদূষণ হয়ে থাকে। এছাড়া যানবাহনের কারণেও দূষণ বাড়ে। করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে এসব অ্যাক্টিভিটি কমে যাওয়ায় আগের তুলনায় সবই কমে গেছে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহেও আমরা এক নম্বরে ছিলাম। মূলত গত শনি থেকেই বাতাসের দূষণ কমতে শুরু করে। গতকাল আমাদের সূচকের মাত্রা ছিল ১৭৮, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। আজ এখন যে মাত্রা আছে সেটিকে আমরা বলতে পারি শুধু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন, এর অর্থ দাঁড়ায়, এখন যা যা বন্ধ আছে সেগুলো বন্ধ রাখা গেলেই ঢাকার বাতাস ভালো রাখা সম্ভব। এখন কিন্তু ইটভাটাগুলো চালু আছে। কিন্তু তারপরও আজ আমাদের অবস্থান ভালো। আজ সবচেয়ে বেশি দূষণ হচ্ছে চীনের শহরগুলোতে। করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে তারা কাজে নামায় দূষণ বেড়ে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ