পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেবেন। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেনাবাহিনী নামানো, সাধারণ ছুটি ঘোষণা, নিম্ন আয়ের মানুষকে নানাভাবে সহায়তা, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের ব্যাপারে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূূর্ণ বিষয় তাঁর ভাষণে থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় যেসব দিক নির্দেশনা থাকা দরকার, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সেই করণীয় সম্পর্কে জাতিকে জানাবেন। মুখ্যসচিব বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর ১০ নির্দেশে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা ছুটি ভোগ করতে বলেছি করোনা প্রতিরোধ করার জন্য। আমরা এই ছুটি উৎসব করার জন্য দিইনি।
ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনকে সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর নিদেশে সেনাবাহিনী কাজ শরু করেছে। বেসরকারি অফিসও বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে হাসপাতাল, জরুরি সেবা, কাঁচাবাজার ও ওষুধের দোকান। এছাড়া গণপরিবহন চলাচল সীমিত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যা যা করার সবই করছে সরকার। প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে সংশ্লিষ্ট জেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিপূর্বে স্কুল-কলেজ-মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণার পর দেখা গেছে অনেক পরিবার ছেলেমেয়েদের নিয়ে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গেছেন। সাধারণ ছুটি মানে সরাসরি আইসোলেশন না হলেও নিজেকে পৃথক রেখে অন্যকে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা। এ সময়ে যদি কোনো অফিস-আদালতে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে হয় তাহলে তাদের অনলাইনে সম্পাদন করতে হবে। সরকারি অফিস সময়ের মধ্যে যারা প্রয়োজন মনে করবে তারাই শুধু অফিস খোলা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ ও কি রূপরেখা দেবেন সে সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল ইনকিবলাবকে ধারণা দিয়েছেন। তিনি জানান, জেলা প্রশাসকরা মুক্ত বাজার বিক্রয় (ওএমএস) এর মাধ্যমে ছাড়ের মূল্যে চাল বিক্রি করার তদারকি করবেন এবং সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে। মুস্তফা কামাল বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে এই বিষয়গুলিতে কাজ শুরু করেছে।
দিনমজুর, রিকশা চালক ও রাস্তার বিক্রেতারাসহ নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর মুখোমুখি অর্থনৈতিক সংকট দূর করার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে, সরকার সারা দেশে ওএমএসের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৫০ টাকায় চাল বিক্রির পরিকল্পনা করছে, ৩০ টাকা থেকে কমিয়ে বর্তমানে এক কেজি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, ৩ মার্চ পর্যন্ত সরকারের স্টোরেজ সুবিধায় ১ ১৭.৫১ লক্ষ টন চাল ও গম রয়েছে। পরিমাণের মধ্যে, ধানের পরিমাণ ১৪.২৯ লক্ষ টন এবং গম ৩.২২ লক্ষ টন।
গণপরিবহন চলাচল সীমিততের মধ্যে যারা জরুরি প্রয়োজনে গণপরিবহন ব্যবহার করবে তাদের অবশ্যই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গাড়ি চালক ও সহকারীদের গøাভস এবং মাস্ক পরাসহ পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
গতকাল থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দ‚রত্ব নিশ্চিতকরণ ও সতর্কতাম‚লক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে সেনা বাহিনী জেলা প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত হয়েছেন। দেশের ৬৪ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাদের স্বস্ব জেলার প্রয়োজন অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর জেলা কমান্ডারকে রিকুইজিশন দেবে।
করোনাভাইরাসের কারণে নিম্নের কোনো ব্যক্তি যদি স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয় তাহলে সরকারের যে ঘরে ফেরার কর্মসূচি রয়েছে, সে কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজ নিজ গ্রামে ফিরে গিয়ে আয় বৃদ্ধির সুযোগ পাবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন। ভাসানচরে এক লাখ লোকের আবাসন ও জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এ সময় যদি দরিদ্র কোন ব্যক্তি ভাসানচরে যেতে চান তাহলে তারা যেতে পারবেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএমএ এর নেতৃত্বে ডাক্তারদের নিয়ে ৫শ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। তিনি বৈশ্বিক এ সংকট মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং দলীয়ভাবে আমাদের পার্টিকে নির্দেশ দিয়েছেন। সচেতনতা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পালন পারে ভয়াবহ সংকট থেকে মুক্তি দিতে। এই ক্রান্তিলগ্নে সবাইকে সতর্কতা, দায়িত্বশীলতা মানবিকতা ও দেশপ্রের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। এটাকে যুদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করে এই যুদ্ধ মোকাবিলায় যার যার দায়িত্ব পালন করতে হবে। নিজের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষা করে অপরকে বাঁচাতে হবে। এই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার জন্য সবাইকে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।