Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গবেষণার মাধ্যমে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের আহবান প্রধানমন্ত্রীর

দুই মুক্তিযোদ্ধাকে মোটরাইজড হুইলচেয়ার প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০২০, ১২:৩৯ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারে প্রতিটি খাতে বিশেষ করে সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে আরো গবেষণা চালানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমি গড়ে তুলেছি। যাতে করে আমাদের যতটুকুই সম্পদ রয়েছে সেটাকে যেন যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারি। কারণ গবেষণা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়।
গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এনএসটি) ফেলোশিপ এবং বিজ্ঞানী ও গবেষকদের জন্য গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এই ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সর্বক্ষেত্রেই গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তারওপর আমরা একশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি, বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছি, আর বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সংগে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে।

দেশের মানুষও যেন বিশ্বের সংগে তাল মিলিয়ে চলতে পারে সেজন্য বিজ্ঞান মনস্কভাবেই তাদেরকে আমরা গড়তে চাই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর গবেষণার জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনকে অনেক বেশি সহজ করে তোলে এবং প্রতিটি সময় ও মুহূর্তকে কাজে লাগানো যায়। সরকার মোবাইল ফোনকে বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেয়াতেই এটি এখন মানুষের হাতে হাতে চলে এসেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ বছর প্রায় ৩ হাজার ৮শ’র অধিক শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্টের আওতায় বঙ্গবন্ধু ও এনএসটি ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়। এরমধ্যে নির্বাচিত কয়েকজনের হাতে অনুষ্ঠানে চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা.আফম রুহুল হক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো.আনোয়ার হোসেন স্বাগত বক্তৃতা করেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্টের বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে এমএস, পিএইচডি এবং পিএইচডি-উত্তর অধ্যয়ন/গবেষণার জন্য ৬৪ জনকে, ৩ হাজার ২০০ জনকে এনএসটি ফেলোশিপ এবং ৫৬১ প্রকল্পের জন্য ৫৬১ জনকে গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিজ্ঞান গবেষণায় এ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শুধু গবেষণা করলেই চলবেনা, এই গবেষণার ফলাফলটা কি, সেটাও জানতে চাই। আর সেটা যে দেশের কাজে লাগছে সেটাও আমরা নিশ্চিত হতে চাই।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছেও বিষয়টি জানতে চেয়েছেন-‘গবেষণার জন্য যে অর্থ ব্যয় করছি তার রেজাল্টটা কি, আমরা দেখতে চাই।

তিনি বলেন, কেবল গবেষণা করাটাই যথেষ্ট নয়। গবেষণালব্ধ ফলাফল দিয়ে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে পারলেই সে গবেষণা সার্থক হবে। শেখ হাসিনা বলেন, যাদেরকে স্কলারশিপ দিচ্ছি এবং যারা গবেষণা করছেন তাদের একটা ডাটাবেজ হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, কার কি গবেষণালব্দ জ্ঞান আছে, সেটাকে আমার দেশের উন্নয়নে কোথায় কিভাবে কাজে লাগাতে পারি এবং সেই সুযোগ তাদের জন্য সৃষ্টি করে দেওয়া দরকার। তাহলে যেধরনের কাজে পারদর্শীতা অর্জন করছেন তাদের সেই ধরণের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারবো।

আইয়ুব সরকারের সময় করে যাওয়া (পাকিস্তানের মার্শাল ল’ সরকার) স্কুলের নবম শ্রেনী থেকেই বিজ্ঞান, কলা এবং পরবর্তীতে বাণিজ্য শাখায় বিভাজনের বিষয়টি স্কুলে না রাখার বিষয়ে তার নিজস্ব অভিমত পূণর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, এটা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত। কারণ, শুরু থেকেই বিজ্ঞান চর্চাটা থাকা দরকার। আমাদের শিক্ষার্থীরা সব বিষয়েই জানবে এবং এসএসসি পাশ করার পর তারা তাদের বিষয়টা ভাগ করে নেবে কোন বিষয়ে সে বিশেষায়িত হবে, জ্ঞান লাভ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশকে আর কেউ অবহেলার চোখে দেখতে পারে না কারণ, কারো কাছে হাত পেতে আমরা চলি না।
তিনি বলেন, আমরা বাজেট ৭ গুণ বৃদ্ধি করেছি, স্বাক্ষরতার হার ৭৩ ভাগে বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা প্রযুক্তি শিক্ষায় এগিয়েছি, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করছি, সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিষয় ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে।

আর যেন বাংলাদেশ থমকে না দাঁড়ায় সে দায়িত্ব দেশের বিজ্ঞানীদের নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুদের যেন আমাদের মতো ভুগতে না হয়। তারা যেন একটা সুন্দর ভবিষ্যত, একটা সুন্দর দেশ পায়। বিশ্বের দরবারে যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারে। বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী দেশ, এই পরিচয়ে যেন বসবাস করতে পারে।

দুই মুক্তিযোদ্ধাকে মোটরাইজড হুইলচেয়ার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় পদকপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত দু’জন মুক্তিযোদ্ধাকে অত্যাধুনিক মোটরাইজড হুইলচেয়ার উপহার হিসেবে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী দুই মুক্তিযোদ্ধাকে এই উপহার দেন। উপহার হিসেবে অত্যাধুনিক মোটরাইজড হুইলচেয়ার পাওয়া দু’জন হলেন কালীপদ দাস (৮ নম্বর সেক্টর) এবং লিবিও কির্তনীয়া (৯ নম্বর সেক্টর)।



 

Show all comments
  • Md Khurshed Alam ৬ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
    তুমি বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
    Total Reply(0) Reply
  • Samsul Dewan Tangail ৬ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
    প্রিয় নেত্রীর জন্য দোয়া ও শুভ কামনা রইল
    Total Reply(0) Reply
  • Masum Atiqur ৬ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়নের সরকার। জয় বাংলা
    Total Reply(0) Reply
  • মরিয়ম বিবি ৬ মার্চ, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
    গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি অনুরোধ রইলো।
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ খান ৬ মার্চ, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • জোবায়ের আহমেদ ৬ মার্চ, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
    ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। গবেষণার মাধ্যমে দেশের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সম্ভব।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ