Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

১৯৭১ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ডাকা ছাত্র জনসভায় আকস্মিকভাবে উপস্থিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সভায় বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেদিনই সভা থেকে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের চার নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহণ করেন।

১৯৭১ এর ৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ঢাকায় পার্লামেন্টারি পার্টিগুলোর নেতাদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।

বিকেলে ছাত্রলীগ সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল ছাত্র জনসভা। এ সভায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ বঙ্গবন্ধুর সামনে পাঠ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার। আর এ ইশতেহারে বলা হয়- ‘৫৪ হাজার ৫০৬ বর্গ মাইল বিস্তৃত ভৌগোলিক এলাকার সাত কোটি মানুষের জন্য আবাসভূমি হিসেবে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ।

এই দেশ গঠন করে তিনটি লক্ষ্য অর্জন করতে হবে: ১. স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে পৃথিবীর বুকে একটি বলিষ্ঠ বাঙালি জাতি সৃষ্টি ও বাঙালির ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি বিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। ২. স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে অঞ্চলে অঞ্চলে, ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বৈষম্য নিরসনকল্পে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করে কৃষক শ্রমিক রাজনীতি কায়েম করতে হবে। ৩. স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে ব্যক্তি, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ নির্ভেজাল গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে।

এছাড়া বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলন পরিচালনার জন্য গ্রহণ করতে হবে পাঁচটি কর্মপন্থা: ১. বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম, মহল্লা, থানা, মহকুমা, শহর, জেলায় দস্বাধীনতা সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করতে হবে। ২. সকল শ্রেণীর জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা ও তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ৩. শ্রমিক এলাকায় শ্রমিক ও গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের সুসংগঠিত করে গ্রামে গ্রামে, এলাকায় এলাকায় দমুক্তিবাহিনীদ গঠন করতে হবে। ৪. হিন্দু-মুসলমান ও বাঙালি-অবাঙালি সাম্প্রদায়িক মনোভাব পরিহার এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। ৫. স্বাধীনতা সংগ্রামকে সুশৃঙ্খলতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা এবং লুটতরাজসহ সকল প্রকার সমাজবিরোধী ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে।

৩ মার্চের ওই জনসভাতেই ঘোষণা আসে ৭ মার্চে রেসকোর্সের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সেই ঐতিহাসিক জনসভার। যেখান থেকে বাঙালি জাতির মহান পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তবে অবস্থা আয়ত্বে আনার জন্য ওইদিনই পাকিস্তান সরকার জারি করে সান্ধ্য আইন। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই অব্যাহত থাকে জনতার বিক্ষোভ ও মিছিল।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাধীনতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ