পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাজুবাদামের চাষ করে বড় অংকের রপ্তানী আয় করতে চায় সরকার। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বৈঠক করেছেন অর্থ, পরিকল্পনা ও কৃষিমন্ত্রীসহ দুই জন সংসদ সদস্য। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন একজন সচিবও। বৈঠকে বলা হয়- সরকারের পক্ষ থেকে তৈরী পোশাক খাতের মতো সহায়তা দেয়া হলে কাজুবাদাম রফতানী করেই বছরে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমানের অর্থ রফতানী আয় করা সম্ভব। বর্তমানে পাবর্ত্য অঞ্চলে সীমিত আকারে কাজুবাদাম দাষ হচ্ছে। কৃৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা করতে পারলে ২০২৪ সাল নাগাদ রপ্তানী আয়ের এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরে বাংলানগরের পরিকল্পনা মন্ত্রীর দপ্তরে এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তিন মন্ত্রী ও দু’জন সংসদ সদস্য। বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিল আহমেদ তানভীর। তিনি বলেন, বিশ^ব্যাপি কাজুবাদামে ৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার রয়েছে। এই বাজার ২০২৪ সাল নাগাদ ১৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত হবে। শুধু মাত্র আমেরিকাতেই এই বাজার ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত হবে।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজার আরও বড়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুব সহজেই নিজেদের পার্বত্য অঞ্চলের পতিত জমি চাষ করে এই বাজরে হিস্যা হতে পারে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন উন্নয়নশীল দেশ থেকে বেশী কাজুবাদাম আমদানী করে থাকে। বর্তমারে বিশ^ব্যাপি ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন কাজুবাদাম উৎপাদন হয়। এর মধ্যে আফ্রিকাতে চাষ হয় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন টন, পার্শবর্তীদেশ ভারত করে ৭ লাখ ৪৬ হাজার টন, ভিয়েতনাম ৪ লাখ টন উৎপাদন করে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ উৎপাদন করে মাত্র ১ হাজার টন। যদিও বাংলাদেশে ৫ লাখ হেক্টর কাজুবাদাম চাষ উপযোগী জমি রয়েছে। ২ লাখ হেক্টর জমিতে এখনই কাজুবাদামের চাষাবাদ শুরু করা যায়। এটি করতে পারলে বাংলাদেশের উৎপাদনের পরিমান দাড়াবে ৫ লাখ টনে। এক্ষেত্রে কিছু নীতি সহায়তা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সরকার কৃষি খাতকে এগিয়ে নিতে বদ্ধ পরিকর। এক্ষেত্রে কাজুবাদাম অবশ্যই একটি সম্ভবনাময় কৃষি পন্য। তাই কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকলে তার সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, আমি আমার ব্যবসার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যে কোন ব্যবসার জন্য দেশী ও বিদেশী দু-বাজারেই চাহিদা সৃষ্টি করতে হয়। এখন রপ্তানী আয় বাড়াতে হলে একই সঙ্গে চাষাবাদ বাড়ানো ও বাজারজাত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিদেশী বিনিয়োগকারী আনতে হবে। বিদেশী বিনিয়োগকারী না আনতে পারলে বৈশি^ক বাজার ধরা কঠিন। এক্ষেত্রে দেশী বিদেশী যৌথ বিনিয়োগের উপর গুরত্বারোপ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কৃষিতে সহায়তা করার জন্য বাজেটে থোক বরাদ্দ রয়েছে। এজন্য এক্ষেত্রে ভাল বিনিয়োগকারী পেলে টাকার কোন সমস্যা হবে না।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, নিয়ম অনুসারে ১০০টি গবেষনা করলে ২ একটা সফল হয়। কিন্তু গবেষনা বন্ধ করলে চলে না। কাজুবাদামের যে সম্ভবনার কথা বলা হচ্ছে, সেটির সফলতা পেতে মাঠ পর্যায়ে উৎপাদনে যেতে হবে। এক্সপেরিমেন্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের নীতিগত সহায়তা সব সময় দিতে প্রস্তুত রয়েছে। কৃষি মন্ত্রনালয় থেকে এ সংক্রান্ত কোন প্রকল্প পাঠানো হলেও তা বিবেচনা করা হবে।
সভা শেষে কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা ধান, মাছ, আলু চাষে সফলতা দেখিয়েছি। নিজেদের চাহিদা মিটে এখন উদ্বৃত্ত থাকে। সরকার এখন কৃষি ব্যবস্থাকে বহুমূখীকরণ করতে চায়। এজন্য উচ্চ মূল্যের ফসল আবাদের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। উচ্চমূল্যের ফসলের মধ্যে কাজুবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং মজাদার খাদ্য। এটি উৎকৃষ্ট শিশুখাদ্যও বটে, যার চাহিদা সারা বিশ্বে দিনে দিনে বাড়ছে। আমরা বিদেশ থেকে ৬ হাজার উন্নত কাজুবাদামের চারা এনেছি, সঙ্গে বীজও এসেছে। এগুলো চাষাবাদে ৭ জন কৃষককে বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা কৃষি যান্ত্রকীকরণে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিতে যাচ্ছি। তখন বলা যাবে কত ক্ষেত্রে সরকার কৃষকদের সহযোগিতা দেয়। এছাড়া অন্যন্য কর্মকান্ড সম্পাদনে অর্থমন্ত্রনালয় থেকে আলাদা থোক বরাদ্দও দেয়া হয়েছে। আমরা এই ১০০ কোটি খরচ করতে পারলে বরাদ্দ ৪০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হবে বলে অর্থমন্ত্রনালয় থেকে জানানো হয়েছে।
বৈঠকে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্লাহ বলেন, দেশে এটি চাষ হয়, এটি বিরাট ব্যাপার। বিদেশে এর ব্যপাক চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ থাকলে অবশ্যই কাজে লাগানো উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।