পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নজরাদারিতে এবার গতি পাচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। একই সাথে সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। তাতে পাল্টে যাবে রাজধানীর চিত্র। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করি সে উন্নয়ন কাজগুলো একটি আরেকটির পরিপ‚রক হওয়া উচিত। সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনার উপর আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের সোনারগাঁ-বুয়েট লিংক এর হাতিরঝিল অংশের পুনঃঅ্যালাইনমেন্টের উপস্থাপনা দেখার সময় এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের আওতায় সোনারগাঁও-বুয়েট লিংকের নতুন অ্যালাইনমেন্টে (প্রান্তিককরণে) সম্মতি দেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের (কুতুবখালী) পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার মূল এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ৮ লেন মহাসড়কের কুতুবখালী পয়েন্ট পর্যন্ত ম‚ল এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। লিংক ও র্যাম্পসহ এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়ের নতুন অ্যালাইনমেন্ট অনুসারে, সোনারগাঁও-বুয়েট লিংকের হাতিরঝিল অংশটি হাতিরঝিলের দক্ষিণ সীমানায় অবস্থিত বিআইএম ভবনের নিকটবর্তী এক্সপ্রেসওয়েতে সংযুক্ত হবে। সোনারগাঁ-বুয়েট লিংকটি পান্থকুঞ্জ ও কাঁটাবন হয়ে পলাশীতে গিয়ে শেষ হবে।
পুরনো অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী লিংকটি হাতিরঝিল লেকের মাঝামাঝি এবং পান্থকুঞ্জ হয়ে ম‚ল এক্সপ্রেসওয়েতে সংযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। এই সংযোগের কারণে পুরান ঢাকা ও ধানমন্ডির বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। এই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ শতাংশ যানবাহন প্রবেশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সভায় প্রকল্পের সার্বিক দিক তুলে ধরেন প্রকল্প বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য বুয়েটের শিক্ষক প্রফেসর শামছুল হক।
সূত্র জানায়, সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ও বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত বিআরটি স্থগিতের কারণ জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি দুটি প্রকল্পের সমন্বয়হীনতার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উন্নয়ন কাজগুলো একটি আরেকটির পরিপ‚রক হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনার উপর গুরুত্বারোপ করে এখন থেকে নিজে এগুলো নজরদারি করবেন বলে জানান।
জানা গেছে, প্রকল্পটি তিনটি ধাপে বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রথম ধাপ, হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপ, বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার ক্রসিং এবং তৃতীয় ধাপ, মগবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। সভায় জানানো হয়, প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ১৮ শতাংশ। প্রথম ধাপের অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ।
রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়ক) নির্মাণ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে এয়ারপোর্ট রোডের কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত হবে এক্সপ্রেসওয়েটি।
গত বছরের জুন মাসে প্রথম ধাপে এক্সপ্রেসওয়েটি বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে বনানী পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার অংশ খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বাড়তি টোলের বোঝার কারণে এ অংশ চালু করা যায়নি। সে সময় ২০২২ সালের মার্চ মাসে একযোগে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়েটি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেতু বিভাগ।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় নির্মিত হচ্ছে। এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে কার-মাইক্রোবাসে সর্বনিম্ন ১০০, বড় বাসে ২০০ ও ট্রাকে ৩০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে বনানী পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার অংশে এ টোল পরিশোধ করতে হবে। এ স্বল্প দূরত্বে এত বেশি টোল অনেকেই পরিশোধ করবে না বিধায় এ অংশটুকু চালু করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে পুরো ২৬ কিলোমিটার রুটের জন্য মাইক্রোবাসে সর্বনিম্ন ১২৫, বড় বাসে ২৫০ ও বড় ট্রাকে ৫০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৬ কিলোমিটার রুটের জন্য টোল নির্ধারণ ঠিক আছে। কর্তপক্ষের দাবি দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার অংশের জন্য টোলের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় বলেই প্রথম ধাপে চালু যায়নি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। যদিও কাজের গতি সে দাবিকে সমর্থন করে না। সূত্র জানায়, গত বছরের শুরুর দিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে গতি ফিরে পেলেও বছরের শেষের দিকে আবার এর নির্মাণ কাজে ভাটা পড়ে। চলতি বছরের জানুয়ারির আগেই বেশ কয়েকজন চীনা কর্মী ছুটি নিয়ে দেশে যায়। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এখনও ফিরেনি। সে কারণেও কাজের গতি মন্থর হয়েছে বলে প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়।
এর আগে প্রকল্পের পরিচালক এ এইচ এমএস আকতার বলেছিলেন, আমরা আশা করছি ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হয়ে যাবে। ইতোমধেই প্রকল্পের কাজ সার্বিকভাবে ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হয় কেউ এই স্বল্প দূরুত্বপথে মাইক্রোবাসে ১০০ টাকা টোল দিতে চাইবে না। তাই মনে করি, একসঙ্গে উন্মুক্ত করাই ভালো। তারপরও পিপিপি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে প্রকল্পটি। সুতরাং সংশ্লিষ্টরাই ভালো বুঝবেন।
এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার ও শেষ ধাপে মগবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকার উত্তর-দক্ষিণে বিকল্প সড়ক সৃষ্টি হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি হেমায়েতপুর-কদমতলি-নিমতলী-সিরাজদিখান-মদনগঞ্জ-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-মদনপুরে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।
চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চল এবং পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ না করে সরাসরি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করবে। উত্তরাঞ্চল থেকে আসা যানবাহনগুলো ঢাকাকে বাইপাস করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে। এর ফলে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অংশে যানজট দূর হবে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে ২০ মিনিট।
জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে ২৫ বছর পর্যন্ত টোল আদায় করবে ইতাল-থাই। এরই মধ্যে এ প্রকল্পে ইতাল-থাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চীনের সিনো হাইড্রো করপোরেশন। বাস্তবায়নের পর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন চলাচল করতে পারবে। পুরো এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১১টি টোল প্লাজা, এর মধ্যে পাঁচটি হবে এক্সপ্রেসওয়ের ওপরে।
এ প্রসঙ্গে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ঢাকার যানজট নিরসনে ঢাকা এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পিলারের ওপর দিয়ে বসানো হয়েছে আই গার্ডার। কোনো কোনো অংশে আই গার্ডারের উপর স্ল্যাবও বসানো হয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও পিলারের নিচে এনে রাখা হয়েছে স্ল্যাব। সেগুলোকে ক্রমান্বয়ে উপরে বসানো হবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পের আওতায় মোট ১৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, পুনর্বাসন বাবদ ৯৯৫ কোটি টাকা এবং ইউটিলিটি রিলোকেশন বাবদ ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। বসত বাড়িসহ কিছু স্থাপনা রয়েছে। প্রকল্পের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং কাজ জমি অধিগ্রহণ ও বসতবাড়ি সরানো।
২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল এ প্রকল্পটি। পরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন খাতে তৃতীয়বারের মতো ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল।
সব খাত মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে মূল প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৬ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং ২ হাজার ২৫৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ড (ভিজিএফ) হিসেবে বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। তৃতীয় ধাপে মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণে সরকার ২ হাজার ৭৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকা সংস্থান করতে পেরেছে। বাকি ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি ১০ লাখ টাকা সরকারি- বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) খাতের।
জানা গেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি অংশ হাতিরঝিল প্রকল্পের উপর দিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তাতে হাতিরঝিলের সৌন্দর্য ও পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ছিল বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির নকশা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় হাতিরঝিল অংশ বাদ দিয়ে নতুন করে এর নকশা করা হয়েছে। যেটি গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সামনে প্রদর্শন করা হয়। এসময় হাতিরঝিলসহ অন্য জলাশয়গুলো রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। অতীতে বিভিন্ন সময় রাজধানীর জলাশয়গুলো ধ্বংস হওযার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মতিঝিলে বড় একটি ঝিল (জলাশয়) ছিল, কিন্তু পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খান তা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। পান্থপথে বক্স কালভার্টের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, বক্স কালভার্টকে ধ্বংস করে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হতো। প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং সদস্য অধ্যাপক মো. শামসুল হক ও স্থপতি ইকবাল হাবিব যৌথভাবে উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রকল্প পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আকতার প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে জয়িতা টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য ভবনের সংশোধিত স্থাপত্য নকশা দেখেন শেখ হাসিনা। নকশা দেখার সময় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। জয়িতা ফাউন্ডেশন পরিচর্যায় দেশের নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে বিকাশ সাধনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধাসহ ১২-তলাবিশিষ্ট এই টাওয়ার নির্মাণে সরকারের ব্যয় হবে ১৪৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। নকশা উপস্থাপন করেন জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান।
১৫৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য প্রকল্পটি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় জয়িতা ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত অধিদফতর বাস্তবায়ন করবে। বরাদ্দের পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটি ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এ প্রকল্পের আওতায় টাওয়ার ভবন ছাড়াও প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, সাইট অফিস, ড্রেন, সীমানা দেয়াল, সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।এর আগে জাতীয় জয়িতা টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ২০১১ সালে ‘নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রয়াস’ নামে সরকারের অর্থায়নে ৩ বছর মেয়াদি একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনের জন্য জয়িতা নামে একটি বিপণন কেন্দ্র চালু করা হয়। পরবর্তী সময়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় একটি স্থায়ী ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন’ গড়ে তোলা হয়। এটি বাংলাদেশ সরকারের নৈতিক ও আর্থিক সহায়তাপুষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নারীদের বিভিন্নমুখী ব্যবসা উদ্যোগে সস্পৃক্ততার জন্য উৎসাহ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে কাজ করে। আত্মপ্রত্যয়ী ও অদম্য নারীরা জয়িতা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ব্যবসার মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান করতে পারে।
এসময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতন নেতা ইন্দিরা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আখতার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রেস সেক্রেটারি এহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।