পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মসজিদের নগরী ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এক সময় মসজিদের নগরী হিসেবে সারাবিশ্বে ঢাকার পরিচিতি ছিল। সেই ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করা হবে। নদী তীরের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের অনুভ‚তির সাথে যুক্ত। নদী দখলমুক্ত করার সময় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়গুলোর সমন্বয়ের লক্ষ্যে দেশের ইসলামিক চিন্তাবিদ, আলেম-মাশায়েখের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্ছেদ নয়, সেগুলোর সমন্বয় করতে চাই। মসজিদের নগরী হিসাবে ঢাকার ঐতিহ্য রয়েছে। সে ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করতে চাই
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নদীর তীরভ‚মিতে বিদ্যমান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনা পুনঃস্থাপন সংক্রান্ত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নদীর চারপাশ উন্মুক্ত করে পরিকল্পিতভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি। সেগুলো সুন্দর ডিজাইনের হবে। ঢাকাবাসী ও দেশি-বিদেশি অতিথিরা সুদৃশ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দেখে মুগ্ধ হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে মানুষের বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীতীর দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। নদী তীরভূমি দখলমুক্ত, দূষণমুক্ত এবং নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত এক বছর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। এক্ষেত্রে মিডিয়ার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। বৈঠকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ের লক্ষ্যে আরো সার্ভে করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদীর (বৃত্তাকার নৌপথ অংশ) তীরভূমিতে অননুমোদিতভাবে গড়ে উঠা ১১৩টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা ও মাজার ৭৭টি, কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা পাঁচটি, ঈদগাহ একটি, স্কুল ও কলেজ ১৪টি, গোসলের ঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট ১৩টি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তিনটি।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আবদুস সামাদ, ধর্মসচিব মো. নুরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী আশরাফ উদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, অর্থ বিভাগ, রাজউক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রাজধানীর মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) আইন, ২০১৯- এর পরিচিতিমূলক ওয়ার্কশপে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশকে পিছিয়ে দিতে ও দেশের স্বার্থকে হত্যার জন্য পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের বহরে এখন ৮টি জাহাজ আছে, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই সংখ্যা হতো অন্তত ৬০টি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে বিভিন্ন রকমের অর্থনীতি, বিভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা, এত বিভক্তি চালু করে দেশকে অনেক পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। দেশ এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে। মানুষ এখন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকাকে বসবাসের যোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখলমুক্ত করে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই। গত এক বছর ধরে যে উচ্ছেদ অভিযান চলছে, তা মোটামুটি বাধাহীনভাবেই এগিয়ে চলছে।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক বছর আগে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কথাবার্তা বলে মতামত জানানোর জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তিনি বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে সভাটা করে উঠতে পারেননি। আমরা গত ১০ ডিসেম্বর প্রত্যেকটি মসজিদ, মন্দির, শ্মশান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্নধারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসেছি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আলোচনায় আমরা বলেছি, আমরা এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে উচ্ছেদ করতে চাই না, আমরা এটাকে সমন্বয় সাধন করতে চাই। আমরা সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা এই জায়গায় পরিকল্পিতভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে গড়ে তুলতে পারি কিনা। এগুলো অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে।
খালিদ মাহমুদ বলেন, দেশে সরকারি অর্থায়নে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। সেই আলোকেই আমরা আলোচনা করেছি। ঢাকার আশপাশে নদীর তীরে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলো যদি পরিকল্পিতভাবে করতে পারি, এর সংখ্যা অনেক কম। এটা করলে যখন আমরা নদী দিয়ে চলাচল করব এই ধরনের সুদৃশ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দেখব সেটাও আমাদের ভালোলাগার একটা বিষয় হবে। বিদেশি মেহমানরাও যখন নদীতে ভ্রমণ করবেন, দেখবেন বাংলাদেশ সরকার একটি সুন্দর চিন্তা-ভাবনা নিয়ে একই ডিজাইনের এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলেছে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।