পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যানজট নিরসনে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ কাজ চলছে। এটি সম্প্রসারিত হয়ে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী হয়ে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত যাওয়ার কথা। এ পর্যায়ে প্রাথমিকভাবে নির্মাণ করার কথা ছিল বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত অংশটি। কিন্তু এ প্রকল্পটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিমানবন্দর- থেকে মহাখালী হয়ে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটির সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা চূড়ান্ত করা হয় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে। নির্মল বায়ু টেকসই পরিবেশ প্রকল্পের অধীনে এ নকশা করা হয়। তবে এ রুটে থাকা একাধিক ফ্লাইওভারের কারণে তিন ধাপে বিআরটি চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
প্রথম ধাপে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত বিআরটি নির্মাণ করার কথা ছিল। আর সেখান থেকে দুই রুটে ফিডার বাস সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। একটি ফিডার বাস মহাখালী থেকে ফার্মগেট ও অপরটি মহাখালী থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত চলাচল করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। পরবর্তী পর্যায়ে মহাখালী থেকে গুলিস্তান ও শেষ পর্যায়ে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রথম অংশের আওতায় ছিল বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার বিআরটি লেন নির্মাণ। পাশাপাশি মহাখালীতে দুই কিলোমিটার ফ্লাইওভার, যাত্রী ওঠানামায় পাঁচটি বিআরটি স্টেশন, ফুটপাত, পদচারী সেতু, আন্ডারপাস ও কেরানীগঞ্জে বাস ডিপো নির্মাণ করা পরিকল্পনা ছিল। এছাড়া ১৫০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার ৯১টি বাস সংগ্রহ ও স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহ প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করার কথা ছিল প্রথম পর্যায়ে। এর বাইরে মহাখালীতে একটি মাল্টিমোডাল বহুতল বাস টার্মিনাল নির্মাণ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও বিদ্যমান বাসগুলোকে সমন্বিতভাবে একটি বা দুটি কোম্পানিতে রূপান্তর করার কথা ছিল প্রকল্পের আওতায়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক অর্থায়নে আগ্রহ দেখায়। এরই অংশ একটি কারিগরি সহায়তা প্রকল্পও অনুমোদন করা হয়েছে, যা বর্তমানে চলমান। তবে এখন বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত বিআরটি নির্মাণ পরিকল্পনা স্থগিত করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এক্ষেত্রে যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, গাজীপুর-বিমানবন্দর বিআরটি নির্মাণ করতে গিয়ে বিমানবন্দর সড়কে প্রচন্ড যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তাই বিআরটি স¤প্রসারণ করতে গেলে তা রাজধানীতে আরও জটিলতা তৈরি করবে।
এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত বিআরটি স¤প্রসারণ করা হবে না বলে আপাতত মন্ত্রী মহোদয়ের অবস্থান। কারণ গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বিআরটি নির্মাণ করতে গিয়েই বিমানবন্দর সড়কে প্রচুর যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এখন আবার বিমানবন্দর-মহাখালী অংশে যানজট সৃষ্টির কোনো ইচ্ছে নেই।
এদিকে বিমানবন্দর-মহাখালী অংশের বিআরটি বাস্তবায়ন না হলে গাজীপুর-বিমানবন্দর অংশটির উপযোগিতা নষ্ট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিআরটিতে সহজেই যাত্রীরা গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত আসতে পারবে। তবে এরপর রাজধানীর ভেতর ঢোকার কোনো উপায় নেই। তখন তাদের আবার লোকাল বাস ব্যবহার করতে হবে। একইভাবে আবার গুলিস্তান, ফার্মগেট বা মহাখালীর যাত্রীরা বিমানবন্দর পর্যন্ত লোকাল বাসে গিয়ে আবার বিআরটিতে উঠবেন, সেটাও অযৌক্তিক চিন্তা। এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, পরিবহন সেক্টরকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে না পারলে বিআরটি বা অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কোনো লাভ হবে না। তিনি বলেন, মূল সমস্যা হলো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব। যানজট নিরসনে নেয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না যানজটের কারণে-এটা কি ধরণের যুক্তি? তিনি বলেন, বিআরটি না করে বরং গাজীপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত চার লেনের রেললাইন নির্মাণ করলে লাভ হতো। সিটি সার্ভিসের জন্য দুটো রেল লাইন রাখলে ১০ মিনিট পর পর ট্রেন ছাড়লে বিনা বাধায় যাত্রীরা ঢাকায় আসতে পারতো। আবু নাসের খান বলেন, ঢাকায় রুটভিত্তিক পর্যাপ্ত বাস নেই। এ কারণে যাত্রীদের কষ্ট হয়, ভোগান্তি বাড়ে। সে দিকে নজর দিতে হবে। তবে পরিবহন সেক্টরকে মাস্তানী ও চাঁদাবাজি থেকে মুক্ত করতে হবে। তা না হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কোনোদিনও লাঘব হবে না।
উল্লেখ্য, বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ রুটে বিআরটি নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত রুটে দৈনিক সাড়ে ছয় লাখ মানুষ যাতায়াত করে। অনিয়ন্ত্রিত বাস রুটের কারণে এতে যানজট লেগেই থাকে। তাই এ রুটে বিআরটি নির্মাণ করা জরুরি। আর এ প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল চার হাজার ৭৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
২০ কিলোমিটার এ রুটে বাস স্টপেজ হওয়ার কথা ১৬টি। এগুলো হলো-খিলক্ষেত, কুড়িল, ক্যান্টনমেন্ট, কাকলী, আমতলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল স্টেশন, বিজি প্রেস, মগবাজার, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, গুলিস্তান, স্টেডিয়াম, নয়াবাজার, কদমতলী ও কেরানীগঞ্জ। এর মধ্যে আমতলী ও মহাখালী স্টপেজ হবে উড়ালপথে (এলিভেটেড)। বাকিগুলো হবে ভূমির সমতলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।