পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে। এদেশের অগ্রযাত্রা রোধ করা যাবে না। নিজের জীবনের শোক ব্যথা সব কিছু চেপে রেখে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। কাজ করছি শুধু এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানের জন্য। আমরা সেটা করতে পেরেছি। বাংলাদেশের পরিবর্তনে সক্ষম হয়েছি। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার এ অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব ব্যথা সব কষ্ট সহ্য করে একটা জিনিসই শুধু চিন্তা করেছি আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করেছেন যে মানুষের জন্য, সেই সাধারণ মানুষের জীবনটা যেন সুন্দর হয়। সেজন্য নিজের জীবনের সব ব্যথা সবকিছু মুখে চেপে রেখে আমি দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। শুধু একটা কারণে, আমি চাই দেশটা যেন এগিয়ে যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। আমি কারো প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে চলি না বা প্রতিশোধ নিতেও যাইনি। যেখানে অন্যায় হয়েছে, ন্যায় করার চেষ্টা করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটি আজ কারও কাছে লুকায়িত নেই। এক সময় দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল। মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। আমরা অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। এক দশকে আমরা বাংলাদেশের অবস্থার পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এই উন্নয়ন কেউ চোখে না দেখলে সেটা তার সমস্য, সেটা তার ভুল। অনেকে বলছেন দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভাল নয়। ব্যাংকে টাকা নেই। এটা ঠিক নয়। আমাদের রিজার্ভ তহবিল এখনো ৩২ বিলিয়নের উপরে। এ দিয়ে আগামী ছয় মাসের খাদ্য আমরা আনতে পারবো। কাজেই হতাশার কিছু নেই। আমাদের রেমিট্যান্সের অবস্থাও খুবই ভাল। রেমিট্যান্স এখন ১৮ বিলিয়ন।
তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি ভাল না থাকলে আমরা এত উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে পারতাম না। আমরা ৬৬৫টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল জাতীয়করণ করতে পারতাম না। আমরা এখন ১ম থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দিচ্ছি। দশ টাকায় খোলা তাদের মায়ের অ্যাকাউন্টে সে টাকা চলে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে দেশে ধর্ষণের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাও ধর্ষণ শিকার হচ্ছে। যারা ছোট্ট শিশু ধর্ষণ করছে তারা পশুর চাইতেও অধম। এটি অত্যন্ত জঘন্য কাজ। এটা কি জঘন্য-পাশবিক। যারা এমন জঘন্য কাজ করে তাদেরওতো মা আছে, বোন আছে। তাদেরও তো নিজের মেয়ে আছে। এ বিষয়টি তাদের মনে আসে না। আমরা জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করেছি। এই ধর্ষণের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সন্ত্রাস-মাদক আর ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবছরকে আমরা মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছি। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ আমরা মুজিববর্ষ পালন করব। ইতোমধ্যে এর ক্ষণগণনা শুরু হয়ে গেছে। মুজিববর্ষ পালনে দেশব্যাপী সবার মধ্যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। আমরা যথাযথ মর্যাদায় মুজিববর্ষ পালন করবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যখনই বাংলাদেশের মানুষ একটু সুখের মুখ দেখতে শুরু করল তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) নির্মমভাবে হত্যা করল। বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছে তাদের নেতাকে, আমি ও আমার বোন হারিয়েছি বাবাকে। শুধু আমরা না, ১৫ আগস্টে আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, স্বজনহারা অনেকেই রয়েছেন।
তিনি বলেন, শুধু হত্যা করা হয়নি। খুনিদের বিচার পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি। বিচারের হাত থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সামরিক অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল, খুনিদের সবাই তো উৎসাহিত করেছেন। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন করে কর্নেল রশিদকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসায়। জেনারেল এরশাদ খুনি ফারুককে পার্টি করতে দেয়, ফ্রিডম পার্টি করে এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দিয়েছিল। সন্ত্রাস-দুর্নীতিবাজ, মাদকের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। দেশটা যাতে সুন্দরভাবে গড়ে ওঠে তার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে মাঝে মধ্যে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। আমরা সেগুলো মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিই। যেমন- করোনাভাইরাসের বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি, যাতে চীনে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করতে না পারে। ডেঙ্গু নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। মশার ব্যাপারে আমাদের নিজেদের সচেতন থাকতে হবে। নিজেদের বাড়িঘর আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে মশা জন্মাতে না পারে। মশা যদি জন্মাতেই থাকে তাহলে তো ঘরে ঢুকবেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে একটা খেলা শুরু হয়। এর কারণ মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় একসঙ্গে বেশি কেনে। করোনাভাইরাসের কারণে চীন থেকে বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে ওষুধের কাঁচামালসহ অন্যান্য কাঁচামাল আমদানির বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।