পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মুজিববর্ষের নামে যেখানে সেখানে চাঁদাবাজি করে বঙ্গবন্ধুর নামে কেউ দোকান খুলবে, তা সহ্য করবেন না প্রথানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন মুজিববর্ষ সামনে রেখে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি মেনে নেবেন না তিনি।
গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খুলনা বিভাগীয় আওয়ামী লীগের এক যৌথ সভায় তিনি এ কথা বলেন। যৌথ সভায় যোগ দেওয়ার আগে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থিত ছিলেন সরকারের এই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
একনেক সভাকে নির্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিষ্কারভাবে একটা কথা বলতে চাই। কিছুক্ষণ আগে আমাদের লিডারের (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি যখন এই সভায় আসছিলাম, তার সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি একটা কথা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, মুজিববর্ষ একটি শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে উদযাপন করতে হবে। মুজিববর্ষ উদযাপনের নামে কোনো বাড়াবাড়ি সহ্য করা হবে না।
নেত্রী স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, মুজিববর্ষের নামে এখন যে তোড়জোড় দেখছি, চাঁদাবাজির দোকান যেন না হয়। বঙ্গবন্ধুকে তাহলে আরও ছোট করা হবে। বঙ্গবন্ধুর ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে এই সব চাঁদাবাজির দোকান খুলে বঙ্গবন্ধুর মহিমা কীর্তন করে তাকে বড় করা যাবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি নেত্রীর এই নির্দেশনাটিই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। জেলায় জেলায় আপনারা যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জাতীয় কমিটির কর্মসূচি থাকবে, আমদের দলেরও একটা কর্মসূচি থাকবে। দলীয় ও সরকার কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আপনাদেরকে প্রোগ্রাম সাজাতে হবে। যেখানে-সেখানে যত্রতত্র চাঁদাবাজি করে বঙ্গবন্ধুর নামে মুজিববর্ষের দোকান কেউ খুলবে, এটা কাউকে অ্যালাউ করবেন না।
তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপনে শৃঙ্খলা রক্ষায় আপনাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা যারাই করবে, তাদের সেসব তৎপরতা বন্ধ করে দিতে হবে। সম্পূর্ণ নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকাকে সমুন্নত রেখে আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে আমরা এগিয়ে যাব। এই বিষয়টি আপনাদের বিশেষভাবে মনে করিয়ে দিলাম।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, তথা মুজিববর্ষের শুরুর দিনসহ বেশ কয়েটি জাতীয় উপলক্ষ থাকায় মার্চে খুব একটা সাংগঠনিক তৎপরতা চালানো সম্ভব হবে না বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের যেসব শাখা কমিটির সম্মেলন বাকি আছে, সেগুলোও মার্চ মাসে আয়োজন করা সম্ভব হবে না। সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু হবে এপ্রিল থেকে। আর এর মধ্যে যেসব সম্মেলন হয়ে গেছে, সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কমিটি করার ক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতা বাছাইয়ের আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কমিটি করার সময় আপনারা সংগঠনের স্বার্থটা দেখবেন, দলের স্বার্থটা দেখবেন এবং দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের গুরুত্ব দেবেন। সুবিধাবাদীরা আজ আসবে, কাল চলে যাবে। এরা সুসময়ে আসে, দুঃসময়ে থাকবে না। তাই সুবিধাবাদের পরিবর্তে ত্যাগী ও পরীক্ষিতরাই যেন কমিটিতে মূল্যায়িত হয়।
কলহ-কোন্দল করে দলের অবস্থান দুর্বল না করার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষরা খুবই দুর্বল এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফরম হচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তিরা বিএনপিতে আশ্রয় নিয়ে তাদেরই ভোট দেয়। আবার এটাও মনে রাখবেন, বাংলাদেশের রাজনীতি যেমন বীরের রাজনীতি, তেমনি এই রাজনীতি বিশ্বাসঘাতকতারও রাজনীতি। এই মাটিতে ইতিহাসের মহানায়কও সপরিবারে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন। তাই সুখটাকে স্থায়ী ভাববেন না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কথা তুলে ধরে নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, তিনি আমাদের বিশাল সম্পদ। এই সম্পদকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। একা শেখ হাসিনা সৎ, একা শেখ হাসিনা পরিশ্রমী, একা শেখ হাসিনা জনপ্রিয়— এই দিয়ে আওয়ামী লীগ চলবে না। জাতির পিতা ও তার কন্যা শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করতে হবে। তবেই আওয়ামী লীগ স্বকীয় শক্তিতে মাথা তুলে আপন মহিমায় বিকশিত হবে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দলে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পার্টিকে সময়ের চাহিদা মেনে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে। পার্টির ভেতরে অন্তঃকলহ ও বিরোধের অবসান যেকোনো ঘটাতে হবে। দলের মধ্যে বিভেদ জিইয়ে রেখে দলকে শক্তিশালী করা যাবে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল এই দলে অনেকেই আসবে। কিন্তু দলের নেতৃত্বে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের জায়গা করে দিতে হবে। এই ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীরা দলের যদি দায়িত্বে না থাকেন, তাহলে দুঃসময় এলে দল চালানোর জন্য লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না।
যৌথ সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সভায় খুলনা বিভাগের সব জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, দলীয় এমপি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকের পরিচালনায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান ও কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা। এছাড়াও খুলনা বিভাগের অন্তর্গত জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদ সদস্য ও দলীয় এমপিরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।