পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশীয় চলচ্চিত্র বাঁচাতে সিনেপ্লেক্সের বিক্রি করা টিকিটের টাকার অংশ সরকার নির্ধারণ করে দেবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক, পরিচালক ও প্রদর্শক সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান। সভায় রুগ্ন প্রায় চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে সিনেমা হলের বিদ্যুৎ বিল কমানো, সরঞ্জমাদি আমদানির ক্ষেত্রে কর সহজীকরণসহ বেশকিছু বিষয়ে আশ্বাসও দেন তথ্যমন্ত্রী।
সভায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, সিনেপ্লেক্সে ৪৫০ টাকার টিকিট বিক্রি হলে আমরা পাই মাত্র ৫৫ টাকা, ২৫০ টাকার টিকিটে পাই ৩৩ টাকা, ২০০ টাকার টিকিটে পাই ১৭ টাকা। এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। ঢাকার অভিজাত সিনেমা হল বলাকা ও মধুমিতায় ১৫০ টাকার টিকিট হলে আমরা প্রযোজকরা মাত্র ১৩ টাকা পাই। এরমধ্য থেকেই আমাদের মেশিন, ব্যানার, কনটেন্ট ভাড়া দিতে হয়। সে কারণে প্রযোজকরা মরে গেছেন।
গুলজার বলেন, ২১৫ টাকার টিকিটে সাত টাকা ৭৫ পয়সা ট্যাক্স দিয়ে বাকি টাকা অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে দেয়। আমাদের প্রযোজকরা যাতে বাঁচে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সিনেমা বাড়ে, সেটাও যেন ব্যবস্থা করে। জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা বলছেন সিনেমা হল থেকে প্রযোজকরা টাকা পান না। তাহলে প্রথম দিকে আমরা সিনেপ্লেক্সগুলোতে একটা পার্সেন্টেজ নির্ধারণ করে দিতে পারি। পরবর্তী ধাপে আমরা সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হলে যাই। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সিনেপ্লেক্সে টিকেটের দাম কোনো জায়গায়ই ৩০০ টাকার কম নয়। সেখান থেকে প্রযোজক মাত্র ৩০ টাকা পাবেন, এটা হওয়া উচিত নয়।
হাছান মাহমুদ বলেন,বর্তমানে অনেকগুলো হল বন্ধ হয়ে গেছে। হল না থাকলে চলচ্চিত্র বাঁচবে না। প্রযোজকদের অসুবিধা হচ্ছে। একটি ছবি যখন তারা নির্মাণ করেন, তখন টাকা উঠে আসে না। আমরা চেষ্টা করছি প্রথম থেকেই, কিন্তু আমাদের একক চেষ্টায় সবকিছু হয় না। তথ্যমন্ত্রী বলেন,প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পেরেছি। আগে সিনেমায় অনুদান দেওয়া হত পাঁচ কোটি টাকা। এ বছর থেকে সেটা হচ্ছে ১০ কোটি টাকা। আর চলচ্চিত্র প্রতি অনুদান ৬০ লাখ টাকা থেকে ৭৫ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। আমরা ১০ কোটি টাকায় স্বল্প দৈর্ঘ্যসহ অন্তত ১৫ থেকে ১৬টি অনুদানের ছবি বানাতে পারব। সেগুলো থেকে যদি তিন ভাগের দুই ভাগও হলে মুক্তি পায়, তাহলে অন্তত ১০টি ছবি হলে মুক্তি পাবে।
তিনি বলেন, আমরা নীতিমালা পরিবর্তন করতে যাচ্ছি। প্রায় চ‚ড়ান্ত। সেটি হচ্ছে অনুদানে যে ছবিগুলো বানানো হবে, তা হলে মুক্তি দিতে হবে। আগে অনুদানের ছবি হলে মুক্তি দিত না। আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিত। হল বন্ধ হয়ে যাওয়ার বড় কারণ এখানে ছবি পাচ্ছে না। নির্দিষ্ট সংখ্যক সিনেমা বোম্বে থেকে আমদানির বিষয়ে পরিচালক ও প্রযোজক সমিতি একমত রয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শিল্পী সমিতি এখন পর্যন্ত সম্মতি দেয়নি। আমি সব পক্ষের সম্মতি ছাড়া এটা করতে চাই না।
হাছান মাহমুদ বলেন,হল মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে পুশ করলে ঠিক মতো এগোচ্ছে না। এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে হবে। হল মালিকদের কম হারে বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে চিঠি দেবেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলবো। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট মালামাল আমদানির ক্ষেত্রে শিল্প হিসেবে সুবিধা দেওয়ার জন্য এনবিআরের সঙ্গে কথা বলা হবে।
তথ্যমন্ত্রী জানান, সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল বন্ধ হলেও সিনেপ্লেক্স বাড়ছে। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ঢাকায় ১০ থেকে ১৫টি, চট্টগ্রাম শহরেও ছয় থেকে সাতটি হয়ে যাবে। দেশের অন্যান্য জায়গায়ও হচ্ছে। একটি প্রতিষ্ঠান সারাদেশে ১০০টি সিনেপ্লেক্স করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, এক সময় বলতাম, প্রযোজক বাঁচলে চলচ্চিত্র বাঁচবে, এখন বলছি, হল বাঁচলে চলচ্চিত্র বাঁচবে। ‘হল বাঁচাতে হবে, হল রাখতে হবে। প্রতিবছরই হল কমে যাচ্ছে। আমাদের এক সময় ১৩০০ হল ছিল। গতবছরও ১৭০টি হলে সিনিমা রিলিজ করেছি। কিন্তু এবার ৮০টি হলে সিনেমা রিলিজ করা যায়নি। প্রতিদিনই হল কমছে। পরে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, দেশীয় চলচ্চিত্র বাঁচাতে হবে, প্রযোজক সমিতিকে বাঁচাতে হবে। এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তথ্যসচিব কামরুন নাহার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী সোয়েব রশীদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাসও বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।