পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত চীন। প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে প্রতিদিন। এ ঘটনায় শোক ও সমবেদনা জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া দেশটির জন্য জন্য মাস্ক, ক্যাপ, হ্যান্ডগ্লোভ ও স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সহমর্মিতামূলক সহায়তা হিসেবে এসব সামগ্রী পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের হাতে ওই চিঠি ও প্রতীকি স্বাস্থ্য সামগ্রী হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
সরকার প্রধানের লেখা চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের আক্রমণে স্বজন হারানো চীনা পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। চীন সরকার কর্তৃক দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের সঠিকভাবে সেবা প্রদানেরও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। চীন দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
পাশাপাশি চিঠিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী। এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উহানে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা সব বাংলাদেশিকে সরকারী খরচে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। চীনে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের আরও কিছুদিন সেখানে অবস্থান করার পর দেশে ফেরার পরামর্শ দেন। ড. মোমেন বলেন, একমাত্র সিঙ্গাপুর ছাড়া কোথাও কোনো বাংলাদেশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। এছাড়া এই ভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের চীনা প্রজেক্ট ও ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না।
প্রধানমন্ত্রীর চিঠি ও সামগ্রী গ্রহণের সময় চীনা রাষ্ট্রদ‚ত লি জিমিং জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে বাংলাদেশকে ৫০০ কিট উপহার দেবে চীন। রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মহানুভবতার সাধুবাদ জানাই আমরা। করোনাভাইরাস ইস্যুতে চীনকে বাংলাদেশ যে সহযোগিতা করে যাচ্ছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি জানান, দু’পক্ষের কৌশলগত সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। করোনাভাইরাসের কোনো সীমান্ত নেই। এ সময় বাংলাদেশ যে সহমর্মিতা দেখাচ্ছে তা বন্ধুত্বের পরিচয় বহন করে।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে দুই দেশের বাণিজ্যে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। একই রকম মন্তব্য করেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যে সাময়িক সমস্যা হতে পারে, তবে বড় কোনো ঝামেলা হবে না। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই দেশের কূটনীতিকদের এক বৈঠক শেষে তারা এ কথা বলেন।
এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাস যদি চীন থেকে পণ্য সরবরাহ বন্ধ থাকে, তাহলে রফতানি খাতে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমদানি ও রফতানিতে করোনাভাইরাসের প্রভাবে তেমন বড় কোনো ঝামেলা তৈরি হবে না। তবে সাময়িক একটু সমস্যা হতে পারে। এরই মধ্যে নববর্ষের ছুটি শেষ হয়েছে, চীনারা কাজে ফিরতে শুরু করেছে। সহজেই সবকিছু সামলানো যাবে।
লি জিমিং বলেন, এখনই বিকল্প বাজার খোঁজার সময় হয়নি। চীন এখনো আগের মতোই বাণিজ্য খাতে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. আব্দুল কাদের খান বলেন, চীন থেকে মোট অ্যাকসেসরিজের ৪০ বা ৫০ শতাংশ আমদানি করা হয়। তবে আমাদের যে চাহিদা রয়েছে, এত অল্প সময়ে কাছাকাছি দেশ ভারতসহ অন্য কেউ এই সাপোর্ট দিতে পারবে না। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি যদি চীনের কারখানাগুলো খুলে যায়, তাহলে আমাদের চাহিদা পূরণে সময় লাগবে না।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রভাব বাণিজ্যে পড়বে না। কারণ চীন একটি বিশাল আয়তনের দেশ। মূলত হুবেই ও আশপাশের কয়েকটি প্রদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পিত অর্থনীতি গড়ে তোলার অংশ হিসেবে চীন একেকটি প্রদেশ বা অঞ্চলে একেক ধরনের পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র বা হাব গড়ে তুলেছে। ফলে চীনে সব রকম পণ্য উৎপাদনে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ার কথা নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে এমন প্রদেশগুলো সংক্রমণের বাইরে থাকায় চীন থেকে পণ্য আমদানিতে এখন পর্যন্ত বড় কোনো প্রভাব পড়ার কারণে নেই। গাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারের পক্ষ থেকে চীনের সামগ্রিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজও (এফবিসিসিআই) এ বিষয়ে কাজ করছে। চীনের সঙ্গে যেসব খাতে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে, সেসব খাতের সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে ভ‚মিকা রাখছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।