পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের সঙ্গে সউদী আরবের সম্পর্ক সম্প্রতি খুব ভালো যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সউদীর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তবে কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ হবে, তা পবরর্তীতে ঠিক করা হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ এবং সউদী আরবের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে রিপোর্ট করবে। সে ভিত্তিতেই দেশের বেশ কয়েকটি খাতে সউদী আরব বিনিয়োগ বাড়াবে বলে জানিয়েছেন দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মাহির আব্দুল রাহমান গাসিম। গতকাল বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থমন্ত্রীর দপ্তরে আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান সউদী শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী। এরআগে সকালে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও সউদী আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার লক্ষ্যে যৌথ কমিশনের ১৩তম সভা শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার এ সভা শেষ হবে। সভায় সউদী শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ দেশটির সরকারের ৪০ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছে।
সউদী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গত দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সউদী আরব গিয়েছিলেন। তখন তার লক্ষ্য ছিল, সউদীর বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসুক এবং বিনিয়োগ করুক। সউদী বেসরকারি ভিত্তিক অর্থনৈতিক দেশ নয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সে দেশের সরকারের। সেই সউদী আমাদের পাশে আছে। আমি নিশ্চিত, সউদীর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের দিন দিন উন্নতি হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সউদী আরবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কটি গত অর্ধ শতাব্দীতে বন্ধুত্বে রূপান্তরিত হয়েছে। যার পিছনে রয়েছে সউদী আরব ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব। বাংলাদেশ এখন বন্ধুত্বের উর্ধ্বে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর অংশীদারিত্বকে’ ধরে রাখার দিকে নজর দিচ্ছে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ এবার এমন একটা সময়ে এই যৌথ কমিশনের সভার আয়োজন করছে যখন দেশটি তার উন্নয়নর পথে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে। সউদী আরব বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াবে। বাংলাদেশ সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরনে সহায়তা; কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসে অবদান রাখতে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ; এসডিজি, পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং অন্যান্য জাতীয় পরিকল্পনা ও নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্য রেখে সহযোগীতা প্রত্যাশ করছে বলে তিনি জানান।
এ সময় সউদী উপমন্ত্রী মাহির আব্দুল রহমান গাছিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সউদী আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে উষ্ণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের মার্চে ১২তম জেইসি সভা এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেশ কয়েকবার সউদী সফরের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও উচ্চতায় অবস্থান করছে। এছাড়াও ১৬ লাখ বাংলাদেশি কর্মী সউদী আরবের উন্নয়নে অবদান রাখছে। এই শ্রমশক্তি সউদী আরবের মোট শ্রমশক্তির ১৩ শতাংশ। এই শ্রম শক্তি একইসঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়নেও অবদান রাখতে পারছে বলে আমরা মনে করি। প্রতিনিধি দলে থাকা উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কত বিনিয়োগ হবে সেটা এই মুহুর্তে বলা মুসকিল। তবে জেইসির মাধ্যমে সেটা চূড়ান্ত হবে। ত্রেমাসিক ভিত্তিতে তারা রিপোর্ট করবে, যেন কাজের অগ্রগতি হয়।
এদিকে গতকাল সকালে দুইদিনের জেইসি সভা শুরু হয়। সভায় বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে আছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. মনোয়ার আহমেদ। আর সউদী আরবের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মাহির আব্দুল রহমান গাছিম। সউদী আরব প্রতিনিধি দলে দেশটির সরকারি ২১টি এজেন্সির ২৯ জন এবং বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা রয়েছেন।
সভার উদ্বোধনী পর্বে ইআরডি সচিব মো. মনোয়ার আহমেদ বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়ে ১৯০৯ ডলার হয়েছে। দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ অবকঠামো, বিদ্যুৎ, কৃষি, স্বাস্থ্য, পর্যটন, বন্দর এবং শিল্প খাতে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে। বর্তমান সরকার ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য গ্রহণ করেছে।
ইআরডি সচিব বলেন, আমাদের এই লক্ষ্য পূরণে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র সউদী আরবের সহযোগিতা চাই। সউদী আরবের বেসরকারি খাত থেকে আমরা পেট্রোলিয়াম, কৃষি, মৎস, বন্দর, আইসিটি, পর্যটন, বিদ্যুৎ, এবং শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ আশা করছি।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।