পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয়কে মুজিববর্ষে জাতির জন্য বড় উপহার বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুব ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয়ের জন্য বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই জয় নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ভারতকে হারিয়ে যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় জুনিয়র টাইগারদের গণসংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জানান, আমি প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পর তিনি বলেন, আমিও ক্রিকেট দলসহ সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। প্রধনমন্ত্রী বলেছেন, এটা অত্যন্ত আনন্দের বিজয়। খেলাধুলায় এতবড় বিজয় আগে কখনো পাইনি। যুব দলের এ বিজয় মুজিববর্ষের সেরা উপহার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী যুবা টাইগারদের দেশে ফেরার পর বড় ধরনের সংবর্ধনা দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের আইসিসির অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপর জয়কে মুজিববর্ষে জাতির জন্য উপহার হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেন যে, দলটি দেশে ফিরে আসার পরে এই দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য তাদেরকে একটি বিশাল সংবর্ধনা দেয়া হবে। তরুণ টাইগাররা রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার পটচেস্টরুমের সেনউইস পার্কে টুর্নামেন্টের ফাইনালে শক্তিশালী ভারতকে তিন উইকেটে পরাজিত করে আকাক্সিক্ষত ট্রফি জয় করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের আইসিসির অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ট্রফি জয় করাটা মুজিববর্ষে জাতির জন্য একটি উপহার। শেখ হাসিনা স্মরণ করেন, ১৯৯৭ সালে আইসিসি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, যখনই বাংলাদেশ দল কোনো ট্রপি জিতেছে, আমরা তাদের সংবর্ধনা দিয়েছি। আমরা আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী বাংলাদেশ দলকেও জমকালো সংবর্ধনা দেব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গত চার বছর কঠোর পরিশ্রম করেছে। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ পারফরমেন্সের মাধ্যমে তারা পরিশ্রমের সুফল পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দল চার বারের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দলকে হারিয়েছে। তাদের (বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের) অনেক সাহস আছে এবং তারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশ দলের অন‚র্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ বিজয়ের উৎসব পালনের জন্য একদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব দিলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অর্জনের জন্য সকলকে আরো বেশি কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমার প্রস্তাব হচ্ছে এই খুশিতে সবাইকে একদিন বা এক ঘণ্টা বেশি কাজ করতে হবে। এই ইস্যুতে একজন মন্ত্রী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের ঘটনাকে বাংলাদেশের খেলাধ‚লার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশের খেলাধুলার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। মন্ত্রী আরো বলেন, দলনায়ক আকবর আলি টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে তার পরিপক্বতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি বলেন, এখানে কিভাবে সংকটপূর্ণ সময়ে মোকাবেলা করতে হয়ে তা তার থেকে শেখার আছে। আমাদের সবাইকেই সংকটের সময়ে তা থেকে উত্তরণের জন্য এভাবেই চেষ্টা চালাতে হবে। তিনি আকবরের এই ম্যাচ উইনিং ইনিংসটিকে কুয়ালালামপুরের ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফিতে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে আকরাম খানের সেই স্মরণীয় ব্যাটিংয়ের সাথে তুলনা করেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত সবাই এতটাই আনন্দিত ছিলেন যে, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছুটিই চেয়ে বসেন। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক তো প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, এ বিজয়ে আমাদের কয়েক দিন ছুটি দেন। কয়েকজন মন্ত্রীও হেসে তার কথায় সমর্থন করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ছুটি নয়। এই খুশিতে বরং সবার এক ঘণ্টা করে বেশি কাজ করা উচিত।
রোববার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো টুর্নামেন্টে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের সব কয়টি উইকেট হারিয়ে করা ১৭৭ রানের জবাবে বাংলাদেশ ২৩ বল হাতে রেখে ছিনিয়ে নেয় ঐতিহাসিক জয়। খেলাধুলার বিভিন্ন আসরে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা নতুন নয়। তবে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো অর্জনটা প্রথম এলো অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের হাত ধরে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐতিহাসিক বিজয়ে আমাদের তরুণ টাইগারদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। তাদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে ভারতের মতো বিশাল শক্তিকে পরাজিত করে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এ বিজয় আমরা উদযাপন করব। তিনি বলেন, ‘বিজয়ী বীরদের গণসংবর্ধনা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা আশা করছি তারা ফিরে এলে সুবিধামত সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। কারণ আমরা স্বাধীনতার পর এবারই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি।
জুনিয়র টাইগার অধিনায়কের প্রশংসা করে কাদের বলেন, আমাদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে তরুণ ক্রিকেটারদের এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। বিশেষ করে ক্যাপ্টেন যে ম্যাচুইরিটি প্রদর্শন করেছেন, ৬ উইকেট যাওয়ার পর আমরা তো ভাবিইনি জিতব। তিনি যেভাবে দলকে বিজয়ের স্বর্ণদুয়ারে টেনে নিয়ে গেছেন সেটা অবশ্যই স্মরণীয় ঘটনা।
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এই যে ক্যাপ্টেন, অন‚র্ধ্ব বিশ্বকাপ বিজয়ের নায়ক তার বাড়ি বাংলাদেশের একদম রুরাল এরিয়ায়। সেই পিছিয়ে পড়া রংপুর জেলার কুড়িগ্রামের সন্তান। দলে কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড়ের খেলোয়াড়ও আছেন। আমাদের বিকেএসপিতে তৃণমূলের যে প্রশিক্ষণটা হয় সেটা চমৎকার প্রশিক্ষণ। সেখান থেকেই নতুন নতুন ক্রিকেটার সৃষ্টি হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।