Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১৪ মার্চ নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

যমুনায় বঙ্গবন্ধু রেলসেতু

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে যমুনা নদীর ওপর পৃথক রেল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে আগামী ১৪ মার্চ। ওই দিন সেতুর নির্মাণ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জানা গেছে, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর রেলপথে ওজন সীমাবদ্বতার কারণে ভারী পণ্যবাহী ট্রেন চলতে পারে না। এ সেতুতে ট্রেনও নির্ধারিত গতিতে চলতে পারে না। সিঙ্গেল লাইনের কারণে সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলে অনেক সময় লাগছে। পৃথক রেলসেতু হলে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়বে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে।
এ সংক্রান্ত রেল মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু স্থান হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রায় ৩০০ মিটার উজানে। সেতুর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। জাপানী প্রতিষ্ঠান জাইকার স্বল্প সুদের ঋণে এ সেতু নির্মাণ করা হবে। ডিসেম্বরের ২০২৩ সালে সম্ভাব্য রেলসেতু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ রেল সেতু নির্মাণ করবে জাপানভিত্তিক দুইটি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
রেল মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, যমুনা নদীর ওপর নতুন বঙ্গবন্ধু সেতুটি হবে ডুয়েল গেজ ডবল লাইনের। নির্মাণের পর বর্তমান বঙ্গবন্ধু সেতু রেল লাইন আর রাখা হবে না।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় আরও বাড়ানো হয়েছে। আগে এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের ব্যয়ের চেয়ে তিন হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ হবে।
জানা গেছে, জাপানি কোম্পানি সিনাগাওয়া ইন্টারসিটি এ সেতু নির্মাণ করবে। শিডিউল অনুসারে ২০২৩ সালের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। রেল মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ২০১৬ সালে একনেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি পাস হয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় এ প্রকল্পের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি।
প্রকল্প পরিচালক কামরুল আহসান জানান, প্রকল্পের ব্যয় ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, মূলত ডিপিপি প্রণয়ন করা হয় সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং ডিজাইনের আগে। যে কারণে ডিপিপিতে সঠিক ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়নি। এ ছাড়া এই সেতু নির্মাণের সাথে যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে বিদ্যমান বাঁধটি নতুন করে সংরক্ষণ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীনতার পর এত বড় রেল সেতু নির্মাণ এই প্রথম। যে কারণে সেতুতে নতুন এবং আধুনিক সুবিধা সংযোজন করা হবে। প্রায় ৫০টি পিলারের ওপর কংক্রিটের ওপর রেল লাইন বসানো হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সেতুতে স্টিল পাইপ শিল পাইল (এসপিএসপি) ফাউন্ডেশন, সেতুতে স্লিপার থাকবে না, ওয়েদারিং স্টিল (যা মরিচ ও ক্ষয় প্রতিরোধী) এবং ড্রিলমে প্রিভেনশন গার্ড (দুর্ঘটনা প্রতিরোধী) এরমক নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী এ্যাড. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বর্তমান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪২টি ট্রেন চলাচল করে। সিঙ্গেল লাইনে ট্রেন চলাচলে অনেক সময় লাগছে। যে কারণে ঈদের সময় ট্রেনগুলোর সিডিউল ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। নতুন বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ হলে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর গন্তব্যে পৌঁছার সময় গড়ে ২ ঘন্টা কমে যাবে। তাছাড়া এটি বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাইল ফলক হিসেবে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ