পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদেশিরা বৈধ-অবৈধভাবে বাংলাদেশে কাজ করে প্রতি বছর প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পাচার করছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। অবৈধভাবে বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশিদের বেশির ভাগই ভারতের নাগরিক।
গতকাল বুধবার ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবির এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ‘বাংলাদেশে বিদেশিদের কর্মসংস্থান : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যে পরিমাণ রেমিটেন্স বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসে তার তুলনায় বেশি পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন টিআইবির প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মনজুর-ই-খোদা। তিনি জানান, ৪৪টির বেশি দেশ থেকে আসা বিদেশিরা বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে কর্মরত। দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারতের নাগরিকরা বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে কর্মরত রয়েছেন।
গবেষণা তথ্য মতে, বর্তমানে বৈধ ও অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রায় আড়াই লাখ বিদেশি কর্মী কাজ করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেবে বৈধ কর্মীর সংখ্যা ৯০ হাজার। এদের ন্যূনতম গড় মাসিক বেতন দেড় হাজার মার্কিন ডলার। সে হিসেবে বিদেশি কর্মীদের বার্ষিক আয় ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৩০ শতাংশ স্থানীয় ব্যয় বাদে প্রায় ৩.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে চলে যায়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে বৈধভাবে বিদেশে যায় মাত্র ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাকি ৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়ে যায়, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এতে বার্ষিক রাজস্ব ক্ষতি হয় ১.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১২ হাজার কোটি টাকা বলে জানায় টিআইবি।
এছাড়া বিদেশি কর্মী নিয়োগে অবৈধ অর্থের লেনদেনের বিষয়ও উঠে এসেছে এতে। বিশেষ করে ভিসার সুপারিশপত্র, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে ভিসা সংগ্রহ, বিদেশি নাগরিক নিবন্ধন, কাজের অনুমতি, এসবি ও এনএসআই ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা ছাড়পত্র এবং ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধিতে ২৩ থেকে ৩৪ হাজার টাকা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ লেনদেন হয়। এছাড়া বিদেশি কর্মী নিয়োগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দেশি এক্সপার্ট না খোঁজা, কর ফাঁকি, একই প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছরের বেশি কাজ করানো, ভিসা নীতি লঙ্ঘন ও বিদেশি কর্মীর বেতন কম দেখানো হয়।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিপুল পরিমাণে অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। রাজস্ব আয় যা হওয়ার কথা, সেটা আমরা ব্যাপকভাবে হারাচ্ছি। এতে যারা অনিয়ম করে কাজ করছেন বা কাজ দিচ্ছেন তাদের যেমন দায় আছে, একইভাবে যাদের মাধ্যমে পর্যটন ভিসা অল্প সময়ের মধ্যে একই ব্যক্তিকে দেওয়া হয় তাদেরও দায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যারা রিটার্ন দিচ্ছেন, তারাও মূল আয় গোপন করে অল্প পরিমাণ রিটার্নে ঘোষণা করছেন। এতে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান ও নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তি উভয়ই লাভবান হচ্ছেন। তবে এতে রাষ্ট্র রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একটা সময় আমরা কৃষিনির্ভর দেশ ছিলাম। সেটা রূপান্তরিত হয়ে এখন শিল্প এবং সেবা খাতের উপর আমাদের নির্ভরশীলতা বেড়েছে। যেটা আমাদের উন্নয়নের লক্ষণ। সময়ের সঙ্গে আমাদের বিনিয়োগও বেড়েছে। তবে তা আরও বেশি হতে পারতো। তবে যেটুকু হয়েছে তা লক্ষ্য করার মতো। শিল্পের প্রয়োজনেই আমাদের এখানে বিদেশি জনবলের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। কিন্তু নানা অনিয়মের কারণে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) শাহজাদা এম আকরাম প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।