পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি চাকরিতে অষ্টম থেকে উপরের দিকে (১ম-৮ম) সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রেও কোটা পদ্ধতি থাকবে না এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন। কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র নিয়ে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) স্পষ্টীকরণ চাইলে ১ম-৮ম গ্রেডের নিয়োগে কোটা নিয়ে এই মতামত দেয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডার অষ্টম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টন পদ্ধতি সংক্রান্ত পরিপত্র সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রস্তাব অনুমোদনের ফলে সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণিতে সরাসরি নিয়োগে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের মতো প্রথম থেকে অষ্টম গ্রেডের চাকরির নিয়োগেও কোনো কোটা থাকবে না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে। এতে বলা হয়েছিল- ৯ম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হবে। ৯ম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোটা বাতিলের পরিপত্রে নবম গ্রেড যেহেতু প্রথম শ্রেণি, নবম গ্রেডে যখন নিয়োগ হবে সেখানে কোটা পদ্ধতি থাকবে না বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পিএসসিতে (সরকারি কর্মকমিশন) কিছু কিছু নিয়োগ হচ্ছে যেগুলো ১০ম, ১১তম গ্রেডে। পিএসসি সে কারণে জনপ্রশাসনের কাছে স্পষ্টীকরণ চেয়েছে- পরিপত্রে প্রথম শ্রেণি এবং ৯ম গ্রেড উল্লেখ করা আছে। ১০ম বা ১১তম বা ১২তম গ্রেডে যদি কখনও নিয়োগ দিতে হয় তাহলে কী হবে?
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে- নবম থেকে উপরের দিকে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি থাকবে না। গত ৩ ফেব্রুয়ারি পিএসসি থেকে নন-ক্যাডার ৮ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধারভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে, নাকি আগের কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে-এ বিষয়টি স্পষ্টীকরণের জন্য অনুরোধ করা হয়। কোটা বাতিলের পরিপত্রে ৯ম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলেও আগের ১ম শ্রেণিভুক্ত ৮ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টন পদ্ধতি কী হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। পিএসসি থেকে ৯ম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড ছাড়াও ৮ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের কোনো কোনো পদে সরাসরি নিয়োগ করা হয়ে থাকে। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এ শ্রেণির পরিবর্তে গ্রেড উল্লেখ করা হয়েছে এবং আগের ১ম শ্রেণির পদ বলতে ৯ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদকে বোঝানো হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে ৯ম গ্রেড এর স্থলে ৯ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেড উল্লেখ করে পরিপত্রটির সংশোধন প্রয়োজন বলে প্রস্তাব করে।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশ জমা দেন। কমিটি ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে সবধরনের কোটা উঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবটিই অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ২ জুলাই কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন।
আকাশ পথে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ছে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আকাশ পথে ভ্রমণ দুর্ঘটনা বা লাগেজ হারিয়ে গেলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সচিব বলেন, আকাশ পথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) আইন ২০২০-এর খসড়ার চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ আইন কার্যকর হলে আকাশ পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু, আঘাত এবং লাগেজ হারিয়ে গলে যাত্রীদের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়বে। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হলে বর্তমানে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। নতুন খসড়ায় বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ১ কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) ২০২০ আইনের খসড়া, আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন ২০২০-এর খসড়া, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৯-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। ৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবসের পাশাপাশি জাতীয় ক্রীড়া দিবস উদযাপনের অনুমোদন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছর মন্ত্রিসভার শেষ প্রান্তিক বা শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বর) বৈঠক হয়েছে ৯টি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়েছে ৯৭টি এবং বাস্তবায়ন হয়েছে ৭৩টি। অর্থাৎ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার শতকরা হিসেবে ৭৫.২৬ শতাংশ। আর বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্ত রয়েছে ২৪টি। শতকরা ২৪.৭৪ ভাগ বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে দু’টি কর্মকৌশলের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক হয়েছে ৫টি। এছাড়া সংসদে আইন পাস হয়েছে তিনটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।