পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাঠে মাঠে এখন শীতকালীন সবজি আর সবজি। সে এক চোখ ধাঁধানো দৃশ্য। এখন শৈত্যপ্রবাহ হলেও সবজি আবাদ ও উৎপাদনের জন্য মৌসুমের সিংহভাগ সময়ে আবহাওয়া ছিল অনুক‚লে। কৃষি উপকরণও সহজে হাতে পাওয়া গেছে। সবজি বিপ্লব ঘটাতে দারুণ ব্যতিব্যস্ত চাষিরা। তাদের ফুরসত নেই একদন্ড। কর্মচাঞ্চল্যতা বেড়েছে বহুগুণে। সবজিকে ঘিরে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ চলছে বহুদিন ধরেই। সবজি চাষিরা এবার বেশ ভালো মূল্য পাচ্ছেন। তবে মধ্যস্বত্বভোগীদের দাপট কমানোর ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (ফিল্ড সার্ভিস উইং) কৃষিবিদ চন্ডিদাস কুন্ডু গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সারাদেশেই সবজির উৎপাদন খুবই ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে সবজি আবাদের জন্য। চাষিরা এবার সবজির মূল্য ভালো পাচ্ছেন। চাষি ছাড়াও মাঠ শ্রমিক, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী, রফতানীকারক, পরিবহন ও ভোক্তাসহ সংশিষ্টরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দারুণ লাভবান হচ্ছেন। সবজি উৎপাদনে অসাধারণ সাফল্যে খুশি মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারাও। তারা বলছেন, সবখানেই ফলনও হয়েছে বাম্পার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং সূত্র জানায়, সারাদেশে শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন দু’টি মৌসুমে সবজি আবাদ হয় ৭ লাখ ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। মোট উৎপাদন হয় ১ কোটি ৪০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বড় অংশই হয় শীতকালে। সারাদেশে শুধু শীতকালীন সবজি আবাদ চলছে ৪ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে। মোট উৎপাদন হবে ৭৬ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সবজি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শীতকালীন সবজির আবাদ ও উৎপাদন চলবে আগামী মার্চ পর্যন্ত। কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামানসহ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, ‘ভেজিটেবল জোন’ যশোর, রংপুর, কুমিল্লা, নরসিংদী, বগুড়া, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মাঠ ভরে গেছে সবজিতে। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও সবজি উৎপাদনের রেকর্ড এলাকায় বাড়ীর আঙ্গিনায় এক ইঞ্চি জমিও কেউ ফেলে রাখেননি চাষিরা। দাম মোটামোটি ভালো পাচ্ছেন। ভোক্তারাও শীতকালীন স্বাদ পাচ্ছেন। তবে মুনাফাল্ভোী পাইকারী ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরার ব্যবস্থা হলে উৎপাদক চাষি এবং ভোক্তারা আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হতেন।
জানা যায়, সবজি আবাদ লাভজনক হওয়ায় চাষিরা ব্যাপকভাবে আবাদ ও উৎপাদনের দিকে ঝুঁকেছে। সারাদেশে কয়েকটি ভেজিটেবল জোন আছে। তার মধ্যে যশোর অন্যতম। এখান থেকে সারাদেশের মোট চাহিদার প্রায় ৬৫ ভাগ সবজি যোগান হয়।
সরেজমিনে যশোরের বারীনগর, চুড়ামনকাঠি, আমবটতলা, সাজিয়ালি, দোগাছিয়া, তীরেরহাট, মানিকদিহী, মথুরাপুর, ছাতিয়ানতলা, সানতলা, খাজুরা, বাহাদুরপুর, হাশিমপুর, নূরপুর ও মনোহরপুর, ঝিনাইদহের বারোবাজার, কালীগঞ্জ, খালিশপুর, ভাটই, গোপালপুর, মাগুরার শালিখা, সীমাখালি, ফুলতলা ও সাত্ক্ষীরার কলারোয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সবজি এখন প্রধান ফসল হিসেবে আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে। এই অঞ্চলের মাটি আসলে সবজি আবাদ ও উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। একটু যতœ নিলেই সব ধরণের সবজিরই বাম্পার ফলন হয়। এ অঞ্চলের অনেক সবজি চাষি পানিতে ডুবে থাকা জমিতেও শিম উৎপাদন করে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে বেশ আগে থেকেই।
মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সবজি উৎপাদনে এতটা সাফল্য এসেছে যে এখন আর গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন কোন পার্থক্য নেই। বারোমাসই সবজি উৎপাদন হয়। চাষিরা জানান, উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টির পরও অনেক সবজি চাষিকে পরবর্তী আবাদ করার জন্য অর্থকষ্টে পড়তে হয় কোন কোন বছরে। এবার সেই আশঙ্কা নেই তবুও চাষিদের দাবি এখন চলছে ভরা মৌসুম, এই সময়ে মধ্যস্বত্বভোগীদের লাগাম টেনে ধরার জোরদার ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তা না হলে সবজির বাম্পার ফলনের সুফল উৎপাদন চাষি ও ভোক্তারা পাবেন না এমন আশঙ্কা থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।