Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আমার ওপর ভরসা রাখুন

জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশে জনগণের একজন হয়ে থাকতে চান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাধারণ মানুষকে ঘিরেই আমার সকল কার্যক্রম। আপনাদের (জনগণ) ওপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ অসাধারণ পরিশ্রমী এবং উদ্ভাবন-ক্ষমতাসম্পন্ন। যে কোনো পরিস্থিতির সঙ্গে তাঁরা নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম। অল্পতেই সন্তুষ্ট এ দেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। জাতির পিতা আজীবন সংগ্রাম করেছেন এসব মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য; তাঁদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তাঁর কন্যা হিসেবে আমার জীবনেরও একমাত্র লক্ষ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমার ওপর ভরসা রাখুন। আমি আপনাদেরই একজন হয়ে থাকতে চাই। গতকাল মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। বিটিভি, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিওতে একযোগে স¤প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতিবাজ যেই হোক এবং যত শক্তিশালীই হোক তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়। আর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, যিনি ক্ষমতাসীন দলটিরও শীর্ষ নেতা। তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এক বছর কেটে গেছে। গত ৬ জানুয়ারি বর্তমান সরকারের এক বছরপূর্তি হয়েছে।
সরকারের এক বছরের সাফল্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সরকার গঠনের এক বছর চেষ্টা করেছি জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে। সবক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছি তা দাবি করা যাবে না। কিন্তু এটুকু জোর দিয়ে বলা যায় চেষ্টার ত্রæটি ছিল না। অতীতের ভুল-ভ্রান্তি এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। সকলের সহযোগিতায় সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হবে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, গত বছর সরকার গঠনের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শোধরানোর আহŸান জানিয়েছিলাম। আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের কল্যাণের জন্য আমি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করব না। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। আবারও সবাইকে সতর্ক করে দিতে চাই দুর্নীতিবাজ যে-ই হোক, যত শক্তিশালীই হোক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহ্বান থাকবে, যে-ই অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। সাধারণ মানুষের ‘হক’ যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। পবিত্র ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা করে কেউ যেতে তরুণদের বিপথে পরিচালিত করতে না পারে, সে জন্য মসজিদের ইমামসহ ধর্মীয় নেতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে হিংসা-বিদ্বেষ হানাহানি থাকবে না। সকল ধর্ম-বর্ণ এবং স¤প্রদায়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন। সকলে নিজ নিজ ধর্ম যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করতে সক্ষম হচ্ছেন।
পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে প্রতিবেশির দেশের সঙ্গে আলোচনা সরকারের দুর্বলতা নয়, কৌশল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, পররাষ্ট্র নীতির সারকথা-সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। বিশেষ করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও সৌহার্দ্য বজায় রাখাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে। এটি আমাদের দুর্বলতা নয়, কৌশল। এ কারণেই মিয়ানমারের দিক থেকে নানা উসকানি সত্তে¡ও সে ফাঁদে পা দিইনি। আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথ থেকে সরে যাইনি। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে মামলা হয়েছে। আশা করছি, এই আদালত থেকে একটি স্থায়ী সমাধান সূত্র খুঁজে পাওয়া যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণের রায়ই হচ্ছে ক্ষমতার পালাবদলের একমাত্র উপায়। যে কোনো শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানায়। তবে, অযৌক্তিক দাবিতে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডকে বরদাশত করা হবে না। বাংলাদেশের মাটিতে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের পুনরাবৃত্তি আর হতে দেওয়া হবে না। সংসদকে কার্যকর করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি-বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সংসদকে প্রাণবন্ত করেছে।
জাতির জীবনে নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চারিত করতেই মুজিববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২০ সাল জাতীয় জীবনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বছর। এ বছর উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। আগামী ১৭ মার্চ বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার শুভ সূচনা হবে। ইতিমধ্যেই ২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের অনুষ্ঠানমালা যুগপৎভাবে চলতে থাকবে। এই উদ্যাপন শুধু আনুষ্ঠানিকতা-সর্বস্ব নয়, এই উদ্যাপনের লক্ষ্য জাতির জীবনে নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চারিত করা।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, দেড় কোটি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে ১৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প-কারখানা স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগের জন্য আসছেন। সারাদেশে হাইটেক পার্ক এবং আইটি ভিলেজ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে সারাদেশে ভকেশনাল এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। ফ্রি-ল্যান্সিং-এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ৬ লাখেরও বেশি ফ্রিল্যান্সার আইটি খাতে নিজেদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, পর্যটন, সেবাখাতসহ অন্যান্য খাতে আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া অনাখাঙ্খিত ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর দু’একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। এসব কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের প্রশ্রয় দেওয়া হইনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনিক এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো মহল গুজব ছড়িয়ে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছে। সেসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যসেবার চিত্র তুলে ধরে বলেন খাদ্যশস্য, মাছ এবং গোশত উৎপাদনে আমরা স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। চাল উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ৪র্থ এবং মাছ ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়। কৃষি উপকরণের দাম কয়েক দফা হ্রাস করা হয়েছে। সর্বশেষ গতমাসে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট বা ডিএপি সারের দাম কেজি প্রতি ৯ টাকা কমিয়ে কৃষক পর্যায়ে ১৬ টাকা করা হয়েছে। ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হচ্ছে।, বিগত ১১ বছরে ২০ হাজার ১০২ জন নতুন চিকিৎসক এবং ২১ হাজার ৬৯৭ জন নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য রামপাল, মাতারবাড়ি, পায়রা ও মহেশখালিতে মেগা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মহেশখালিতে এলএনজি টার্মিনাল থেকে দৈনিক ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। খেলাধুলার জন্য প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম-অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে। সাড়ে আঠার হাজার কম্যুনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বাস্থসেবা মানুষের দোরগোড়ায়। উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যায় পর্যন্ত প্রতি বছর ২ কোটি ৩ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি, উপ-বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হচ্ছে। আমরা এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬৮৫টি মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণ করেছি। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষার হার ৭৩ শতাংশ অতিক্রম করেছে। সামাজিক নিরাপত্তার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ খাতে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৭৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। কেউ যাতে গৃহহীন না থাকে সেজন্য আমরা একাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। জমি আছে ঘর নেই-এমন পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে পনের কোটিরও বেশি সীম ব্যবহৃত হচ্ছে। আর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি। দেশের ৩,৫০০ শোর বেশি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা ফোর-জির পর ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালুর উদ্যোগ নিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করি। বিএনপি-জামাত এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২ বছরের আর্থিক ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে এবং সেই সময়কার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছি। সে ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি সুপরিচিত নাম। জিডিপি প্রবৃদ্ধির উচ্চ হার অর্জনের পাশাপাশি নানা সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, শিক্ষার হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ তার দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশিদেরই শুধু নয়, অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে আমরা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিলাম। যার অন্তর্নিহিত মূল লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করা। মাথাপিছু আয় ১২শ মার্কিন ডলার অতিক্রম করায় বিশ্বব্যাংক ২০১৫ সালে বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে যেখানে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার, ২০১৯ সালে তা ১ হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১.৫ শতাংশ। বর্তমানে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২০.৫ শতাংশে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের হিসেব মতে ২০১০ সালে দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসরত কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৩.৫ শতাংশ। ২০১৮ সালে তা ১০.৪ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে স্থান দিয়েছে।
দেশে অর্থনীতির ভীত শক্ত হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ ৫টি দেশের একটি এখন বাংলাদেশ। আইএমএফ-এর হিসেব অনুযায়ী পিপিপি’র ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ৩০তম। প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস-এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বে ২৩তম স্থান দখল করবে। এইচ.বি.এস.সি’র প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে ২০২০-এ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এগিয়ে থাকবে। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। পাবনার রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। মায়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানার বিরোধ মীমাংসার ফলে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশির উপর আমাদের স্বার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। খুলে গিয়েছে নীল-অর্থনীতির দ্বার।
আওয়ামী লীগের শাসনামলের দশ বছর আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশের মধ্যে বিরাট ব্যবধান দাবি করে তিনি বলেন, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে। ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। এদেশের মানুষ ভালো-কিছুর স্বপ্ন দেখা ভুলেই গিয়েছিল। মানুষ স্বপ্ন দেখে উন্নত জীবনের, সুন্দরভাবে বাঁচার। ##

 



 

Show all comments
  • Md Tasin Imran ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৫ এএম says : 9
    In sha Allah... Praner netri doa roilo
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Hashim ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৬ এএম says : 4
    ইনশাআল্লাহ আমরা আছি আপনার সাথে
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ আজাদ ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৬ এএম says : 4
    আল্লাহ উনাকে দীর্ঘজীবী করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Jubaidul Hoque Sohel ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৬ এএম says : 4
    শুধু ভরসা না বিশ্বাসও রাখি।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Alim Shah ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৭ এএম says : 1
    ইনশাআল্লাহ বাংলার মানুষের চোখের মণি হয় থাকবেন এবং আরও সামনের দিকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এটাই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Uddin ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৮ এএম says : 1
    আমরা গর্বিত স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর আপনার মত একজন সফল প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আপনার সুস্থতা এবং মঙ্গল কামনা করছি। আল্লাহ যেন আপনাকে দীর্ঘ জীবন দান করেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Emum Hossain ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৮ এএম says : 1
    আপনি সোনার বাংলা গড়ার কারিগর মমতাময়ী মা শেখ হাসিনা
    Total Reply(0) Reply
  • Md Anowar ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৯ এএম says : 1
    মহান আল্লাহু মালিক আপনার সহায় হোন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এক দিন, আপনার হাতে গড়ে উঠবে,পৃথিবীতে মাঁথা উচু দাঁড়াবে
    Total Reply(0) Reply
  • Ayub Ali Khandaker ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ৯:২৪ এএম says : 0
    ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Ayub Ali Khandaker ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ৯:২৮ এএম says : 0
    ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • একজন সফল রাষ্ট্রপ্রধানের, এতো সুন্দর বক্তব্য সমগ্র দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছে।আল্লাহ আপনার হেফাজত করুন। জয়বাংলা।
    Total Reply(0) Reply
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ৯:৫০ এএম says : 0
    সারাবিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গনে আপনি প্রভাবশালী বিশ্ব নেতা। দক্ষিণ এশিয়ার লৌহ মানবি। মানবতাবাদী মমতা ময়ী মা। বিশ্ব মানবতার মা। বঙ্গবন্ধুর হীরার রত্ন ভান্ডার। শতাব্দীর পর শতাব্দী অপেক্ষা করে কোন ভাগ্য বানজাতি এই রকম নেতা পেয়ে থাকেন। জাতীয় আন্তর্জাতিক পরি মন্ডলে বাঙ্গালী জাতি সম্মানিত আপনার দিন রাত পরি শ্রম সুদুর প্রসারী গভীর চিন্তা চেতনায় বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। নিল অর্থনীতির পরিকল্পনা যোগ হলে। বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনীতি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরাশক্তি হবেই। বঙ্গবন্ধুর দেশে আপনার পাশে কোটি কোটি সাধারণ মানুষ। আপনার সুস্বাস্ব্য দীর্ঘ জীবন কামনায়। মা জননী আপনাকে শত সহস্র সালাম।
    Total Reply(0) Reply
  • Billak hosen ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ৮:৩৮ পিএম says : 0
    আল্লাহরউপরভরসারাখুন।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃশফিকুল ইসলাম ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ৪:৪৬ এএম says : 0
    মা আমরা সাধারণ মাঠে গাঠে খেটে খাওয়া মানুষ আমার ও আমাদের বসত বিটা নাই পরের জাগায় থাকি আমার ফেমেলিতে আমার তিন মেয়ে আমার বাবা মা নাই ওনারা কোনো সম্পদ রেখে যায় নি খুব কস্ট করে চলা ফেরা করতেছি দুই হাজার এক সালে যখন বিএনপি পাস করে ছিল তখন আমরা অনেক নির্যাতিত হয়েছি বাড়িতে থাকতে পরি নাই পালিয়ে রয়েছি সাত মাস টাকা পয়সা দিয়ে বাড়িতে আশা লাগজে আমাদের বকুল এমপি কেটার বাহিনী দিয়ে চালাত মনোহরদী বেলাব থানা তখন যা অর্থ ছিলো সব দিয়ে বাড়িতে আশা লাগজে আমাদের মা আমরা হলাম বঙ্গবন্ধুর আর্দশের আওয়ামিলীগ জীবন যাবে তবে দল ছারবনা মা আগেও আপনার কাছে হাজার হাজার এসেমেজ পাঠিয়েছি কোনো টার উত্তর পাই নাই মা আজ আপনার কাছে একটু চাওয়া আপনি যদি সামান্য কিছু অর্থ দিয়ে হেল্প করতেন তাহলে আমার তিনটা মেয়েকে সু সিখায় সিখিত করতে পারতাম আমার কোনো কস্ট থাকত না আপনি হলেন মমতা ময়ি মা মা একটু দয়া করোন
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃশফিকুল ইসলাম ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ৪:৫১ এএম says : 0
    সারাবিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গনে আপনি প্রভাবশালী বিশ্ব নেতা। দক্ষিণ এশিয়ার লৌহ মানবি। মানবতাবাদী মমতা ময়ী মা। বিশ্ব মানবতার মা। বঙ্গবন্ধুর হীরার রত্ন ভান্ডার। শতাব্দীর পর শতাব্দী অপেক্ষা করে কোন ভাগ্য বানজাতি এই রকম নেতা পেয়ে থাকেন। জাতীয় আন্তর্জাতিক পরি মন্ডলে বাঙ্গালী জাতি সম্মানিত আপনার দিন রাত পরি শ্রম সুদুর প্রসারী গভীর চিন্তা চেতনায় বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। নিল অর্থনীতির পরিকল্পনা যোগ হলে। বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনীতি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরাশক্তি হবেই। বঙ্গবন্ধুর দেশে আপনার পাশে কোটি কোটি সাধারণ মানুষ। আপনার সুস্বাস্ব্য দীর্ঘ জীবন কামনায়। মা জননী আপনাকে শত সহস্র সালাম।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ