পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টানা তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনায় দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আস্থা ও বিশ্বাস ছিল বলেই জনগণ আবার ক্ষমতায় এনেছে। এ জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত রাখার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, একটি সরকার সফলভাবে পরিচালনার জন্য দলকে সুসংগঠিত রাখা জরুরি। শক্তিশালী দলের সহায়তা পেলে সরকার সফল হয়। রাজনৈতিক দলই সরকারের জন্য বিরাট শক্তি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচিত দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এগারো বছর প‚র্ণ হলো একটানা ক্ষমতায় থাকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে বলেছিল- বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে কী হবে, বটমলেস বাস্কেট (তলাবিহীন ঝুড়ি) হবে। আজকে তারা সে কথা বলতে পারবে না। বরং আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি, সেটা শুধু আমাদের এখানেই না, বিশ্বব্যাপী খুবই সমাদৃত এবং স্বীকৃত।
ব্যাপকভাবে মুজিব বর্ষ উদযাপনে প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ১০ জানুয়ারি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস থেকে আমরা কাউন্টডাউন শুরু করে ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা মুজিব বর্ষ উদযাপন শুরু করব। বছরব্যাপী সারা দেশে অনুষ্ঠান করব।
বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কথা স্মরণ করেন। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই যৌথসভা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়। আওয়ামী লীগের নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভার মুলতবী সভা আজ শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দলের শক্তিটাই সব থেকে বেশি কাজে লাগে একটা দেশকে উন্নত করতে। যেটা আমি নিজে উপলদ্ধি করি এবং যে কারণে আমি সংগঠনের ওপর সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেই। আওয়ামী লীগ এবং এর সব সহযোগী সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে ২০২০ সাল বাংলাদেশের জন্য সব থেকে গুরুত্বপ‚র্ণ একটি বছর। কারণ এটা হচ্ছে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী। ১৯২০ সালে তার জন্ম, মনে হয় তার জন্মটাই হয়েছিল বাঙালিকে জাতি হিসেবে একটা আত্মপরিচয় এনে দেয়ার জন্য এবং একটি জাতি রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই, কেননা তাদের আস্থা ও বিশ্বাস না থাকলে আমরা এই সুযোগটা পেতাম না। জানি না কী হতো, ইতিহাস বিকৃত করে তার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) নামটাই তো মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। দেশের জনগণ আমাদেরকে ২০০৮ সালে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আমরা সরকারে আসতে পেরেছি বলেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি।
১৯৯৭ সালে স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী উদযাপনকালেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল আবার স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ পালন করবে এটা সৌভাগ্যের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২৩ বছরের সংগ্রাম এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে লাখো প্রাণের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা, সেটা ব্যর্থ হতে পারে না। সেটা প্রমাণ করাই আমাদের লক্ষ্য। সেটা যে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি, সেটা আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারব। কিন্তু সেটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।
দলের ক্রান্তিলগ্নে তৃণম‚ল আওয়ামী লীগের ভ‚মিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। নিজেদের জীবন বিপন্ন করেই তারা এই সংগঠনকে ধরে রেখেছে। বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অনেক অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তখন নানা ধরনের অপপ্রচার ছড়ানো হতো। দুর্ভাগ্যবশত, তখন ওইভাবে প্রতিবাদ করা যায়নি। তখন একটা মাত্র টেলিভিশন। সব সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা থেকে বিভিন্ন জায়গায় এই অপপ্রচারগুলো এমনভাবে প্রচার করা হতো যে, আমাদের জন্য তখন সেগুলো মোকাবেলা করা কঠিন ছিল। তারপরও আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী এই প্রতিক‚ল অবস্থার মধ্য দিয়ে ৭ মার্চের ভাষণ, বাংলাদেশের ইতিহাস ও জয় বাংলা স্লোগানকে মানুষের সামনে তুলে ধরে ইতিহাসের বিকৃতিকে ঠেকানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। কোনো জুলুম-নির্যাতনে-নিপীড়নে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা যায়নি। আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ একটা শক্তিশালী দল। এ দেশের রাজনীতিতে কেউ যদি কিছু শিখিয়ে থাকে সেটা আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে করে যাচ্ছে। এই ঐতিহ্য আমাদের ধরে রাখতে হবে।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্য একটাই ছিল যে এমনভাবে আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেয়া, যেন কোনোদিন এই সংগঠন ক্ষমতায় আসতে না পারে। অথবা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে না পারে।
আওয়ামী লীগের সঙ্কটকালে দলের সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার প্রেক্ষাপট স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালে যখন দলের দায়িত্ব নিই তখন এ চিন্তা মাথায় ছিল না যে, কোনো কিছু হতে হবে বা পেতে হবে। শুধু দেশের জন্য কাজ করে যেতে চেয়েছি। দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগের পুনরায় সরকার গঠন করতে পেরেছিল। এর মধ্যে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আমরা ’৯৬ সালে সরকার গঠন করি। বাংলাদেশের জনগণ প্রথম আশার আলো দেখতে পান, তারা প্রথম দেখতে পান যে, সরকার জনগণের সেবক। মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার জনগণের সেবা করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।