Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন আজ

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) এবার ২৫ বছরে পা রাখছে। দীর্ঘ ২৫ বছরেও স্থায়ী ঠিকানা হয়নি মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক এই মেলার। বরাবরের মতো এবারও অস্থায়ীভাবে আগারগাঁয়ে বসছে বিশে^র সর্ববৃহত্তর মেলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মেলার ২৫ তম আসরের উদ্বোধন করবেন। মেলার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাণিজ্য মেলার মাঠে অস্থায়ী সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রনালয় রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, ইপিবির ভাইচ চেয়ারম্যান ফাতিমা ইয়াসমিনসহ বাণিজ্য মন্ত্রনালয় ও ইপিবির উর্ধ্বতন কর্মকতারা।

এদিকে ১৯৯৫ সালে ১০ টাকায় শুরু হওয়া ডিআইটিএফের প্রবেশে টিকিটের দাম এবার ৪০ টাকা করা হয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরের চেয়ে এ বছর ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গত বছর মেলায় প্রবেশের জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের দাম ছিল ৩০ টাকা। এবার সেই টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা। এছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের দাম আগের মতোই ২০ টাকা রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগে এক কাপ চা খেতেন তিন টাকায়, এখন পাঁচ টাকা লাগে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া মেলায় এবার স্টলের সংখ্যা কমেছে। সব বিষয় মাথায় রেখে এবার টিকিটের নতুন এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে টিপু মুনশি বলেন, ঢাকার পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হলেও সেখানে এখন তা আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। ফলে শিগগির পূর্বাচলের স্থায়ী ঠিকানায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা করা সম্ভব নয়। এ জন্য আরও সময় লাগবে।

তিনি বলেন, প্রায় এক যুগ আগে ২০০৭ সালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে স্থান পরিবর্তন করে বাণিজ্য মেলার জন্য পূর্বাচলে ১০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ২৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে এখনো সে কার্যক্রম শেষ হয়নি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ নির্মাণকাজ শেষ হবে। তবে যে জায়গা আমরা পেয়েছি, এর বাইরে আরও জায়গা প্রয়োজন আছে। বিল্ডিংটা আমাদের হয়ে যাবে, কিন্তু গাড়ি পার্কিং, চলাচলসহ আনুষঙ্গিক জায়গা কম আছে।
‘আমরা পূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি, তারা এটি বিবেচনায় রেখেছে। আমার মনে হয় না এই মেলা (ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা) আগামী বছর আমরা ওখানে নিয়ে যেতে পারবো। এখনো অঞ্চলটা সেভাবে ডেভেলপ করেনি। যার কারণে এই ধরনের প্রচুর লোকসমাগমের যে বাণিজ্য মেলা সেটা ওখানে খুব শিগগির করা যাবে বা তার ভালো রেজাল্টা পাওয়া যাবে, এটা সম্ভব নয়।

টিপু মুনশি বলেন, ওখানে (পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী ঠিকানায়) একটা দিক করা যাবে, সেটা হলো সারাবছর ধরে বিভিন্ন গ্রুপের বিভিন্ন আইটেম ধরে মেলা করা যাবে। এই যে বসুন্ধরা সেন্টারে বিভিন্ন ধরনের মেলা হচ্ছে। আমি নিজেই গত এক বছরে ৮-১০টা মেলা উদ্বোধন করেছি। কখনো মেশিনারিজ, কখনো লাইট মেশিনারিজ, ইলেকট্রনিক্স, সিরামিক, ফার্নিচার- এই ধরনের মেলা আরও বড়সড় এবং সুন্দরভাবে আমরা ওখানে আয়োজন করতে পারবো। কিন্তু এই ধরনের মেলা (ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা) ওখানে করার মতো এখনো সময় হয়নি বলে আমার মনে হয়। আরও একটু সময় লাগবে। ২০১৯ সালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরুর আগের দিন তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ঘোষণা দেন, ২০২০ সাল থেকে ঢাকার পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হবে। যদিও ২০১৯ সালে করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু জমির জটিলতায় নির্মাণে কিছুটা দেরি হয়েছে। এখন সব সমস্যার সমাধান হয়েছে। দ্রæত স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গণ নির্মাণ করা হবে।
২০০৭ সালে পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর সড়কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্রাঙ্গণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। চীন সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে এ মেলা প্রাঙ্গণ করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০ একর জমির ওপর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (বিসিএফইসি) প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই বছরই প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এ মেলায় বাংলাদেশসহ ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৮৩টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল থাকবে। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য মেলা প্রাঙ্গণ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবারের মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন রাখা হয়েছে ৬৪টি। এছাড়া সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৩টি, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৫৯টি ও প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন ৪২টি। মেলা প্রাঙ্গণে রেস্তোরাঁ থাকবে দুটি, স্ন্যাকস বুথ সাতটি, প্রিমিয়ার স্টল ৮৪টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ছয়টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন আটটি, সাধারণ স্টল ১০৭টি এবং ফুড স্টল রাখা হয়েছে ৩৫টি। পাশাপাশি বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়াম স্টল ১৭টি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ