পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাবধান করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সবাই সাবধান থাকবেন। কারণ আপনারা যে যা করেন সব খবর সঙ্গে সঙ্গে আমার কাছে চলে আসে। বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের যেন কোনোরকম হয়রানি এখানে করা না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
গতকাল শনিবার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে নতুন যুক্ত হওয়া ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ সিরিজের নতুন দুই উড়োজাহাজ সোনার তরী ও অচিন পাখি উদ্বোধনের পর আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার আর কোনো কাজ নেই। দেশের দেখাশোনা করাই আমার কাজ। কে কি করলেন, সব দিকে আমার নজর আছে। যে বা যারা দুর্নীতি করবে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আমি দুর্নীতি বরদাশত করব না। এ দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গি, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত করার মধ্যদিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করব। মন্ত্রী-এমপিদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখানকার আইন-কানুন মেনে চলবেন। কেউ আইন-কানুন লঙ্ঘন করবেন না। যদি কেউ অনিয়ম করেন, তাহলে তার বিমানে চড়া বন্ধ হয়ে যাবে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়ম কানুন মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এটাকে কেউ অবহেলা করবেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানে যাত্রী সেবার পাশাপাশি লাভের বিষয়টাও দেখতে হবে। টিকিট নেই, বিমান খালি যায়, এ অবস্থা যেন না চলে। এছাড়া বিমানে যাত্রীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সেজন্য কর্তৃপক্ষকে কড়া নজরদারি করতে হবে। আমাদের দেশে যারা বিদেশে থাকেন তারা অত্যন্ত কষ্ট করে পয়সা উপার্জন করেন। তাদের পাঠানো টাকায় বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়। তারা যেন কোনোক্রমেই এ বিমানবন্দরে নেমে হয়রানির শিকার না হন এ বিষয়টা লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আমার জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছি। বাংলাদেশ যে উন্নত হতে পারে তা আমরা প্রমাণ করেছি। এই বিমানবন্দর একটা সাদামাটা বিমানবন্দর ছিল। ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে তার পরিবর্তন করেছি। আমরা অন্যান্য পদক্ষেপও নিয়েছিলাম। আমরা চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিমানবদরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করেছিলাম। বরিশাল, সৈয়দপুর ও রাজশাহী বিমানবন্দরকে উন্মুক্ত করেছি। আমরা তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, এখানে কার্গো বিমান নামার ব্যবস্থা থাকবে। কার্গো ভিলেজ গড়ে তোলা হবে। আমারা দুটি কার্গো বিমান ক্রয় করব। কারণ কার্গো বিমানে লাভ বেশি। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করাটা বিশাল একটা কর্মযজ্ঞ। এ টার্মিনাল নির্মাণ কাজ এবং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ সিরিজের নতুন দুটি উড়োজাহাজ সোনার তরী ও ‘অচিন পাখি ক্রয় আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরেকটি সূচক।
তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত এবং উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে চাই। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শুধু বিমান নয় অন্য সেক্টরেও আমরা উন্নয়ন করছি। যে কারণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনকালে আমরা বাংলাদেশকে ক্ষুধা- দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে উদযাপন করব। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত হবে। আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছি। আগামী প্রজন্ম যেন সুন্দর ও সুস্থভাবে একটা উন্নত দেশে জীবন-যাপন করতে পারে সেই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে সরকারি কোষাগার থেকে আসবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ আসবে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) থেকে। জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং কোরিয়ার স্যামসং একটি কনসোর্টিয়াম হিসেবে টার্মিনালের নির্মাণকাজ করবে। শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে দুটি টার্মিনালে (টার্মিনাল-১ ও টার্মিনাল-২) যেখানে ১০ লাখ বর্গফুটের মতো স্পেস রয়েছে, সেখানে নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালের স্পেস’ হবে ২২ দশমিক ৫ লাখ বর্গফুট।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শাহজালাল বিমানবন্দরের বর্তমান যাত্রী ধারণক্ষমতা ৮০ লাখ থেকে বেড়ে দুই কোটি হবে। কার্গোর ধারণক্ষমতা বর্তমান দুই লাখ টন থেকে বেড়ে পাঁচ লাখ টন হবে। ফলে একক নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরের মাধ্যমে নতুন টার্মিনালটির সব কর্মকান্ড পরিচালনা করা সম্ভব হবে। ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠকে প্রথমে ১৩ হাজার ৬১০ দশমিক ৪৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরবর্তী সময়ে একটি পৃথক আমদানি-রফতানি কার্গো হাউস স্থাপন ও নতুন ভিভিআইপি টার্মিনাল প্রকল্প কাজের কিছু অংশ বর্ধিত করায় মোট প্রকল্প ব্যয় বেড়ে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা হয়েছে। প্রকল্পের বাড়তি বরাদ্দের প্রস্তাব গত ১০ ডিসেম্বরের একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
চার বছরের মধ্যে এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন (প্রাইভেট) লিমিটেড সিঙ্গাপুরের রোহানি বাহারিনের নকশায় তিন তলাবিশিষ্ট তৃতীয় টার্মিনালের দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার স্পেস থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।