পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ সরকার ভারত সরকারের সর্বনাশা নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপুঞ্জির (এনআরসি) পক্ষে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবরাও নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিদেশী মুরুব্বীদের প্রতিভু হয়ে তাদের কুর্ণিশ করছে। মুরুব্বীদের প্রীতিধন্য হতে নিজ দেশের প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী দলের বিরুদ্ধে মিথ্যা কলঙ্ক রটনা করতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ভারতে নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপুঞ্জি (এনআরসি) দ্বারা মুসলিম খেদাও অভিযানের বিরুদ্ধে স্বয়ং ভারতের জনগণসহ বিশ্ববাসী যখন সোচ্চার তখন বিএনপি’র বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে আওয়ামী নেতারা গণবিরোধী আইনকেই বৈধতা দান করছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ওবায়দুল কাদেররা পার্শ্ববর্তী দেশের গুরুজনদের অন্যায় কাজে সমর্থন দিলো। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাসহ ভারতীয় পত্র-পত্রিকায় বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে দিল্লির সম্পর্ক শীতল এবং টানাপোড়েন চলছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। বিশ্বস্ত প্রতিবেশী দেশের সরকারের সাথে সম্ভবত: কোন কারনে শেখ হাসিনা সরকারের অ¤øমধুর বিরহ পর্ব চলছে। এতে অবৈধ সরকারের মাথা বিগড়ে গিয়েছে। ফলে মুরুব্বীদের তুষ্ট করে শীতল সম্পর্ক উষ্ণ করতে আবোল-তাবল প্রলাপ বকা শুরু করেছে এই সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা।
তিনি বলেন, নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপুঞ্জি (এনআরসি) জটিলতায় সংখ্যালঘু ভারতীয় মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন ঘোষণার জেরে গোটা ভারত যখন বিক্ষোভে উত্তাল তখন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ন্যাক্কারজনকভাবে সমর্থন দিচ্ছে। স¤প্রতি অমিত শাহ পার্লামেন্টে বক্তব্যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানরা বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের সময় এখনো নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করার পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদের প্রতিবেশী মুরুব্বীদের সামাল দিতে দায় এড়ানোর জন্য দোষ চাপাচ্ছেন বিএনপির ওপর। তিনি বলেছেন, “২০০১ সাল থেকে যে সংখ্যালঘু নির্যাতন এদেশে হয়েছে এটা কেবলমাত্র একাত্তরের বর্বরতার সাথে তুলনা হয়। তখন সংখ্যালঘুদের ওপর বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর যেভাবে অত্যাচার হয়েছে ওই অবস্থায় দেশ থেকে পালানোই ছিল স্বাভাবিক। অনেকেই জান-মালের নিরাপত্তার জন্য সেদিন পালিয়েছেন। বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে যে সংখ্যালঘুরা ভারতে চলে গেছেন, তারা দেশে ফিরতে চাইলে গ্রহণ করা হবে।”
ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যকে মিরজাফরের সাথে তুলনা করে রিজভী বলেন, মিরজাফররাই ভিতর থেকে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিদেশী শক্তিকে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে সহযোগিতা করেছিল। অমিত শাহ বিএনপিকে নিয়ে লোকসভায় যে মনগড়া, ভ্রান্ত এবং কাল্পনিক তথ্যের অবতারণা করেছিলেন সেটিকেই বৈধতা দিলেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। ওবায়দুল কাদের সুর মিলিয়েছেন অমিত শাহ’র সাথে। যেমন মিরজাফর, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভরা সুর মিলিয়েছিলেন লর্ড ক্লাইভদের সাথে।
অমিত শাহের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সেখানে ব্যাপকহারে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে। নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু হিন্দু স¤প্রদায় ভারতে পালিয়ে এসেছে’। এধরণের ধৃষ্টতাপূর্ণ কথা বাংলাদেশের জনগণ ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে হুমকি।
অথচ ওবায়দুল কাদের বিএনপি’কে কালিমালিপ্ত করতে অন্য দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে সাফাই গাইলেন। ওবায়দুল কাদের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের পক্ষে যৌক্তিকতা প্রমাণ করার জন্যই বিএনপিকে টেনে এনেছেন। এদেশের জনগণের সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির সুমহান ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করলেন ওবায়দুল কাদের। দেশের গণতন্ত্রকে শুষে নিয়ে ওবায়দুল কাদেররা প্রভূদের কৃপালাভের আশায় সেই কথারই প্রতিধ্বনী করেছেন। তিনি বলেন, ২০০১ সাল কেনো, বিএনপির কোন শাসন আমলেই দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। বিএনপির সরকারের সময় সংখ্যালঘুদের সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষিত হয়েছে। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি অটুট রাখতে সফল হয়েছে। আর ঠিক বিপরীত হলো আওয়ামী লীগ। সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ আমলে যত নিপীড়ন হয়েছে, তা আর কখনও হয়নি। আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবীদের লেখাতেই তার ভুরিভুরি প্রমাণ রয়েছে। হোয়াইট হাউজে ১৭ জুলাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা অভিযোগ করেন তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‹নিখোঁজ› হয়েছে। অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাত ২০১১ সালে এক গবেষণা করে দেখিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের লোক ‹হারিয়ে যাচ্ছে›। ঐ গবেষণা কাজের সাথে প্রিয়া সাহা জড়িত ছিলেন। এখনো প্রায় প্রতিদিনই সংবাদপত্রে সংখ্যালঘুদের বাড়ী-ঘর দখল, উচ্ছেদ বা মূর্তি ভাঙ্গার যত খবর প্রকাশিত হচ্ছে সব ঘটাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালীরা।
গদি রক্ষায় আওয়ামী লীগ দেশবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে অভিযো করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপুঞ্জি (এনআরসি) জটিলতায় সংখ্যালঘু ভারতীয় মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করে জোর করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার এনআরসি বিষয়টিকে বারবার ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু আখ্যায়িত করে এড়িয়ে যাচ্ছে। সরকার তাদের ব্যর্থ পররাষ্ট্রনীতির প্রমাণ হিসেবে যেভাবে নির্বিকার রয়েছে, তা স্পষ্টত:ই আমাদের জনগণ, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর চিকিৎসা সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির এই নেতা বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাঁর সুচিকিৎসা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহŸান জানালেও তাতে কর্নপাত করছে না ক্রোধপরায়ণ ও কলহপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী। বেগম জিয়ার ন্যায্য জামিনে বাধা দেয়া হচ্ছে। বেগম জিয়া কেমন আছেন? তাঁকে নিয়ে কি করা হচ্ছে? কিছুই জানতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা আশংকায় আছি দেশনেত্রীকে নিয়ে। তাঁর অসুস্থতা পূর্বের চেয়ে ভিন্ন ও গভীর। আমরা চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় আছি। আসলে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও নিয়মিত ঔষধ সেবনে কোন কারসাজি করা হচ্ছে কি না? আমরা আশংকা করছি দেশনেত্রীকে প্রাণনাশ করার ভয়ংকার কোন নীলনক্সা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না, কারণ তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ শামীম ও ডাঃ মামুনকে এখন আর দেখা করতে দেয়া হয় না। রিজভী অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ শামীম ও ডাঃ মামুনকে তাঁর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়ার আহবান জানান এবং নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করেন। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।