Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা এনআরসি

গণসংহতির গোলটেবিলে বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:১৯ এএম

এনআরসি বা সিএএ যে বিভাজনের নীতি থেকে উৎসারিত সেটা বিজিপিকে নগদ মুনাফা এনে দিলেও আখেরে তা ভারতের বহুত্ববাদী সমাজের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। আর দিনশেষে বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা তৈরি করবে। সেকারণেই এ প্রসঙ্গে কথা বলা আমাদের জন্য জরুরি। ‘ভারতে এনআরসি-সিএএ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব ও বাংলাদেশে করণীয়’ শীর্ষক গণসংহতির গোলটেবিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এতে সভাপতিত্ব করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভারত কখনো একজাতির দেশ নয়, বহুজাতির দেশ। এই সত্যটা ইচ্ছে করে চাপা দিয়ে সঙ্কট তৈরি করা হয়েছে। এই বহুত্ব স্বীকার না করে নিলে তা বহুজাতির কারাগারে পরিণত হবে। ভারতের লোকজন আজ এই কারাগারের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ করছেন।
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, এক আসামে ১৯ লাখ নাগরিকত্বহীন মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হলে তা আমাদের ওপর খারাপ প্রভাব সৃষ্টি করবে। ফলে বাংলাদেশে এ-নিয়ে মুখ খোলা দরকার। বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, সা¤প্রদায়িক-ফ্যাসিবাদী এই বিপদ মোকাবেলার জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষের সংহতি গড়ে উঠা দরকার।
বিশিষ্ট আলোকচিত্রী গবেষক শহীদুল আলম বলেন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে আমার সাহসী ভ‚মিকা নিয়ে অনেকে বলেন কিন্তু এটা এমন কিছু না। এ মুহ‚র্তে ভারতে যা হচ্ছে তার প্রতিবাদে এতটুকু দায়িত্ব সকলের পালন করা উচিত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস বলেন, সিএএ কিংবা এনআরসি যে বিভাজনের নীতি থেকে উৎসারিত তা ভারতের বহুত্ববাদী সমাজের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং দিনশেষে বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা তৈরি করবে। সেকারণেই এ-প্রসঙ্গে কথা-বলাটা আমাদের জন্য জরুরি।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশে এনআরসি বা নাগরিকত্ব সংশোধন বিল নিয়ে কথা বললে কেন সরকারি সংগঠনের হামলার শিকার হতে হয় সেটা বুঝলেই বাংলাদেশে এর প্রতিক্রিয়া কি হতে যাচ্ছে তা বোঝা যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, ভারতের অর্থনৈতিক সংকটকে পাশ কাটানোর জন্য এমন একটি উগ্র সা¤প্রদায়িকতাকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বিজেপি যতবেশি বিভেদের রাজনীতি সামনে আনে তত বেশি ভোট বাড়ে। বাংলাদেশের করণীয় প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি ৩টি বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে বলেন- প্রথমত বাংলাদেশ সরকারকে এ-নিয়ে একটা স্পষ্ট বক্তব্য প্রদান করতে হবে। দ্বিতীয়ত বিজেপি মুসলিম বিদ্বেষী বিভাজন সৃষ্টি করছে। তাদের ফাঁদে পা না-দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশে যেন কোন সা¤প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। সর্বশেষ ভারতের সংগ্রামী জনতার সাথে একটা ঐক্য ও সংহতি যত দ্রæততার সাথে তা হবে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য মঙ্গল।
গোলটেবিল আলোচনায় প্রারম্ভিক বক্তব্য উপস্থাপন করবেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ