Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়া পৌর এলাকায় অবৈধ ইটভাটা

ব্যবস্থা নিতে পারছে না পরিবেশ অধিদপ্তর

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

২০১৩ সাল থেকেই পৌর এলাকার মধ্যে আইনত ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ হলেও আইনী জটিলতায় জটিলতায় সেগুলো অপরারণ করতে পারছে না বগুড়া পরিবেশ অধিদপ্তর। চতুর ভাটা মালিকরা হাইকোর্টে মামলা দিয়ে ‘স্টে অর্ডার ’ হাসিল করে আটকে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরকে। তবে ইতোমধ্যেই রিট হাইকোর্টে খারিজ হওয়া ৭ টি ভাটা উচ্ছেদ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর বগুড়ার বিভাগীয় কার্যালয়।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বগুড়া পৌরসভার মধ্যে সুজাবাদে ইটভাটার আগুনের তাপে আশেপাশের জমির ফসল ও গাছপালা পুড়ছে, ভাটার চিমনী থেকে নিঃসরিত ধোঁয়ায় মারাত্মকভাবে বায়ু দূষণ হচ্ছে। এই এলাকার ভাটার মালিকরা দরিদ্র কৃষককে বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে কিনে নিচ্ছে ফসলী জমির ‘টপ সয়েল’। ফলে জমি হারিয়ে ফেলছে উর্বরা শক্তি। ভাটা এলাকার শিশুরা বায়ু দূষনের কারনে ফুসফুসের প্রদাহে ধুঁকছে। গাছ গাছালির আশ্রয় স্থল ছেড়ে পাখিরাও পালিয়ে গেছে। ফলে ভাটা এলাকার আশে পাশে আর শোনা যায়না পাখির কলতান বগুড়া পৌরসভার মধ্যে প্রায় সবগুলো ইটের ভাটাই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুজাবাদে স্থাপিত। ২০১৩ সালে পৌর এলাকার মধ্যে যে কোন ধরনের ইটের ভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। ১৪ সালে মানবিক কারণ দেখিয়ে ভাটা না ভাঙার জন্য হাইকোটে রিট করে এই এলাকার ভাটা মালিকরা। হাইকোর্টে প্রথমে তারা তিন মাসের স্থিতিবস্থা চায়। তিন মাস পার হওয়ার পর আবারো সময় প্রার্থনা করে। এ ভাবে বছরের পর বছর কোর্টে সময় প্রার্থনা করে ৫ বছর ধরে নির্বিঘেœ ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

তারা জানান , বগুড়া জেলার ৭৮ টি অবৈধ ইট ভাটা মানবিক কারণ দেখিয়ে হাই কোর্টে রিট করেছে । অবৈধ ইট ভাটা মালিকরা রিটে উল্লেখ করেছেন, বিপুল সংখ্যায় শ্রমিক ভাটা থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তাদেও সংসারের খরচ নির্বাহ করেন। অপরদিকে মালিকরা ভাটা নির্মাণ বাবদ যে বিশাল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছেন । তাই ভাটা উচ্ছেদ হলে তাদেরকেও পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে। আরো অনেক কারণ দেখিয়ে বছরের পর বছর মাহামান্য হাইকোর্টের কাছে সময় প্রার্থনা করে চলেছেন মালিকরা। ৩/৪ মাস পর পর সময় প্রার্থনা করেন তারা। এইভাবে আইনের বেড়াজালে আটকে রেখে তারা নির্বিঘেœ বায়ু দূষণ ও পরিবেশ বিঘ্ন ঘটিয়ে চলেছেন। অবস্থার প্রেক্ষিতে বগুড়া পরিবেশ অধিদপ্তর পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, এই শহরে বর্তমানে বাতাসে ধুলিকনার পরিমান বিপজ্জনক পর্যায়ে আছে।
বগুড়া পৌর এলাকার মধ্যে ৭টি ভাটা ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আশরাফুজ্জামান। তিনি আরো বলেন, ফসলী জমির টপ সয়েল নষ্ট করার জন্যও মামলা করা হয়েছে কয়েকটি। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে। কিন্তু মালিকরা কৌশলে আইনী বেড়া জালে তাদের চলমান অভিযান আটকে দিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ