পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবেদ চলে গেলো। কিন্তু তাকে বিদায় জানানো সম্ভব হবে না। সে আমাদের চিরসাথী হয়ে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। সমাজের কোনো পরত নেই যেখানে আবেদের কর্মকান্ডের বাতাস লাগেনি। বাংলাদেশে সমাজের যে বিপুল পরিবর্তন হয়েছে আবেদ তার প্রধান রূপকার। সমাজের যত ভাঙাচোরা অলিগলি, চোরাবালি, অলীক নিয়মনীতির ফাঁদ সর্বত্র ছড়িয়ে ছিল সবকিছুতে আবেদ তার সৃজনশীল প্রতিভার ছোঁয়া লাগিয়েছে। এই ছোঁয়া লাগিয়ে সবকিছু পাল্টে দিয়ে তাকে নতুন কাঠামোয় নিয়ে আসাই ছিল আবেদের ব্রত।
এটা বললে বোধ হয় বাড়িয়ে বলা হবে না যে, বাংলাদেশের সতেরো কোটি মানুষের মধ্যে খুব কম মানুষই আছেন যিনি জীবনে কোনো না কোনোভাবে আবেদের কর্মকান্ডের সুফল ভোগ করেননি। আর তিনি যদি হন বিশাল গ্রাম বাংলার দরিদ্রদের একজন, মহিলাদের একজন তাহলে তো তাকে জীবনের প্রতি পদক্ষেপে আবেদের সাক্ষাৎ পেতে হয়েছে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রোজগার, আত্মোপলব্ধি, আরো অনেক কিছুতে। আমাদের অজান্তে যে আবেদ আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী তাকে আমরা বিদায় জানাবো কীভাবে?
আবেদ বাংলাদেশের গরিব মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির অসাধারণ কারিগর। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আর্থিক দৈন্যের মুক্তিদাতা। সে নীরবে তার বিশাল কর্মকান্ড গড়ে তুলেছে। সে মানুষকে ডাক দিয়ে বসে থাকেনি, একাই এগিয়ে গেছে। সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে। সে একাই এগিয়ে গেছে- একেবারে পুরো কাজটা সমাধা করার জন্য।
আবেদ সারা বিশ্বে এনজিওর কনসেপ্ট বদলে দিয়েছে। একটি এনজিও দেশব্যাপী প্রায় সকল সমস্যার সামগ্রিক সমাধান দেবার জন্য এগিয়ে আসতে পারবে এরকম ধারণা ছিল একেবারে অকল্পনীয়। দেশে বিদেশে অসংখ্য রকম প্রতিষ্ঠান ও কর্মস‚চি নিয়ে একটি বিশালায়তনের এনজিওর ধারণা আবেদই দিয়ে গেলো। তার চাইতেও তার বড় অবদান একক এনজিও ও বহুমাত্রিক এনজিওর ব্যবস্থাপনাকে একটা নতুন বিজ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়ে যেতে পারা। এই অবদান তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে। ভারত, পাকিস্তান নেপাল, শ্রীলংকার অর্থনৈতিক গবেষকদের কাছ থেকে বরাবরই একটি প্রশ্ন আসে; বাংলাদেশে যে যাই করে সেটা দেশব্যাপী করে ফেলে- আমাদের দেশে এরকম হয় না কেন? আমার বরাবরের জবাব ছিল তোমাদের দেশে তো এখনো আবেদের জন্ম হয়নি।
আবেদ একটি আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশ তৈরি করে দিয়ে গেছে। তার দুরন্ত সাহস, আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতার কাহিনী আগামী সকল প্রজন্মকে অনবরতভাবে শক্তি যুগিয়ে যাবে। বহু প্রজন্ম পরেও আবেদ তাদের কাছে বাংলাদেশ হয়ে বেঁচে থাকবে।
তুমি যে বাংলাদেশ বানিয়ে দিয়ে গেছো তার বুনিয়াদের ওপর দ্রæত আমাদের কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নেয়া পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সহজ হলো।
আবেদ, তোমার কাছে জাতি চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।