পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সূর্যমুখীর মতো দেখতে লাল, হলুদ, সাদা, কমলা, গোলাপিসহ বেশ কয়েকটি রঙের জারবেরার চাষ হয় এখন ঢাকার সাভারে। সারা বছরই এই জারবেরা ফুল ফোটে। একটি গাছ থেকে বছরে ৫০ থেকে ৬০টি ফুল পাওয়া যায়। সাধারণত জারবেরা ফুল গাছ থেকে তোলার পরও ১০-১২ দিন সতেজ থাকে। ফলে এই ফুলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি জারবেরা চাষের জন্য উপযুক্ত। জারবেরা গাছের জন্য পলিথিনের শেড তৈরি করে নিতে পারলে ভাল হয়। এক সময় ভারতের টিস্যু কালচারের চারার ওপর নির্ভর করলেও বর্তমানে ভারতেই এর চারা উৎপাদন হচ্ছে। সাভারের চাষীরা ভারত থেকে চারা এনে এ ফুলের চাষ করছেন।
তবে সাভারের আশুলিয়ায় ফুলের আধুনিক টিস্যু কালচার ল্যাবে বিদেশি জারবেরা ফুলের চারা উৎপাদন শুরু করেছে বেসরকারি এনজিও সংস্থা পল্লী-কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি (পিএমকে)।
টিস্যু কালচার ল্যাব প্রধান ড. আতাহারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ফুলের সবচেয়ে বড় ক্লাস্টার যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে হলেও ঢাকা জেলার সাভারে ফুল চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানকার প্রায় ১৫শ’ কৃষক এই পেশার সাথে জড়িত। দিন দিন ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় ফুল চাষের জমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে জারবেরা দেশে চাষ করা হলেও এর প্রধান উপকরণ চারা দেশে উৎপাদিত না হওয়ায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে প্রতিটি চারা ৭০-৮০ টাকা দরে নানাভাবে সংগ্রহ করে চাষীরা। তবে তারা ল্যাবে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে রোগমুক্ত সুস্থ্য সবল জারবেরা ফুলের চারা উৎপাদন শুরু করেছেন। এতে করে সংগৃহীত চারার চেয়ে তুলনামূলক কম মূল্যে প্রতিটি চারা ৩৫-৪০ টাকা দরে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা সম্ভব।
সাভারের বিরুলিয়া, আকরান, আইঠর ও ভাকুর্তার মোগড়াকান্দা গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে বিদেশি ফুল জারবেরার চাষ শুরু হয়েছে। অন্য ফুলের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় অনেকেই এখন জারবেরা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রঙ-বেরঙের বিদেশি জারবেরা ফুল ফুটে রয়েছে।
বিরুলিয়ায় মনিরুজ্জামান পলাশ নামে স্থানীয় এক চাষী বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন জারবেরা। তার দেখাদেখি অনেকেই এখন ঝুঁকছেন উচ্চমূল্যের এই ফুল চাষে। তিনি বলেন, ঢাকায় এ ফুলের পাইকারি বাজার রয়েছে। পাইকারি দরে প্রতিটি ফুল বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ টাকা। ফুলের দোকানে খুচড়া বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ টাকায়। তবে বিশেষ দিনগুলোতে চাহিদা বেশি থাকায় তখন দামও বেড়ে যায়।
নাসির হোসেন জানান, ভারত থেকে আনা টিস্যু কালচারের জারবেরা ফুলের চারা প্রতি খরচ ৮০ টাকা। আর রোপণ ব্যয় আরও ২০ টাকা। তবে জারবেরা ফুল চাষ করে তিনি লাভবান। কখনও লোকসান গুনতে হয়নি তার।
আকরাইনের আইঠর গ্রামের যৌথ বাগান মালিক আশরাফ মিয়া, ফারুক হোসেন ও কামাল হোসেন জানান, এক বিঘা জমিতে সারা বছর বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ করলেও ৫০ হাজার টাকার বেশি পাওয়া যায় না। এ থেকে উৎপাদন খরচ বাদে কৃষকের লাভ খুবই কম থাকে। কিন্তু জারবেরা চাষে সমপরিমাণ জমি থেকে খরচ বাদে পাওয়া যায় প্রায় ৬ লাখ টাকা।
বাগান কর্মচারী ছানোয়ার হোসেন, আলিফ মাহমুদ জানায়, ফুল ফোটার পর গাছেই একটি ফুল কমপক্ষে ২৫/৩০ দিন সতেজ থাকে। আর তা দীর্ঘায়িত লম্বা স্টিক বা ডাটার কিছু অংশ পানিতে ডুবিয়ে রাখলে আরও ১৫/২০ দিন সতেজ থাকে। লাল, হলুদ, সাদা, কমলা, গোলাপীসহ ১০/১২টি রংয়ের ফুল হয়। তবে দুটি পদ্ধতিতে ইচ্ছেমতো ফুলের কালারও তৈরি করা যায়।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ বলেন, সাভার উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে জারবেরা চাষ হচ্ছে। জারবেরা একটি বিদেশি ফুল, কাজেই এই জারবেরার উৎপাদন কলাকৌশল এবং পোকা দমন সম্পর্কে ফুল চাষীদের উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া জারবেরা চাষাবাদ সম্পর্কে অনেক চাষীরাই অজ্ঞ, অনেকের ধারণা কম। কাজেই এই ধারণা বৃদ্ধি করতে কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর সারাক্ষণই কৃষকের পাশে আছি এবং মনিটরিং করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।