Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আ.লীগই পেরেছে দেশের মানুষকে কিছু দিতে

সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকেই এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করতেই আওয়ামী লীগের জন্ম। আওয়ামী লীগই দেশের মানুষকে কিছু দিতে পেরেছে। যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তখন এদেশের মানুষ কিছু পেয়েছে। গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন কষ্ট স্বীকার করেছেন এদেশের মানুষের জন্য। আজীবন তিনি সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন। কখনও তিনি দেশের মানুষের কল্যাণের পথ ছেড়ে যাননি। দেশের মানুষের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে তিনি প্রস্তুত ছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল এদেশের মানুষকে মুক্ত করার, তিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছিলেন, এটিই হলো বড় কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের গত এক দশকের শাসন আমলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতা বলেছিলেন, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না এলে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায়। জাতির পিতা সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য নিয়ে সংগ্রাম করেছেন। তিনি বারবার স্বাধীনতার কথা বলেছেন। বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন সত্তা নিয়ে গড়ে উঠবে, সে কথা তিনি বারবার বলেছেন। বাংলাদেশের নাম, জাতীয় পতাকার ডিজাইন ও জাতীয় সংগীত তিনিই ঠিক করেছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বলেছেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে হলে আমাদের ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে হবে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর প্রতি আহŸান করব, এগুলো মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেয়েছে ত্যাগের কারণে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওপর আঘাত এসেছে বারবার। জাতির পিতাকেও কতবার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলানোর ষড়যন্ত্র হয়েছে। তবে সফল হয়নি। আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণভাবে শেষ করে দেয়ার অনেক চেষ্টা অনেকবার হয়েছে। ইয়াহিয়া, আইয়ুব থেকে শুরু করে জিয়া, এরশাদ, খালেদা সবাই প্রথম আঘাত করেছে আওয়ামী লীগকে। জাতির পিতার হাতে গড়া আদর্শভিত্তিক সংগঠন বলে কেউ একে ধ্বংস করতে পারেনি।

স্কুলজীবন থেকেই নিজে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতি আমার জন্য নতুন কিছু ছিল না। স্কুল থেকে রাজনীতি করতাম। দেয়াল টপকে যেতাম মিছিলে, আন্দোলনে যোগ দিতাম। কলেজ জীবনে রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম। কলেজে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় আন্দোলন করেছি। কিন্তু কখনও ভাবিনি এত বড় সংগঠনের গুরুদায়িত্ব আমাকে নিতে হবে, নিতে পারব।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়েছে। চাকরি দেয়া হয়েছে। দল করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপরও আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছি। আমাদের লক্ষ্য, দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, আমি জেলোয় জেলায় গিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করেছি। এখন আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সংগঠন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের অগ্রগতির সেই পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। ২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি। আমাদের ওপর আবারও আঘাত আসে। কিন্তু আমরা আবারও জনগণের সেবক হিসেবে ক্ষমতায় আসি। তিনি বলেন, জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে জাতিকে বিচ্যুত করে চেয়েছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তাদের সময়ে দেশ ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা হয়েছে। দুইজন সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তৃণমূল পর্যন্ত উন্নয়ন পৌঁছে দিতে পেরেছি। যাদের ঘর বাড়ি নেই, তাদের ঘর তৈরি করে দিয়েছি। খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা এখন পুষ্টি ও চিকিৎসা গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। আমরা ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-’১ উৎক্ষেপণ করেছি।

স্থলসীমান্ত চুক্তি বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ছিটিমহল বিনিময় করি। পার্বত্য শান্তি চুক্তি করি। দেশকে উন্নত করতে চাইলে শান্তি দরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি বিএনপি-জামায়াত জোট স্বাধীনতাবিরোধী, আল শামস, আলবদর, রাজাকাদের নিয়ে এই দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। প্রায় ৫০০ মানুষ তাদের অগ্নিসন্ত্রাসে মারা গেছে। অনেকেই আহত হয়েছে।
২০১৫ সালে বিএনপি নিজেরা নির্বাচনে যায়নি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন দেখুন। ওই নির্বাচনে তারা ২৯ সিটি পেয়েছিল। এ জন্য পরে একটি নির্বাচন বয়কট করে আরেকটি নির্বাচনে মনোনয়নবাণিজ্য করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতির পিতার নীতিমালা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি বলেই আমাদের ৮-এর ওপরে জিডিপি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভাষা, স্বাধীনতা, সোনার বাংলা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সোনার বাংলা গড়াই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।
সারাদেশ থেকে আসা দলের কাউন্সিলরদের বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের ওপর অবিচল থেকে রাজনীতি করার তাগিদ দেন দলীয় সভাপতি। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে নির্দেশ দেন তিনি।
এর আগে, বিকাল তিনটায় সম্মেলনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।



 

Show all comments
  • Ahmed Jahangir Hussain ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৯ এএম says : 0
    দিয়েছে ঠিক, যাহা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন
    Total Reply(0) Reply
  • Abdula Azizi ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৯ এএম says : 0
    আমাকে পেরেছে পেপার পড়া থেকে বিরত রাখতে টিভি দেখা থেকে বিরত রাখতে । ওগুলোর মধ্যে সত্য খুজে পাইনা
    Total Reply(0) Reply
  • Aman Ullah ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪০ এএম says : 1
    কি করেনাই আওয়ামী- লীগ মানুষের সব দূঃখ কষ্ট বুঝে
    Total Reply(0) Reply
  • Hm Sanaullah ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪১ এএম says : 0
    অবশ্যই আওয়ামীলীগ অনেক কিছু দিয়েছে।যা বিশ্বের জন্য রোল মডেল।আর এই মডেল অন্যান্য দেশেও আস্তে আস্তে পালন শুরু হচ্ছে ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mozamel Khan ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪২ এএম says : 0
    কথাটা আপনি ঠিক বলেছেন বাংলাদেশকে আপনি এমন দেওয়া দিছেন বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে কখনো ভুলবে না
    Total Reply(0) Reply
  • Syed Enayet Hossain ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৩ এএম says : 0
    আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দেশের মানুষ ক্ষমতার মালিক হতে পেরেছে। দেশের মানুষ স্বাধীনতার মুল উদ্দেশ্য মৌলিক অধিকার নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • শরীফুল ইসলাম ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:৩৩ এএম says : 0
    এবার ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • বাবুল ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম says : 0
    সকল নেতাকর্মীকে বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের ওপর অবিচল থেকে রাজনীতি করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ