Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাপক হারে অভিযোগ পেলে প্রত্যাহার

রাজাকারের তালিকা : বিতর্কের ব্যাখ্যা মন্ত্রণালয়ের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় ভুলভাবে কারও নাম এসে থাকলে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো রাজাকার, আল-বদর, আল- শামস, শান্তিকমিটি ও স্বাধীনতাবিরোধী তালিকা বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় এ তথ্য জানানো হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, শান্তি কমিটি ও স্বাধীনতাবিরোধী ১০৭৮৯ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে নতুন কোনো তালিকা প্রণয়ন করা হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে তালিকা যেভাবে পাওয়া গেছে, সেভাবেই প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগ পাওয়া গেছে এ তালিকায় বেশ কিছু নাম এসেছে, যারা রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, শান্তি কমিটি বা স্বাধীনতাবিরোধী নন, বরং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বা মুক্তিযোদ্ধা। এ ধরনের কোনো ব্যক্তির নাম তালিকায় কিভাবে এসেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রকাশিত তালিকায় ভুলভাবে যদি কারো নাম এসে থাকে, আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই-অন্তে তার/তাঁদের নাম এ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। এই অনিচ্ছকৃত ভুলের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
স¤প্রতি প্রকাশিত রাজাকারের এই তালিকায় অনেক জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষের নামও এসেছে, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার তৈরি হয়। এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এই ব্যাখ্যা দিলেন।
এ দিকে গতকাল রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম আসায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, রাজাকারের এই তালিকা আগে থেকেই করা ছিল। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী নাম প্রকাশ করেছি। এই তালিকা নিয়ে যদি ব্যাপক হারে অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা তা প্রত্যাহার করে নেবো।
মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করায় ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনী হত্যা করেছিল বরিশালের আইনজীবী সুধীর কুমার চক্রবর্তীকে। তার ছেলে আইনজীবী তপন কুমার চক্রবর্তী একজন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রথম ধাপে রাজাকারের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে তপন কুমারের নাম এসেছে। একইসঙ্গে আছে তার মা প্রয়াত ঊষা চক্রবর্তীর নামও। এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, রাজাকারের এই তালিকা আগেই করা ছিল। তালিকাটি কোনও ধরনের এডিট ছাড়াই প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এখন তথ্য সংগ্রহ করছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তা যাচাই-বাছাই করবো। তাছাড়া এই তালিকায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে কারও নাম রাখা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার নাম এই তালিকায় আসলে আমি যেমন কষ্ট পেতাম, তেমনি যাদের নাম এসেছে, তারাও কষ্ট পেয়েছেন। আমি এ কারণে আমি ব্যথিত।
মন্ত্রী বলেন, যেসব মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেছেন, যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন, তাদের অনেকেই জীবিত থাকা অবস্থায় এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাই তাদের নাম যদি এই তালিকায় থেকে থাকে, তারা প্রতিবাদ করতে পারবেন। একটা সংশোধনের সুযোগ থাকবে। কিন্তু ৩০ বছর পরে করলে এই সুযোগটা আর থাকতো না। এ বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, কাউকে অন্যায়ভাবে দোষের জায়গায় নেওয়া কারও কাছেই শোভনীয় নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ