পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলার মাটিতে মীর জাফর-মোশতাকের মতো বেঈমানদের জন্ম হয়েছে বারবার। জিয়াউর রহমানের মতো খুনিরাও বারবার এসেছে। এদের মতো ভবিষ্যতে মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেনো ছিনিমিনি খেলতে না পারে; সে দায়িত্ব জনগণকে নিতে হবে, তরুণ প্রজন্মকে নিতে হবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘তোমাদের যা বলার ছিল, বলছে তা আজ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমানের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল থেকে শুরু করে স্বাধীনতার বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী বানানো হয়েছে। খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। জাতীয় পার্টির এইচ এম এরশাদও সেই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। এরশাদ ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল (অব.) ফারুক রহমানকে করেছে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। খুনিরা বানিয়েছে ফ্রিডম পার্টি। অর্থাৎ খুন করার ফ্রিডম, সেই ফ্রিডম দিয়েছিল এইচ এম এরশাদ। আর খালেদা জিয়া এসে তো আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। স্বামী (জিয়া) যা করেছেন তার থেকে আরও বেশি করলেন তিনি (খালেদা জিয়া)।
জিয়াউর রহমানের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার হত্যাকারী আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠিয়েছিল খুনি জিয়াউর রহমান। পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতাবিরোধী গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং শাহ আজিজদের প্রধানমন্ত্রী বানানো হলো। যে (শাহ আজিজ) বাংলাদেশের স্বাধীনতাই চায়নি, সে হলো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেই রাজাকার বাহিনী, আলবদর বাহিনী, যারা এই বুদ্ধিজীবীদের ঘরে গিয়ে ধরে নিয়ে এসে হত্যা করেছে তাদের বানালো মন্ত্রী। তারা মন্ত্রী হয়ে দেশকে ধ্বংস করেছে। তাদের হাত দিয়েই খালেদা জিয়ার ব্যবসা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা। তার ছেলেই (তারেক রহমান) সাজাপ্রাপ্ত। আর নিজে (খালেদা জিয়া) তো এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেই আছে। একটা দেশের মানুষের জন্য দরদ নেই এবং এই দেশটা যে এতো লাখো শহীদের রক্তের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে; এই বিষয়ে তাদের কোনরকম কোন সহানুভ‚তি ছিল না। তাদের ওই পাকিস্তানের প্রতি যে বহুল আনুগত্য, সেই আনুগত্যই তারা দেখিয়ে গেছে। তাদেরই তোষামোদী, চাটুকারিতা করে গেছে এবং এখনও তারা করে যাচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর এদেশের মানুষ কষ্ট ভোগ করেছে। এরপর আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত তাদের কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সেগুলোর সৃষ্টি করেছে। পরবর্তীতে আমরা যখন সরকারে এলাম, তারপর শুরু হল অগ্নিসন্ত্রাসের তান্ডব। যার মধ্যে এতটুকু মনুষ্যত্ব থাকে সে কি পারে জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করতে? এটাই নাকি খালেদা জিয়ার আন্দোলন ছিল! অর্থাৎ খুন, হত্যা ছাড়া এরা আর কিছুই জানে না। মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে তাদের পেটোয়া বাহিনী বানিয়েছে। শুরু করল জিয়া, তার পদাঙ্ক অনুসরণ করলো খালেদা জিয়া। খুনি মোশতাক-জিয়ার মতো বেঈমানের জন্ম বাংলার মাটিতে বারবার হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই দেশটাকে সম্প‚র্ণ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া, এটাই ছিল তাদের লক্ষ্য। কিন্তু আল্লাহর রহমতে, এখন বাংলাদেশ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। জাতির পিতা তার সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করে এই বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই এই রক্ত কখনও বৃথা যায় না, বৃথা যেতে পারে না। আজ আমরা যে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সেভাবেই এগিয়ে নিতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমাদের প্রতিটি কাজ আপনারা লক্ষ্য করবেন, আমাদের তৃণমূল মানুষের ভাগ্য আমরা কিভাবে পরিবর্তন করব; সেভাবেই সাজানো আমাদের পরিকল্পনা। তিনি আরো বলেন, এদেশকে যেন আর কোনো দিন কারও কাছে হাত পাততে না হয়। মানুষকে খাদ্যের জন্য কষ্ট না পেতে হয়, জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান দিয়ে গেছেন সে সংবিধানে যে মৌলিক অধিকারগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো সমুন্নত থাকে; আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনসহ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে প্রজন্মের পর প্রজন্ম কিভাবে উন্নত জীবনযাপন করবে, তার পরিকল্পনাও করে দেয়া হয়েছে। আশা করছি সেটা ধরেই দেশ এগিয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা পরিচালনা করে দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আবদুল মতিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, আবু আহম্মেদ মান্নাফী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।